যুদ্ধাপরাধীর বিচার ও জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবী করছি নিরপেক্ষতা শব্দটি নিয়ে বাংলাদেশের মধ্যবিত্তের একটা অবসেশন আছে। এরা সবাইকে রাজনীতি নিরপেক্ষ দেখতে চায় - এর কারন আইউব খানের শাসনামল থেকে বিরাজনীতি করনের যে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে তা চলেছে জিয়া এবং এরশাদ শাসনামল পর্যন্ত। এখনতো রাজনীতি মানেই ব্যবসা আর অবসরভোগীদের জন্যে ক্ষমতা আর অর্থ উপার্জনের উপায়। সকল রাজনীতির দড়ির নাটাই নিয়ে বসে আছেন দুইনেত্রী।
কথা হচ্ছিলো বাংলাদেশের উচ্চপদগুলোতে রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগ প্রসংগে।
রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগ কোন ভাবেই ভুল বা খারাপ কাজ নয়। অবশ্যই সেখানে যোগ্য এবং পেশাজীবিদের উপযুক্ত জায়গায় বসানো ক্ষেত্রে যথেষ্ঠ সতর্ক থাকতে হবে। রাজনৈতিক নিয়োগ না হলে একটা সরকারের পক্ষে কাজ করা কঠিন হবে। উদাহরন হিসাবে বলা যায় ৯৬ এ ক্ষমতায় এসে শেখ হাসিনা সুশীলদের তরিকা মতে রাষ্ট্রপতি, প্রধান নির্বঅচন কমিশনার এবং প্রশাসনের উচ্চপদে আপাত দৃষ্টিতে নিরপেক্ষ লোক বসিয়ে ছিলেন - তা ফলাফল আমরা সবাই জানি। অর্থ সচিব হিসাবে শাহ আব্দুল হান্নানকে চুক্তি ভিত্তিতে নিয়োগ দিয়ে রেখেছিলেন - যে একজন জামাতে রোকন এবং লতিফুর রহমানের জন্যে সকল পেপার ওয়ার্ক তৈরী করে রেখেছিলো শাহ হান্নান।
তাই লতিফুর রহমান উপদেষ্ঠা পরিষদ তৈরী আগেই সকল সচিবদের বদলী এবং নতুন সচিব নিয়োগ করতে পেরেছিলেন - তার মধ্য এমাহ হান্নানকে মন্ত্রীপরিষদ সচিব হিসাবে নিয়োগ দিয়ে আওয়ামীলীগের ক্ষমতায় আসার রাস্তাকে মোটামোটি সিল-গালা করে দিয়েছিলো।
অন্যদিকে দেখা যায় - আমেরিকায় নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবার পর পরই হোয়াই হাউজ খালি করে পুরানোরা চলে যায় আর নতুন প্রেসিডেন্টের পছন্দের লোকজন সেই স্থানে স্থলাভিষিক্ত হয়।
কানাডার প্রশাসনেও প্রধানমন্ত্রীর পছন্দের লোকজন বসানো হয় এমনকি ছোট ছোট ট্রাইবুন্যালেও দলীয় লোকজন বসানো হয়। এইটা করা হয় প্রশাসনকে গতিশীল করার জন্যে। নতুবা বিরুদ্ধ মতের লোকজন পদে পদে সরকারকে বাঁধা দিয়ে প্রশানকে স্থবির করে দেবে।
সেই বিবেচনায় বিশ্ববিদ্যালয়ে দলীয় লোকজন নিয়োগ ভুল না - তবে সেই নিয়োগের ক্ষেত্রে যদি চোর বাটপার আর অযোগ্য লোকজন বসানো হয় - সেইটাই সমস্যা।
কথা হলো একটা রাজনৈতিক দলের পক্ষে থাকা লোকজনের মধ্যে কি দক্ষ পেশাজীবি আর গতিশীল লোক নেই যে নজরুল ইসলাম আর এনামুল হকের মতো লোকজনকে ভিসি বানাতে হয় - যারা সরকারের কর্মসূচীর পক্ষে কাজ করার চাইতে বোঝা হিসাবেই পরিনত হয় - যাদের নিয়ে সরকার শুধু বিব্রতই না - মোটামুটি বিপদে পড়ে যায়। এনামুল হকের জন্যে জাহাঙ্গীর নগরের জামাতি আর চিনাবাদামরা বিজয়ী বেশে এখন নতুন ভিসিকে ধমকায় আর বুয়েটের হিজবুত আর জামাতীরা তো মোটামুটি পলাশী বসন্তের স্বপ্ন দেখছে। সরকারের উচিত এই বোঝাগুলোকে যতদ্রুত সম্ভব ঝেড়ে সেখানে দক্ষ পেশাজীবি এবং গতিশীল লোকদের নিয়োগ দেওয়া।
নোট - বিতর্কের ক্ষেত্রে একটা কথা মনে রাজা জরুরী - বিশেষ করে গনতন্ত্রের চর্চার জন্যে বিশেষ গুরুত্বপূর্ন - তা হলো - আমরা অবশ্যই যে কোন বিষয়ে দ্বিমত করতেই পারি - তার জন্যে অসন্মানজনক আচরন জরুরী নয়।
যারা মনে করেছেন গালি দিয়ে বুয়েটের পবিত্রতা রক্ষা করা হচ্ছে - তা একবার ভেবে দেখেছেন কি, আপনার আচরন বুয়েটের সার্বিক নৈতিক শিক্ষাকে কতটা নীচে নামাচ্ছে?
তাই বলি - WE CAN DISAGREE WITHOUT BEING DISAGREEABLE. ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।