আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অপরের লিখা কপি করলাম.... NOT FIT FOR HUMAN CONSUMPTION

দভার্গা ১৯৮১ NOT FIT FOR HUMAN CONSUMPTION আবিদ রহমান : বেঁচে থাকার নিশ্চিত প্রয়োজনে বাজার-সওদা হয়। এবং খাইও। কিন্তু প্রতি লোকমাতে থাকে আতঙ্ক। কী খাচ্ছি? সয়াবিনের নামে কিনছি পামওয়েল। মাঝখানে আর কোনো কারসাজি আছে কিনা জানি না।

শরিষার তেল এড়িয়ে চলি ঝাঁঝ বাড়ানো গান পাউডারের ভয়ে। টমেটো-আম-লিচু সবকিছু বিষাক্ত কেমিক্যালে পাকানো। লাল টকটকে তরমুজের পুরোটাই সিরিঞ্জের সাহায্যে ঢেলে দেয়া রং ও সেকারিন। জালে ধরা পড়া এপ্রিলের মাছ বরফ-ফরমালিনের ‘মিলিত ভালবাসায়’ জুলাইয়ের বাজারেও বেশ তরতাজা। কচি মহিষের ‘গরুর মাংস’ও কেমিক্যালের কল্যাণে ‘ফ্রেশ’।

সিঙ্গারা-বেগুনি-ভাজি-ভুনার প্রতি আবাল্য টান। জানি স্বাস্থ্যসম্মত নয়, তবুও চোখের ক্ষিধে জিহ্বে চেখে দেখি। বন্ধুরা আমার হাব-ভাবে আতঙ্কিত। কিছুদিন আগে জানলাম, নামিদামি কমিউনিটি সেন্টারের বিবাহ-ভোজের রোস্ট ভাজির ১৩৫ টাকার পরিত্যক্ত তেল শেষরাতে শ্যামলীর আনোয়ারা হোটেলের কাছে বিক্রি হয় ৬০ টাকায়। সেখানে মাস তিনেক পুরি-সিঙ্গারা ভাজি-ভুণার পর সেই তেল ৩০ টাকায় আসে হাতির পুলের ঠেলাগাড়ির পেঁয়াজু-বেগুনিতে।

তারপর সেই তেল আরো কত হাত যে বদল হয় সিস্টেম লসে নিঃশেষ হওয়ার আগে! একা থাকার বিড়ম্বনায় খাওয়া-দাওয়াটা ইদানীং বেশ অনিয়মিত। দুপুরটা জাতীয় প্রেসক্লাবে। রাতে অফিসের ক্যান্টিনের ডিম-পাউরুটি। সমস্যাটা সকালের নাস্তায়। মহল্লার এক হোটেলে পরোটা-ডাল-ভাজির নাস্তা খেতে গিয়ে দেখি, লার্ড বা চর্বি দিয়ে ভাজা হচ্ছে সুস্বাদু পরোটা।

অভিজ্ঞতা থেকে জানি, সাবানের কাঁচামাল হিসেবে এনিমেল ও ভেজিটেবল ফ্যাটের লার্ড আমদানি হয়। নিষিদ্ধ শুয়োর-গরুর মিলিত ফ্যাটের লার্ডে ভাজা হয় হালাল খাবার। দেখার বা তদারকির কেউ নেই কোথাও। ’৯৫ সালে প্রথমবারের মতো বেড়াতে যাই মেলবোর্নে। জাহাজের ক্যাপ্টেন বড় ভাই তখন একটি আন্তর্জাতিক কোম্পানির মেরিন সার্ভেয়ার।

সেখান পরিচয় হল কম্যুনিজমের ভয়ে দেশত্যাগী পোলিশ পিটার লুদভেগের সঙ্গে। বড় ভাইয়ের এই সহকর্মীটি অস্ট্রেলিয়ার রপ্তানি পণ্যের কোয়ালিটি এবং/অথবা সিআরএফ সার্টিফিকেট ইস্যু করেন। কথা প্রসঙ্গে পিটার জানতে চাইলেন, বাংলাদেশের মানুষ এত ঘোড়া দিয়ে কী করে। ঘোড়া কি কৃষি কাজে লাগে? প্রশ্ন শুনে আমার টাস্কি লাগার দশা। বাংলাদেশ ও ঘোড়া! পিটার জানালেন, প্রতি বছর হাজার হাজার টন ছোলা ও ডাবলি অস্ট্রেলিয়া থেকে বাংলাদেশে যায় ঘোড়ার খাদ্য হিসেবে।

রপ্তানিকারকের আবেদনে লেখা থাকে ‘নট ফিট ফর হিউম্যান কনজামশন’। সেই ছোলা-ডাবলি পবিত্র রমজানে হয়ে উঠত রোজাদারদের প্রাণের খাবার। আশঙ্কা করি এখনো সেই ‘সিলসিলা’ চালু আছে। বড্ড জানতে ইচ্ছে হয়, আর কোন কোন আমদানিকৃত ‘NOT FIT FOR HUMAN CONSUMPTION’ আমাদের প্রাত্যহিক মেন্যুতে যুক্ত! ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.