অ আ স্বাধীনতার ঘোষণার দিন তারিখ ক্ষণ এবং কে সেই ঘোষণা দিচ্ছেন - এই বিষয়গুলোর রয়েছে বিশেষ আইনী তাৎপর্য, ঐতিহাসিক তাৎপর্যের পাশাপাশি। কারণ, এর মাধ্যমেই নিরূপণ করা হয় ঠিক কবে কখন থেকে স্বাধীন দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটেছিল। কারণ, এই বাধীনতার ঘোষণা (Unilateral Declaration of Independence - UDI), ঘোষণাটির মুহুর্ত, কে সেই ঘোষণাটি দিচ্ছেন, যিনি ঘোষণাটি দিচ্ছেন তিনি জনপ্রতিনিধিত্বের ও জনসমর্থনের কি ধরণের ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে ঘোষণাটি দিচ্ছেন - এই বিষয়গুলোর ওপর অনেক প্রশ্নের উত্তর নির্ভর করে। যেমন: মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃতি, প্রতিরোধের স্বরূপ, স্বাধীনতা ঘোষণার সার্বিক বৈধতা ইত্যাদি। অথচ অদ্ভুত হলেও সত্য - বাংলাদেশের "স্বাধীনতার ঘোষক" আসলে কে সেই বিষয়টি নিয়েও রাজনীতি হয়েছে।
বিএনপি নামের একটি রাজনৈতিক দল প্রায় তিন দশক ধরে এই বিষয়টিকে ইস্যু করে টানা মিথ্যাচার করে গেছে।
রাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতায় মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের ওপর সবচেয়ে প্রামাণিক প্রাতিষ্ঠানিক কাজ হল "মুক্তিযুদ্ধের দলিল খন্ড"। বিএনপি-জামায়াতের চার দলীয় জোট সরকারের সময় পনেরো খন্ডের এই দলিলের নতুন সংস্করণ তৈরীর সময়ও একে ব্যাপকভাবে কাটাছেঁড়া করা হয়। এই বিষয়ে বিভ্রান্তি আর মিথ্যাচারের জাল এতোই বিস্তৃত হয়ে পড়েছিল যে অবশেষে দেশের উচ্চ আদালতকে এগিয়ে আসতে হয়েছে বিষয়টির নিষ্পত্তিতে, যেখানে স্পষ্ট ভাষায় হাইকোর্টকে রায়ের মাধ্যমে ঘোষণা করতে হয় যে স্বাধীনতার ঘোষক হলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান, জিয়াউর রহমান না। ইতিহাসের তাৎপর্যে বঙ্গবন্ধুর সেই ঘোষণাই প্রকৃত ঘোষণা।
হাইকোর্টের সেই রায়টি আইসিএসএফ এর ই-লাইব্রেরীর এই লিন্ক থেকে ডাউনলোড করে নেয়া যাবে: http://bit.ly/PhVBpD
২৬ মার্চ ১৯৭১ থেকেই এর পরের কয়েকটি দিন পৃথিবীর পাঁচটি মহাদেশের প্রধান সব মিডিয়ার রিপোর্টেই স্বাধীনতার ঘোষণা এবং ঘোষকের বিষয়টি তখন ব্যাপকভাবে এবং স্পষ্ট ভাষায় কাভার করা হয়েছিল। যেমন: সে সময়কার আমেরিকার তিনটি প্রধান টিভি চ্যানেল ABC, NBC, এবং CBS - সবাই বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণার বিষয়টি কাভার করেছেন - আর এই সংবাদ প্রচার করা হয়েছে ২৬ মার্চ তারিখেই। ২৬ তারিখের এই সংবাদ প্রতিবেদনগুলোতে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে ঘোষক হলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান। অন্য কারও "ঘোষণা পাঠ" সেখানে আন্তর্জাতিক মিডিয়ার বিবেচনায় একেবারেই তাৎপর্যপূর্ণ বা উল্লেখের যোগ্য তথ্য বলে মনে হয়নি।
এটা আসলে কান্ডজ্ঞানেরও ব্যাপার।
রেডিও বা টিভিতে যখন কোন খবর পাঠক বা কোনো প্রতিবেদক কিংবা মূল কোনো ব্যক্তি বা শক্তির পক্ষে যখন কেউ কোনো কিছু পড়ে শোনান বা বিবৃত করেন, আমরা নিশ্চয়ই তখন উদ্যোক্তা হিসেবে সেই পুরো বিষয়টির কৃতিত্ব প্রতিবেদককে বা সংবাদ পাঠককে দিয়ে দিই না। অথচ সেই অদ্ভুত বিষয়টিই আমাদের দেশের বিচিত্র এই রাজনীতিতে ঘটেছে। যে বুদ্ধিমানের দল জিয়াউর রহমানকে প্রকৃত ঘোষক মনে করেন, তাদের কেউ কখনো এই সহজ প্রশ্নটা নিজেদের করেনা - রাজনীতিতে বা স্বাধীনতার আন্দোলন সংগঠনে অতীতে বিন্দুমাত্র ভূমিকা নেই এমন কেউ স্রেফ রেডিওতে ঘটনাচক্রে একটা বক্তব্য পাঠ করে শুনিয়েছেন বলেই কি তাকে "মহান স্বাধীনতার ঘোষক" বানিয়ে দিতে হবে? তেমন হলে তো টিভিতে যে খবর পাঠক/পাঠিকা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের প্রতিষ্ঠার সংবাদটি প্রথম পড়ে শুনিয়েছেন, তার ভূমিকাকেই মূখ্য বলে ধরে নিতে হবে পুরো বিচার প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে, আর এর আগের দুই যুগ ধরে বিচারের দাবীতে শহীদ জননী জাহানারা ইমাম থেকে শুরু করে আর বাকি সবার ভূমিকাকে গৌণ বলে ধরে নিতে হবে এই ধারার যুক্তিতে!
দেখুন, পড়ুন এবং ছড়িয়ে দিন:
২৬ মার্চ ১৯৭১ - যুক্তরাষ্ট্রের CBS, NBC, এবং ABC চ্যানেলের সান্ধ্য খবরের ফুটেজ: http://youtu.be/_CfluI9r_E8
[সৌজন্যে: জন্মযুদ্ধ'৭১ http://jonmojuddho71.com/]
মুক্তিযুদ্ধের স্বরূপ নিরূপণে স্বাধীনতার ঘোষণার বিষয়টি কেন আইনগতভাবে তাৎপর্যপূর্ণ সে বিষয়ে জানতে পড়ুন: http://bit.ly/x96PJQ
স্বাধীনতার ঘোষক ইস্যুতে হাইকোর্ট এর রায়টি পড়ুন: http://bit.ly/PhVBpD
ডেইলী স্টারে মাসুকুর রহমান এবং এমএমআর জালাল এর এই লেখাটিও পড়ুন:
http://bit.ly/NbOnQw
================
মোবাইল শেয়ার লিন্ক: http://on.fb.me/NaIM9i
================
ICSF এর উদ্যোগসমূহ, প্রকল্পসমূহ, লক্ষ্য উদ্দেশ্য, পরিচালিত আর্কাইভসমূহ, ব্যবস্থাপনা টিম এবং গ্রুপসমূহ, এই সামষ্টিক কর্মযজ্ঞে অংশীদার ব্যক্তি এবং সংগঠনগুলোর ব্যাপারে আরও জানতে ঘুরে আসুন আমাদের মূল পোর্টাল পাতা: http://icsforum.org/
এই পোস্টটিতেও বিস্তারিত রয়েছে: http://bit.ly/N42G5K
================
একাধিক ভাষায় এই বক্তব্যগুলো ছড়িয়ে দেয়া প্রয়োজনীয় বলে আমরা মনে করি। তাই এই পোস্টটি অনুবাদে যদি কেউ আগ্রহী হয়ে থাকেন, তারা দু'ভাবে আমাদের এই সামষ্টিক কর্মযজ্ঞে ভূমিকা রাখতে পারেন:
এক. নিচে মন্তব্যাকারে অনুবাদ পেশ করে; অথবা,
দুই. অনুবাদ করে তা ঠিকানায় ইমেইল করার মাধ্যমে।
অনুদিত কনটেন্ট মানসম্মত হলে তা কৃতজ্ঞতাসহ এই ফেসবুক পাতাতেই স্ট্যাটাস আকারে এবং আমাদের বিভিন্ন সাইটে প্রকাশ করার বিষয়টি এডমিনগণ বিবেচনা করবেন।
ধন্যবাদ।
=================
[ফেসবুকে প্রকাশের উপযোগী এই পোস্টটি লিখেছেন আইসিএসএফ সদস্য রায়হান রশিদ]
=================
-------------------------------
সকলের অবগতির জন্য আইসিএসএফ এর ফেসবুক পেজ থেকে কপি পেস্ট করা হলো। https://www.facebook.com/icsforum -
আরিফুর রহমান
---------------------------------- ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।