একজন সুখী মানুষ
আমাদের একটাই সমস্যা। সেটা পবিত্র গ্রন্থবেত্তারা ফিক্সড করে দিয়েছেন যে এই খানের কোন কিছুই নড়ন-চড়ন করানো যাবে না। যাবে কোন কিছু পরিবর্তন করতে। যদি এই হতো দেশের সংবিধানের মত পরিবর্তনশীল, তাহলে সাড়া মুসলিম বিশ্বে একই আইন (মুসলিম আইন) থাকতো। একই ভাবে খ্রিশ্চান, হিন্দু বা বৌদ্ধ।
তখন আরেক সমস্যা হয়ে যেত যে একই দেশে শুধু মাত্র একই ধর্মের লোককে বাস করতে হতো, কিন্তু এটা সম্ভব না। কারন ধর্ম গুলো এসেছে প্রচার এবং ধর্মান্তকরনের মাধ্যমে। কেউ কেউ অত্যাচারিত ভাবে ধর্মান্তরিত হয়েছে, আবার কেউ স্ব-ইচ্ছায় হয়েছে।
সময় সে নিজেই পরিবর্তনশীল, তা না হলে তাকে সময় বলা যেত না। আমরাও সময়ের সাথে সাথে চলি।
তাই আমারাই পরিবর্তনশীল। এই বিশ্বময় পরিবর্তনশীল। প্রতিটি মুহূর্ত প্রতিটি অনু পরমানু থেকে বৃহৎ বস্তুও তাই। এবং আমারা প্রতিনিয়ত বর্তমান অবস্থা থেকে প্রভাবিত হয়ে পরিবর্তন হই। তাতে কারো সন্দেহ নেই।
কিন্তু আমাদের ধর্ম আমাদের বেধে রাখতে চায় এক জায়গায়। তারপর কিন্তু কেউ এক জায়গায় বা চিন্তা চেতনায় এক জায়গায় নেই। নেই বলে মানুষ ধর্মের বাণী গুলো অজান্তে নিজের মত করে ব্যাখ্যা করে নিচ্ছে । তাই বলা যায় ধর্মও কিন্তু এক জায়গায় বসে নেই। এই যে ধর্ম এক জায়গাই নেই তা কিন্তু উন্মুক্ত-গোপন ব্যাপার এখন সবার কাছে।
এটাকে কেউ নিজেকে প্রশ্ন করলেই সে উত্তর টা পাবে।
মুসলিম ধর্মে বোরখা পড়ার কথা বললেও নারীদের, তাই বলে কিন্তু সব নারী বোরখা পড়ে না বা পছন্দ করে না। ফলে যেহেতু এখনো অনেকেই বোরখা পড়ে তাই এই বোরখাটা সে খারাপ কাজে লাগায়, এই কারনে যে সে জানে বোরখা না পড়লেও কোন সমস্যা নেই, সে দেখেছে যে অনেক মুসলিম মেয়েই বোরখা পড়ে না, তাদের কোন সমস্যাও হচ্ছে না। এখন কথায় আসা যাক পরকালের কথা। পরকাল বলে আসলেই কি কোন কাল আছে কি না তা ধর্মবেত্তারাই নিজেই জানে না।
কেন জানে না। একটু ব্যাখ্যা করা দরকার। তারা যদি জানতো তাহলে ধর্ম গুরুরা নিজেরাই কোন অকাজ বা কুকাজ করতো না। বা নিজের ভাল ভাবে থাকার আশায় অন্যেরকে ক্ষতি করত না, কারন অন্যের ক্ষতি করা পাপ। আর পাপ হলে পরকালে সমস্যা আছে।
এই ধর্ম গুরুরা অন্যকে ঠিকই বলে যে এটা করা যাবে না, ওটা করা যাবে না। কিন্তু নিজেরাই ঠিক ঠিক ওই কাজ গুলো করে। তাই প্রতিফলিত হয় যে পরকাল নিয়ে তারা নিজেরাই সংশয়ে থাকে। এখন কথায় আসা যাক যে সে ভুল ব্যাখ্যা দিলে সে সমস্যায় পড়বে। কিন্তু আসলে যদি তাই হতো।
তাহলে সে যে ভুল ব্যাখ্যা দিল তা তো শুধু তার কেন, যারা ভুল ব্যাখ্যাটা শুনবে বা শিখবে তাদের পরবর্তী জেনারেশন ও একই কাজ করে আসবে। ফলে এই ভুল ব্যাখ্যা প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাবে আসল ব্যাখ্যায়। চলতে থাকবে যতখক্ষণ না এই ব্যাখ্যা কেউ বিশ্লেষণ না করে, যে এর বিশ্লেষণ করে অন্য একটা ব্যাখ্যা দিবে তারো ব্যাখ্যা চলতে থাকবে জেনারেশন থেকে জেনারশনে। তাহলে ধর্মের বাণীর আসল গুরুত্ত্বও থাকলো না। বা থাকবে না।
এখন কথা হলো এই যে প্রথম ভুল ব্যাখ্যা দিল যে কত জনের জন্য পরকারলে শাস্তি পাবে, বা কয়বার পাবে, আর যারা সাড়া জীবন ভুল ভাবেই চলল সে কি শাস্তি পাবে? ফলে দেখা যাবে যে পৃথিবীর সময় মানুষই শাস্তি পাচ্ছে। শাস্তি যখন পাচ্ছে তখন ধর্মের নিয়ম-কানুনের মুল্য কোথায়?
আরো বলা যায় একেক ধর্মের মানুষ অন্য ধর্মের মানুষকে খারাপ মানুষ বলে আখ্যা দেয়। বা এক ধর্ম অন্য ধর্মের মানুষকে পাপী বা মহা পাপী বি বিপথগামী বলে। এই গুলির ব্যাখ্যা কোথায়? আমার কিছু কলিগ আছে তারা বলে নাকি এক সময় পৃথিবীর সব মানুষই মুসলিম হয়ে যাবে। এই সান্তনার বাণী আমাকে দেয় এই জন্য যে আমি যাতে আগে ভাগে মুসলিম হয়ে কিছু নেকী কামাই করি।
আসলে এই ধরণের কথা যে আমার কলিগই বলে তা নয়, প্রায় মুসলিম দের কাছে শোনা যায়।
হিন্দু ধর্মের শাস্তি গুলো মুসলিম ধর্মের চেয়ে বিশেষ কিছু আলাদা নয়। ব্রাহ্মণদের লোভী মনোভাব অনেক আগেই ধরা পড়েছে লোক সমাজে, যে তারা অন্যের বাড়িতেই পুঁজা করে সংসার চালায়। তাদের নাকি মাঠে কাজ করার নিয়ম নেই। নিয়ম নেই লাঙ্গল ধরার।
তাই ছোট বেলা দাদুকে প্রশ্ন করতাম তাহলে তারা খায় বা খাবে কি? তারা কি শুধু অন্যের বাসায় পুঁজা করেই খাবে? আসলে ব্রাহ্মণরাই পূঁজা করে তারাই ঈশ্বরের সেবা করে, এবং তারা সবাই পূন্যবাণ হয়। অন্যের কি হয়? অন্য জনের হয়ে করে। বেশ ভাল। তাহলে কি ঈশ্বর এই জায়গায় একটু স্ব-বিরোধী করলো না। যে ব্রাহ্মণরা সবাইকে শিক্ষিত করে, আর অন্য দেরকে অশিক্ষিত করে রাখে যে পূঁজা করে কেমনে তাও জানায় না।
এই কথাটা বলার যুক্তি হলো তাহলে ব্রাহ্মণরাই একা কেন পূঁজা করবে, অন্যরা নয় কেন? আমার এক শিক্ষিত মেসো মশাই আছেন যিনি পূঁজা করতে পারলেও, মানে কিছু শিখলেও পূঁজা করেন না, করান ব্রাহ্মণ দ্বারা। কেন? যদি ভুল হয়। বাহ! বেশ । তাহলে এই শিক্ষারো দাম ঈশ্বরের কাছে নেই। ব্রাহ্মণের শিক্ষার দামটাই রয়ে গেল।
একই ভাবে মুসলিম সমাজে মিলাত পড়াতে একজন মৌলবিকে দরকার। কারন সে পারলেও ভীতি কাজ করে যে এই জন্য যে সে ভুল করতে পারে। তাই একজন প্রফেশনাল কে আনায় হয় এই ধর্মীয় কাজের জন্য। বলা আছে যে নিজের কাজ নিজেই করা ভাল। কিন্তু আসলে কি তা হয়? হয় না।
তাহলে যারা মানে বেশীর ভাগই তো নির্ভরশীল ধর্মের কাজের জন্য, তারা কি করবে এবং কি হবে পরকালে?
তাহলে কি বলা যায় না ব্রাহ্মণ, মৌলবি, পাদ্রী রা কি সমাজের সুবিধাবাদী মানুষ না? যে তাদের ছাড়া কোন ধর্মীয় কাজ হবে না। বা হলেও এম্ন ভাবে সবাইকে ভীত রাখে যে তোমরা ভুল করতে পারো, এই ধরণের। তাহলে কি তারা নিজেরাই একটা পেশা তৈরী করেছে নিজেদের জন্য ? যদি তাই হয়, তাহলে ধর্ম সবার জন্য সমান হল কিভাবে?
যদি তারা নিজেদের পেশাদার হিসেবে ভাবে ব্রাহ্মণ, মৌলবি, পাদ্রী রা, তাহলে পেশাদারিত্বের কারন ব্যাখ্যা বিকৃত হতে বাধ্য। কারন পেশাদারেরা নিজেদের ভাল (শ্রেষ্ঠ) প্রমাণ করার জন্য ব্যাখ্যার নতুনত্ব নিয়ে আসবেই। তাই দেখা যায় সমাজে এক এক জন ব্যাখ্যা কারী এক এক ভাবে ব্যাখ্যা দেয় ফলে মুল ব্যাখ্যা কী জনগণ এর জানা সম্ভব হয় না।
ফলে ধর্ম পরিবর্তন হতেই বাধ্য এই জন্য যে উক্ত কারন গুলোর জন্য। আর যেহেতু পরিবর্তন হয়, তাই পরিবর্তন করতে দোষ কোথায় উন্নয়নের জন্য? কেনই বা ইসলামি সুন্না আইন তৈরী করতে হবে ? তাতে তো পিছনে ফিরে যাওয়াই বুঝায়। মসজিদে মসজিদে পরিবার পরিকল্পনা অনুযায়ী সন্তান নিতে প্রচার করার সমস্যা কোথায়, সমস্যা কোথায় কনডম ব্যবহার করা বলাতে? তাতে তো মানুষ নিয়ন্ত্রণে থাকবে। এক শ্রেণীর মানুষকে না বললেও তারা করে, তাই বলে কি তাদের মুসলমানিত্ব চলে যায় ভাবে , না, ভাবে না। ধর্মের এই কর্ম-কান্ডগুলো মানুষকে ধর্মে বিতর্ক করতে সাহায্য করে।
ফলে ধর্ম আজ প্রশ্ন বিদ্ধ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।