এতোই সাধারণ যে চোখে পড়ে না। হাত খরচের প্রয়োজনে টিউশনি করি। ভাগ্য ভালো বলতে হবে যে টিউশনি দুইটাই কাছাকাছি। এক বাসা থেকে আরেক বাসা ৫/৬ মিনিটের হাটা রাস্তায়। আরও সহজ করে বললে, একটা শাহজালালের (রঃ) মাজারের সামনের গেটে, আরেকটা পিছনের গেটে।
টিউশনি শেষ করে মাজারের পিছনের গেট দিয়ে, কবরস্থানের ভিতর দিয়ে শর্টকাটে বাসায় ফিরি।
দরগাহর ভিতর নানা কিসিমের মানুষে ভর্তি থাকে সবসময়। কেউ মাজার জিয়ারতের উদ্দেশ্যে, কেউ ঘুরতে, কেউ ভিক্ষা করতে। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে বাস, ট্রাক ভর্তি লোকজন আসে এই মাজারে। মাথাটা ঘুরান।
দেখবেন, কেউ এক মনে মাজার জিয়ারত করছে। ওই কোনায় কেউ ছবি তুলছে, কেউ জায়গাটার ভিডিও করছে। কেউবা আবার জালালী কবুতরকে খাবার দিচ্ছে। কবুতরগুলো মুখে খাবার নিয়েই উড়ে যাচ্ছে নীল-সাদা আকাশে। মাজার প্রঙ্গনে সবসময়ই আপনি ঘুমন্ত একদল মানুষ দেখবেন।
এদের কেউ অনেক দূরের কোন জায়গা থেকে এসেছে। ক্লান্ত দীর্ঘ পথ ভ্রমনে। আবার কেউ হয়তো “ঊল্টা-পাল্টা’ জিনিস খেয়ে সটান হয়ে পড়েছে!!
তবে আমার কাছে সবচেয়ে ইন্টারেস্টিং লাগে মাজারের পিছনের কবরস্থানের আশপাশের অংশটুকু। এখানে একদঙ্গল ভিক্ষুক সবসময় বসে থাকে। কবর জিয়ারতের জন্য যারা আসে, এই ভিক্ষুকেরা তাদের কাছ থেকে সাহায্য নেয়।
মাজারের সিন্নির সবচেয়ে বড় কালেক্টর এই ভিক্ষুকেরা। কোনদিন না খেয়ে থাকতে হয় না এদের। মাঝে মাঝে দেখা যায় ৫/৬ জন ভবঘুরে টাইপের ভিক্ষুক গোল হয়ে বসে অতি “উচ্চমার্গের” কথা বার্তা বলছে। একদিন শুনলাম এরকম একদল খুব উচ্চস্বরে নিজেদের মধ্যে বলাবলি করছে-
“জীবন কি?”
“জীবনের রহস্য কি?”
“মন কি”
“মন কোন পথে চলে?”
আমার ইচ্ছা করছিল একটু দাঁড়িয়ে শুনে যাই এদের আলোচনাটা। কিন্তু “পাছে লোকে কিছু ভাবে!!!”- এই চিন্তা করে আর দাড়াইনি।
সাহস করে একদিন শুনতে হবে এদের ফিলসফিটা কি!!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।