আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

তাবলীগ জামায়েত হতে সাবধান!

নিজের ভাবনা অন্যকে জানাতে ভালো লাগে। মাহাত্মা আহমদ ছফা তাঁর এক প্রবন্ধে লেখেছেন স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশের তিন আপদের নাম হুমায়ুন আহমেদের বই, দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর ওয়াজ, আর তাবলীগ জামাত। কথাটার এক পরম সত্যতা আমরা দেখি। যে তরুণ বই পড়ে সমাজ সভ্যতা, জ্ঞান-বিজ্ঞান নিয়ে আগ্রহী হয়ে উঠার কথা সেই তরুণরাই, হুমায়ুন আহমেদের বই পড়ে সমাজ-বিচ্ছিন্ন হিমু নামে এক উদ্ভট চরিত্র ধারণ করছে। ঘিয়ে রঙের পাঞ্জাবি, পূর্ণিমা রাতে একা-একা পথ চলা, জাগতিক সমস্ত সমস্য থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে নিজেকে নিয়ে মেতে থাকার নাম হিমু চরিত্র।

প্রাণী হিসেবে মানুষ পরস্পর নির্ভরশীল, এবং সংগ্রামপ্রবণ, প্রতিমুহূর্তে নিজেকে এবং পারিপার্শ্বিক পরিবর্তনের সংগ্রাম করে আজ মানুষ এই স্তরে এসেছে। পুঁজিবাদ মানব জাতির সেই সম্মিলিত সংগ্রামকে ব্যক্তিমানুষের ভাল থাকা ভাল খাওয়া কিংবা ব্যক্তিগত সংগ্রামে পরিণত করেছে। আমরা যখন হুমায়ুন আহমেদেনর হিমু চরিত্রের দিকে চোখ রাখি, তখন মনে হয় হুমায়ুন আহমেদ বোধ করি দেশের সমগ্র তরুণ সমাজকে এই আত্মপ্রেমের সবক দেওয়ার এজেন্ডা নিয়ে সাহিত্য করতে নেমেছেন। দেলোয়ার হোসেন সাঈদী এক ভয়ানক চরিত্রের নাম। ৭১ সালে যে মানুষ খুন আর নারী ধর্ষণের প্রত্যক্ষ ইন্দনদাতা ছিল।

স্বাধীনতার পরবর্ত্তীতে সেই লোক হয়ে গেলেন এক জবরদস্ত মাওলানা। তার ওয়াজ নচিয়ম সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে, আহমদ ছফা বলেছেন, লোকটা ওয়াজ না করে অভিনয় করলেও মন্দ করত না। তার ওয়াজের মধ্যদিয়ে তরুণদের মধ্য ইসলামি বিপ্লবের কথা প্রচার করলেও রাজনীতিতে তিনি যুক্ত মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের তাবেদার ও ভোটের রাজনীতি বিশ্বাসি জামায়াতে ইসলামির সাথে। মুখে প্রচার করে সবসমস্যার সমাধান দিতে পারে আল-কোরান। অথচ কোন সমস্য সামনে আসলেই আল-কোরান বাদ দিয়ে সমাধানের জন্য ছুটে যান সাম্রাজ্যবাদের কাছে।

উদাহরণ হিসেবে আমরা বলতে পারি ১৯৯৬ সালের যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রসঙ্গ নিয়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা শুরু হলে সমাধানের জন্য ছুটে গেছে কমনওয়েলত এর বিশেষ প্রতিনিধি চীপ এমেকার কাছে। খুব জোরের সাথেই প্রচার করে ইসলামে নারী নেতৃত্ব হারাম, অথচ সবসময় কোন না কোন নারীর আঁচল ধরেই রাজনীতি করে। স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশের রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার কিংবা ধর্ম নিয়ে ব্যবসা করাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার এক অনন্য কুকৃর্তি স্থাপন করেছে এই ভণ্ড মাওলানা। আমরা এবার তাবলিক জামাতের প্রসঙ্গে আসতে পারি, সাদা চোখে তাকালে এরা নিচক ধর্ম প্রচারক। কিন্তু আমরা যদি রাজনৈতিক বিজ্ঞানের আলোকে এই ধর্ম প্রচারকে বিশ্লেষণ করি তবে বেরিয়ে আসবে থলের বিড়াল।

ইসলাম ধর্ম এক বিশেষ মুহূর্তে আর্বিভাব হয়েছে। সমাজ-সভ্যতা বিকাশেও আছে তার বিশেষ অবদান। এই ধর্ম কোন অলৌকিক ক্ষমতা দিয়ে প্রতিষ্ঠা হয় নাই। ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক মোহাম্মদকে এই ধর্ম প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে তালোয়ার হাতে যুদ্ধ করতে হয়েছে কাফেরদের বিরুদ্ধে। অন্যায় আর অত্যাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোই হচ্ছে ইসলামের মহান শিক্ষ।

অথচ তাবলীক জামাত সেই শৈর্য-বীর্যের মহান ধর্মকে বানিয়ে তুলেছে এক আচরিক ধর্মে। আমরা তাবলীগ জামাতের ধর্ম প্রচারের সাথে হুমায়ুন আহমেদের হিমু চরিত্রের একটা মিল খুঁজে পায়। তাবলীগঅলারাও হিমুর মতো আমাদের সবক দেয়। জগতের সমস্ত সমস্যা থেকে চোখ ফিরিয়ে রেখে স্রেফ ধর্ম প্রচার করলে কিংবা এবাদত করলেই পৃথিবী থেকে সমস্ত অশুভ শক্তি ধ্বংস হয়ে যাবে। যদি তাই হতো তবে মোহাম্মদকে কেন তলোয়ার হাতে যুদ্ধ করতে হলো অন্যায়ের বিরুদ্ধে।

ইহুদিবাদী রাষ্ট্র যখন ফিলিস্তিনিদের নির্বিচারে হত্যা করে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদীরা যখন ইরাক-আফগানিস্থানে মানুষ হত্যা করে তখন তাবলীগরা আমাদের ঘরে ঘরে গিয়ে আমাদের শিক্ষা দেয় ওইসব রাজনৈতিক ঝামেলা থেকে দূরে থেকে শুধু এবাদত করার জন্য। সাম্রাজ্যবাদীরাতো এমনেই এক নির্বীর্য মানুষ চায়। যারা কোন অত্যাচারের প্রতিবাদ করবে না। সবচেয়ে বিবেচনার বিষয়টা হলো, আমেরিকার টুইন টাওয়ারে হামলার পর সাম্রাজ্যবাদীরা মিথ্যা জঙ্গীবাদের ধোঁয়া তুলে সমগ্র বিশ্বের মুসলমানদের উপর এক বিশেষ নজরদারি শুরু করেছে। স্রেফ নামের আগে মোহাম্মদ থাকার অপরাধে এয়ারপোর্টে অসংখ্য মুসলমানকে হেনস্ত হতে হয়েছে।

অথচ তাবলীগ ওয়ালাদের বিদেশ ভ্রমণে কখনো কোন সমস্যার কথা আমরা শুনি নাই। তাই বলছি, সাম্রাজ্যবাদী শাসকগোষ্ঠী যাদের বন্ধু তারা অবশ্যই সমগ্র মানব জাতির শত্রু। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.