মরণ আমার ভালো লাগে
উস্তাদ রশীদ খাঁ (১৯৬৬ - ) হচ্ছেন হিন্দুস্তানি উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত জগতের সমসাময়িক কালের শ্রেষ্ঠ উচ্চাঙ্গ কণ্ঠ শিল্পী (ক্ল্যাসিক্যাল ভোকাল)। পণ্ডিত ভীমসেন যোশীর মতে, উস্তাদ রশীদ খাঁ'ই হিন্দুস্তানি উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ। কিংবদন্তীর সঙ্গীতজ্ঞ, খাঁ সাহিব উস্তাদ ইনায়েত হুসেন খাঁ তাঁর প্রপিতামহ, উস্তাদ গুলাম মুস্তাফা খাঁ হচ্ছেন তাঁর কাকা এবং অন্যতম শেষ ঘরানাদার, খাঁ সাহিব উস্তাদ নিসার হুসেন খাঁ হলেন তাঁর নানা। রামপুর-সহসওয়ান ঘরানার প্রতিভূ, উস্তাদ রশীদ খাঁ ইতোমধ্যেই 'পদ্মশ্রী' খেতাব ও 'সঙ্গীত নাটক আকাদেমি' পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।
ভারতের উত্তর প্রদেশের বাদাঁয়ু শহরে (উর্দু কবি শাকিল বাদায়ুনি'র নামে এই শহরের নামকরন হয়েছে) রামপুর-সহসওয়ান ঘরানা পরিবারে উস্তাদ রশীদ খাঁ'র জন্ম।
রামপুর-সহসওয়ান ঘরানা, অদ্যাবধি, কঠোর তালিমের জন্য বিখ্যাত। হয়ত সে কারনেই বাল্যকাল থেকে রশীদ খাঁ কিছুটা সঙ্গীত বিমুখ ছিলেন। তার মাঝেও রশীদ খাঁ'র সহজাত সঙ্গীত প্রতিভা আবিস্কার করে ফেলেন তাঁর কাকা, উস্তাদ গুলাম মুস্তাফা খাঁ। এর পরপরই রশীদ খাঁ'র তালিমের ভার নেন তাঁর নানা, খাঁ সাহিব উস্তাদ নিসার হুসেন খাঁ। খাঁ সাহিব ছিলেন সেকালের শ্রেষ্ঠ সঙ্গীত শিক্ষক এবং তালিমের বিষয়ে অত্যন্ত নিয়মতান্ত্রিক ও কঠোর।
ভোর ৪ টা থেকে রশীদ খাঁ'র সুর সাধনা শুরু হত, স্কেলের একটি নোট আয়ত্ত করতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অনুশীলন তো চলতই, এমনকি মাত্র একটি নোটের পিছেও সারাদিন অতিবাহিত হয়ে যেত। শিশুসুলভ চাঞ্চল্যে ক্ষণিক অমনোযোগী হয়ে পড়লে, প্রহারও জুটে যেত। অতি শাসনে অধৈর্য হয়ে রশীদ খাঁ একবার গৃহত্যাগও করেন, তবে মায়ার টানে অচিরে আবার ফিরেও আসেন। তার কিছুকাল পর থেকেই সঙ্গীতের প্রতি তাঁর আগ্রহ জন্মায়। ১৯৮০ সালে খাঁ সাহিব নিসার হুসেন খাঁ'র হাত ধরে কোলকাতার আই টি সি সঙ্গীত রিসার্চ আকাদেমিতে যোগ দেন রশীদ খাঁ - তখন তাঁর বয়স মাত্র ১৪।
১৮ বছর বয়স থেকেই সঙ্গীতকে রীতিমত উপভোগ করতে শুরু করেন তিনি। বাল্যের কঠোর সাধনা এসময় ফলদায়ক হয় এবং ১৯৯৪ সালে, মাত্র ২৮ বছর বয়সেই তিনি 'উস্তাদ' হিসাবে স্বীকৃত হন।
রামপুর-সহসওয়ান ঘরানার গায়কী, অন্যান্য সকল ঘরানার থেকে অনেকটাই স্বতন্ত্র। এর বিশেষত্ব হল মধ্য থেকে বিলম্বিত লয়, তালে, উচ্চ কণ্ঠে সুরেলা পরিবেশন। এই ঘরানার শিল্পীরা চিরকালই খেয়াল ও তারানায় সেরা ছিলেন।
খাঁ সাহিব ইনায়েত হুসেন খাঁ ও খাঁ সাহিব নিসার হুসেন খাঁ উভয়েই ছিলেন সেরা তারানা শিল্পী। সেই প্রভাবে ও যথাযথ অনুশীলনের মাধ্যমে রশীদ খাঁ'ও তারানা'য় শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছেন। তারানার ক্ষেত্রে রশীদ খাঁ যে মৌলিক পরিবর্তনটি এনেছেন, তা হল, দ্রুত লয়ে পরিবেশনের পরিবর্তে, নিজস্ব রীতিতে খেয়াল-অঙ্গে তারানা পরিবেশন। তবে রশীদ খাঁ'র প্রকৃত প্রতিভা প্রকাশিত হয় বিলম্বিত খেয়ালে। তীব্র আবেগের সুরেলা প্রকাশ, রাগ, গমক, বোল, তান, সরগমে সচ্ছন্দ বিচরন ও স্বর্গীয় তানকারী এসবই মিলেমিশে উস্তাদ রশীদ খাঁ'কে এনে দিয়েছে শ্রেষ্ঠত্ব, প্রবল জনপ্রিয়তা ও প্রায় অমরত্ব।
উস্তাদ রশীদ খাঁ - ক্ল্যাসিক্যাল ভোকাল - আলবেলা সাজন আয়ো রে
১। আলবেলা সাজন আয়ো রে (রাগ আহির ভৈরব) ১১:৩১
২। করম কর্ দিজে খাজা মুইনুদ্দিন, এবং, তারানা (রাগ দেশ) ১৩:৫৯
৩। পীর নিজামুদ্দিন, এবং, ন্যাইনা মে (রাগ মুলতানি) ১৪:১৫
৪। আলী রে (রাগ চন্দ্রধ্বনি) ৯:০০
৫।
আজ রাধা ব্রজ কো চালি (রাগ ভৈরবী) ৭:৪৪
আমার আবুল হোসেন ভাইয়ের উদ্দেশ্যে নিবেদিত।
কোয়ালিটি - ১৭৫ কেবিপিএস ভিবিআর এমপি৩
ফাইল সাইজ - ৬৩ মেগাবাইটস
ডাউনলোড - উস্তাদ রশীদ খাঁ - আলবেলা সাজন আয়ো রে
পাসওয়ার্ড - samu ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।