আমার দেশের ফুলের সৌন্দর্য আমাকে মুগ্ধ করে, সে ফুলের গন্ধে আমি বিমোহিত। আরো কাছ থেকে দেখতে চাই এদেশের গাছ, ফুল, প্রকৃতিকে। আমাদের বাংলা সাহিত্যে পারুল ফুলের কথা এসেছে অনেক জায়গায়। কিন্তু দেখার সৌভাগ্য হয়নি পারুল ফুল! পারুল ফুলের খোঁজে আছেন দেশের অনেক উদ্ভিদবিঙ্গানী, নিসর্গী । দেখা মিলছেনা সত্যিকারের পারুলের! কিন্তু তাহলে যে অনেক জায়গায়ই নীল রংয়ের পারুল ফুল দেখি সে আবার কোন পারুল? এরকম অনেক প্রশ্নই পারুল ফুলের পরিচয়কে আরো স্পষ্ট করে জানার আগ্রহ তৈরি করে দিয়েছে।
পারুল ফুলের অন্য বাংলা নামগুলোর মধ্যে আছে বাতসিল ও কামসোনালু। পারুলের বৈঙ্গানিক নাম Stereospermum suaveolens (Roxb.) DC., ইংরেজিতে Trumpet নামে পরিচিত। Bignoniaceae ফ্যামিলির উদ্ভিদ। গাছ ৩০ থেকে ৬০ ফুট পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। গাছ লোমযুক্ত, ছাল ধুসরবর্ণ, কাঠ পীতাভ ধুসরবর্ণ, পাতা ১২ থেকে ১৮ ইন্চি লম্বা, পক্ষাকার।
ফুল তাম্রবর্ণ বা রক্তবর্ণের, পুষ্পস্তবক ফিকে বা ঘন বেগুনি রংয়ের। ফুলের পাপড়ি ৫ টি, পুষ্পাধার ঘন্টার মত। সাধারনত গ্রীষ্মকালে ফুল হয়। আগেরদিনে পানিতে পারুল ফুল ফেলে পানিকে সুগন্ধি করা হত বলে এ ফুল অম্বুবাসী নামেও পরিচিত। পারুল জন্মে ভারত, শ্রীলংকায়।
বাংলাদেশে মধুপুর ও পার্বত্য চট্টগ্রামের জংগলে পাওয়া যায় বলে জানা যায়।
পারুল ফুলের দেখা এখনো পাইনি কোথাও!
পারুল ফুল (?)
পারুল ফুলের গাছ
আসল পারুলের সাথে যে ফুলটি নিয়ে সবচেয়ে বেশি গন্ডগোল বাধে তা হল ধারমারা। ধারমারার বৈঙ্গানিক নাম Stereospermum colais (Buch.-Hum. ex. Dillw.) Mabberley. বাংলায় এর অন্য নামগুলো হল কামরাং, পাহাড়ি আওয়াল, আটকপালি। পাওয়া যায় ঢাকা, ময়মনসিংহ, সিলেট, চট্টগ্রাম, কক্সবাজারের জংগলগুলোতে।
ধারমারা ফুল
আরেকটি ফুল আছে যা আমাদের দেশে নীল পারুল নামে পরিচিত।
অনেক জায়গায় এটিকেই আসল পারুল হিসেবে উল্লেখ করা হয়। কিন্তু এটা ভুল। নীল পারুলও একই ফ্যামিলির। এর বৈঙ্গানিক নাম Saritaea magnifica (Sprague ex. Steenis) Dugand। এর নাম বিগনোনিয়া লতা।
ইংরেজিতে বলে Glow vine , Purple bignonia। এটা একধরনের আরোহী গাছ। বিশেষত বাগানে পাওয়া যায়। সারাদেশেই জন্মে।
আরেকটি ফুল আছে যেটি রসুন লতা ফুল নামে পরিচিত।
বৈঙ্গানিক নাম Mansoa alliacea । এর ইংরেজি নাম Garlic Vine . একে পারুল লতা নামেও ডাকা হয়। আমাদের দেশে বাগানে চাষ করা হয় পারুল লতার গাছ।
পারুল লতা ফুল
যাই হোক এখনো দেখা নেই আসল পারুলের! ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।