uব্লগিং করলে নাকি জাতে উঠা যায় !জাতে ওঠার তীব্র আকুলতায়
দেশের প্রতি অকৃতিম শ্রদ্ধা আর গভীর ভালবাসা দেখিয়ে টানা তিন মাস বাড়ীর দলিল পত্র নিয়ে ব্রিটিশ এম্বাসিতে লাইনে দাড়িয়ে ভিসা পাওয়া আমার এক বন্ধু চার বছর পর সম্প্রতি দেশে এসেছে। সে ভেবেছিল এই চার বছরে দেশ টা প্রায় আমেরিকার সমপর্যায়ে চলে গেছে । দেশের প্রতি বিস্তর ভালবাসার বহিপ্রকাশ মাঝে মাঝে আমাকে কষ্ট করে সহ্য করতে হয় । একদিন তাকে প্রশ্ন করলাম "বন্ধু এখন যদি মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয় তুই কি হবি ? মুক্তিযোদ্ধা না রাজাকার ? তার উত্তর শুনে অবাক হলাম না কষ্ট পেলাম । বলল খেয়ে দেয়ে আর কাজ নাই যুদ্ধ শুরু হলে আবার লন্ডনে চলে যাব।
কোন উত্তর দেই নি। রুচিতে সায় দিচ্ছিল না । শুধু মনে মানে ভাবলাম
"তাহাদের (মু্ক্তিযোদ্ধাদের) খেয়ে দেয়ে কাজ ছিল না বলেই তো তোমাদের এখন খেয়ে দেয়ে কাজ আছে .."
কেউ কেউ উট পাখির মত বাচতে নিষেধ করে কেউ আংশিক নয় পুরোটাই সত্যি জানায় । আমরা আম জনতা পুরোটা সত্যি জেনে বালির নীচে মাথা গুজে বলি শুকুর আলহামদুলিল্লাহ । দেশপ্রেম টা আমাদের কাছে শীতের সকালে আগুন পোহানোর মত ।
যত সময় পাশে থাকে তত সময় ভাল লাগে গায়ে লাগলেই অস্থির । বঙ্গবন্ধু দেশে ফিরে প্রথম জনসভায় রবী ঠাকুরের একটি উক্তি করেছিলেন "৭ কোটি মানুষের হে মুগ্ধ জননী রেখেছ বাঙ্গালী করে মানুষ করনি। "রবীন্দ্রনাথ কিংবা বঙ্গবন্ধু কেউই ভুল বলেন নি। মাত্র তিন বছরের মাথায় অমানুষদের হাতেই তিনি নিহত হলেন। বাঙ্গালীকে তিনি মানুষ বানাতে পারেন নি।
পরে অনেকেই চেষ্টা করেছেন। কতটুকোই বা পেরেছেন ।
৮ই ডিসেম্বর ২০১০ সকাল ১১ টা থেকে ১২ টা ২৩ মিনিট পর্যন্ত এই সোয়া ঘন্টায় শেয়ার বাজার থেকে কত টাকা হাওয়ায় মিলিয়ে গেছে তার পরিসংখানে কেউ কেউ বলে ১৮ হাজার কোটি টাকা কেউ বলে ২২ হাজার কোটি টাকা। বিগত ১৫ দিনের হিসাব মেলালে দেখা যায় প্রায় ৮৬ হাজার কোটি টাকা মার্কেট থেকে উড়ে গেছে। ফলাফল ঠিক আগের মতই,কিছু মানুষের দুখ হতাশা অবশেষে আত্বহত্যা ।
টাকা গুলো কে কিভাবে কোথায় নিয়ে গেছে আমি বলব না কেবল রবীন্দ্রনাথ এর কথাটাই বলব "৭ কোটি মানুষের হে মুগ্ধ জননী রেখেছ বাঙ্গালী করে মানুষ করনি" । বাঙ্গালী এখনও মানুষ হয় নি।
লুই আই কান নামের এক ভদ্রলোক আমাদের সংসদ ভবন এর ডিজাইন করেছিলেন। মুল নকশায় ক্রিসেন্ট লেকটিকে একটি অর্ধ চন্দ্রের মত দেখা যায় । চন্দ্রের মাঝখানে সংসদ ভবন ও একটি তারা ।
সেখানে ব্রিজ আর মাজার করে এখন ধনুকাকৃতির করা হয়েছে । প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন "চাদ শান্তির আর ধনুক যুদ্ধের প্রতিক "। কি বোঝালেন আমি বুজেছি আপনারা বুজলে ভালো না বুঝলে আরো ভালো।
জবাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন "জিয়ার মাজার আর সেতু নির্মান দ্বারা সংসদ ভবনের সুন্দর্য আরও বৃদ্ধি পেয়েছে " । যেদিন সংসদ ভবনের নাগরিক চত্তর সাধারন মানুষের জন্য রেসট্রিকটেড করে দেয়া হল সেই দিনই এর সুন্দর্য হারিয়ে গিয়েছিল।
চন্দ্র কিংবা ধনুক কোন ব্যাপার না ।
তিস্তা চুক্তি,টিপাইবাধ,সিমান্তে বাঙ্গালী হত্যা নির্যাতন চলছে চলবে। ভারতের কথা, আমরা সায় দিয়ে যাচ্ছি। যদি বলি বাংলাদেশ একটা ইজারাতান্ত্রিক দেশ খুব কি ভুল বলা হবে?তাইতে দেখি দেীড়ের প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়ে কেউ কেউ মন্ত্রিত্ব পায় । যোগ্যতার বিচার না করেই নাক কান গলা স্পেশালিষ্ট রা উপদেষ্টা হয় ।
প্রিয়ভাজন বলে বাড়ীর কাজের মহিলাকেও মন্ত্রীত্ব দেয়া যেতে পারে । আজ দেখলাম দিপু মনি বলেছেন " ভারতের ওয়েব হ্যাকিং করার পেছনে স্বাধীনতা বিরোধী চক্র জড়িত । বিশ্বাস করেন আমি হাসি নি । কেবল সেই কথাটিই ভাবলাম "৭ কোটি মানুষের হে মুগ্ধ জননী রেখেছ বাঙ্গালী করে মানুষ করনি"।
পদ্মা সেতু নিয়ে তালগোল পেকে গেছে ।
যুক্তির চেয়ে আবেগের প্রাধান্য বেশী পাচ্ছে। ৩২ কোটি হাত দিয়ে,বাজারের টাকা বাচিয়ে,মন্ত্রীদের এক মাসের বেতন দিয়ে ,সাধারন মানুষের দান খয়রাত নিয়ে নাকি পদ্মা সেতু বানানো হবে । আশ্চর্য এবং অবাক করা কথা । রাজাকার বিনাশ করতে সেদিন জয় বাংলা বলে চিতকার করেছিলাম ,বঙ্গবন্ধুর কন্যাকে ভোট দিয়েছিলাম অথচ তার মুখে আজ কি শুনি । জানি বিশ্বব্যংক যাদের উপর আছর করে তারা কোমড় উচু করে দাড়াতে পারে না ।
ভারত,মালএশিয়া,উত্তর আমেরিকার দেশগুলো বিশ্বব্যাংক তাড়িয়ে মাথা উচু করে দাড়িয়েছে । বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশ আদর্শ । প্রতি বছর বাংলাদেশ ৪০ হাজার কোটি টাকা লোন পরিশোধ করে । কিন্তু একটি দেশের আত্মনির্ভশীল হতে যে দেশপ্রেম,দেশত্ববোধ,একাগ্রতা,পারষ্পরিক সহযোগিতা,সচ্ছতা প্রয়োজন তাকি আদোতেই আছে ?আমাদের নেতা নেত্রীরা একজন হ্যা বললে অন্যজন চোখ বন্ধ করে না বলে দেন । অভিনন্দন ফিরিয়ে নেয়ার নজিরও আছে ।
পদ্মাসেতু ছাড়াই এত বছর কাটিয়েছি না হয় আরো কিছুদিন থাকব কিন্তু কোন ভুল সিদ্ধান্তের বলি হয়ে দেশেকে আরো পেছনে ফেলাটা যুক্তিযুক্ত হবে না । আজকে শুনলাম দুটি ব্যাংক একাউন্ট খুলেছে সরকার যেখানে সাধারন মানুষ সেতুর জন্য চাদা দিতে পারবে । বিশ্বাস করেন আমি হাসি নি । কেবল সেই কথাটিই ভাবলাম "৭ কোটি মানুষের হে মুগ্ধ জননী রেখেছ বাঙ্গালী করে মানুষ করনি"।
শেষ করি : লেখার প্রথমে উল্লেখিত বন্ধুর সাথে হেটে হেটে বাড়ী যাচ্ছি ।
পথে চিপস কিনলাম খাবার জন্য। বন্ধুটি খেয়ে চিপস এর খোসাটি হাতে নিয়ে হাটতে লাগল বললাম ফেলে দিতে ফেলল না বলে ডাস্টবিন পেলে তাতেই ফেলবে । অবশেষে খোসাটি বাড়ীর ময়লার ঝুড়িতে ফেলতে হল কারন পথে কোন ডাস্টবিন পেলাম না । ডাস্টবিনে ফেলার মনোবৃত্তি এবং ডাস্টবিন দুটোই দরকার । তবেই না বাংলাদেশ মানুষ হবে ।
"দাম দিয়ে কিনেছি বাংলা কারো দানে পাওয়া নয়" কিংবা "কাদতে আসিনি ফাসির দাবী নিয়ে এসেছি " বাক্যগুলো মুখ থেকে বের হলেও উতপত্তি হৃদয়ে। স্বাধীনতা কোন সাধারন জিনিস না। খেলতে খেলতে স্বাধীনতা আসিনি। গোল টেবিল কিংবা লম্বা টেবিল বৈঠক করে স্বাধীনতা আসেনি। রক্ত দিয়ে আনতে হয়েছে।
আমার বাবার হত্যাকারী মায়ের ধর্সনকারী কোন রাজাকার এই বাংলাদেশে গাড়ীতে ফ্লাগ উড়িয়ে যায় সত্যি বলছি গায়ে আগুন ধরিয়ে দেব। গোলাম আযম ,সাইদি,নিজামী ,মুজাহিদ ,সাকা চেীধুরী সহ সকল যুদ্ধাপরাধীদের ফাসি চাই ।
আমার বন্ধুকে বলি ৭১ রে আমার বাবা ভাই চাচা দের খেয়ে দেয়ে কোন কাজ ছিল না,তাই তারা যুদ্ধে গিয়েছিল তাইত আমাদের এখন খেয়ে দেয়ে করার মত অনেক কাজ আছে ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।