গনজাগরনের মাধ্যেমে পরিবর্তন সম্ভব....মানুষের চিন্তার পরিবর্তন করাটা জরুরি ....বুদ্ধিবৃত্তিক পুনরজাগরনে বিশ্বাসী আর দশটা স্বাভাবিক মানুষের মতো নন তিনি। জন্মের শুরুতেই ভাগ্যবিধাতা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। তাই কোনো দিনই পায়ে ভর দিয়ে হাঁটার সুযোগ হয়নি তার। বন্ধুরা যখন দু’পায়ে ভর দিয়ে স্কুলে যেত, তখন তাকে অপেক্ষা করতে হতো অন্যের সাহায্যের জন্য। বন্ধুরা যখন ফুটবল খেলত, তখন তার ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকা ছাড়া কিছুই করার ছিল না।
কারণ জন্ম থেকেই তার পা দুটি অকেজো। ফলে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তার সঙ্গী হয় স্ট্রেচার। এবার তিনি সেই স্ট্রেচারে ভর দিয়েই আর দশজন স্বাভাবিক শিক্ষার্থীর মতো যোগ দিয়েছেন আন্দোলনে। মুষ্টিবদ্ধ হাতে শপথ নিয়েছেন প্রাণপ্রিয় ক্যাম্পাসের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারের। তার পায়ে বল না থাকলেও, মনোবলের কোনো কমতি নেই।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ২০০৮ ব্যাচের ছাত্র তিনি। নাম সিফাত। পড়ছেন নগর ও পরিকল্পনা বিভাগে, তৃতীয় বর্ষে।
গতকাল সকালে সিফাতও অংশ নেন বুয়েটের উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে করা শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মৌনমিছিলে। বুয়েটের সারিবদ্ধ দুই সহস্রাধিক শিক্ষার্থীর সঙ্গে স্ট্রেচারে ভর দিয়ে আসেন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে।
চোখে মুখে ছিল সরলতা আর ক্লান্তির ছাপ। কিন্তু কণ্ঠে তার দৃঢ় প্রত্যয়-‘বুয়েটকে মেধা, যোগ্যতা, ন্যায়ভিত্তিক জ্ঞান চর্চা ও প্রকৌশল শিক্ষার একটি আদর্শ প্রতিষ্ঠান হিসেবে সমুন্নত রাখব। ’ উপাচার্য ও উপ-উপাচার্য বিরোধী আন্দোলনের অংশ হিসেবে মৌন মিছিলে যোগ দিলেও সিফাতের মূল দাবি—গত ১১ জুলাই থেকে বন্ধ ঘোষণা করা বুয়েট ক্যাম্পাস খুলে দেওয়া।
সিফাত এই প্রতিবেদককে বলেন, হঠাত্ বুয়েট বন্ধ ঘোষণা করায় আমরা সেশনজটে পড়ে যাচ্ছি। ফলে আমাদের স্কলারশিপ ও চাকরি পেতে সমস্যা হবে।
তাই আমার দাবি হচ্ছে উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের পদত্যাগের মাধ্যমেই হোক আর শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমেই হোক-অবিলম্বে বুয়েট ক্যাম্পাস খুলে দেওয়া হোক। ’ আন্দোলনে অংশ নেওয়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, যদি অন্যায় হয়ে থাকে তবে অন্যায়কে সমর্থন করতে পারি না। আমি চাই একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পড়ালেখা করতে। তাই স্বতঃস্ফূর্তভাবে আন্দোলনে যোগ দিয়েছি।
সিফাতকে সাহায্য করতে তার সঙ্গী হয়েছেন মা রওশন আরা।
তিনি জানান, সিফাত হলে থাকেন না, মৌন মিছিলে অংশ নিতে তারা মুগদা থেকে রিকশায় করে এসেছেন। এছাড়া হঠাত্ বুয়েট বন্ধ ঘোষণা করাটা ঠিক হয়নি উল্লেখ করে রওশন আরা আরও বলেন, বন্ধের কারণে ক্লাস পরীক্ষা না হলে ওরা (শিক্ষার্থীরা) সেশনজটে পড়ে যাবে। তিনি উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের পদত্যাগ এবং অবিলম্বে ক্যাম্পাস খুলে দেওয়ার দাবি জানান। (কৃতজ্ঞতাঃ সাদ্দাম হোসাইন) ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।