রিয়ালের প্রতিপক্ষ এলচে। দূর! এমন ছোট দলের বিরুদ্ধে রিয়ালের খেলা মানায়। কোথায় 'এ+' গ্রেডের রিয়াল মাদ্রিদ, আর কোথায় প্রথমবারের মতো টেনেটুনে লা লিগায় পাস মার্ক পাওয়া এলচে! বিজয় নিয়ে তো চিন্তা নেই-ই 'কীভাবে এলচে গোলবন্যায় ভেসে যায়' -এমন ভাবনা নিয়েই মাঠে গিয়েছিলেন রিয়াল সমর্থকরা। কিন্তু মাঠে গিয়ে নবাগত এলচের একের পর এক 'চোয়ালবদ্ধ' আক্রমণ দেখে অবাক ভক্তরা। রিয়ালের অবস্থা হয়েছিল 'ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি'।
তবে হ্যাঁ, এ ম্যাচে রিয়ালকে পয়েন্ট হারাতে হয়নি ঠিকই, কিন্তু গ্যালাটিকোদের জয়ের নায়ক তো কোনো খেলোয়াড় নন, রেফারি সিজার মিউনিজ ফার্নান্দেজ!
১-১ গোলে ড্রতেই শেষ হতে যাচ্ছিল ম্যাচ। কিন্তু শেষ বাঁশি বাজার মুহূর্তে রিয়ালকে উপঢৌকন হিসেবে পেনাল্টি দিলেন রেফারি। আর এমন সুযোগ কি হেলায় হারানোর পাত্র ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো! পর্তুগিজ উইঙ্গারের অব্যর্থ শট এলচের জাল স্পর্শ করতে ভুল করেনি। ২-১ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে স্প্যানিশ জায়ান্টরা। রিয়ালের এমন জয় মেনে নিতে পারেনি এলচে।
রিয়াল তাদের চিরচেনা ছন্দময় ফুটবল উপহার দিয়ে জয় পেলে একটা কথা ছিল, কিন্তু এলচের বিরুদ্ধে এমন প্রশ্নবিদ্ধ জয় মনে হয় রিয়াল সমর্থকরাও চায়নি! এমন জয়ে মোটেও খুশি নন খোদ রিয়াল কোচ কার্লো আনচেলত্তিও। ম্যাচ শেষে তিনি বলেন, 'আমি মোটেই খুশি নই এমন জয়ে। আমাদের ভিন্নভাবে ভিন্ন কৌশলে খেলা উচিত ছিল। রোনালদোর গোলের পর আমরা দ্বিতীয়ার্ধে মোটেই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারিনি। আর সে কারণেই আমি ম্যাচ নিয়ে একেবারেই খুশি নই।
ফলাফল বড় কথা নয়, আমাদের অবশ্যই ভালো খেলতে হবে। এ ম্যাচে আমাদের চেয়ে অনেক ভালো খেলেছে এলচে। তাদের খেলার মধ্যে সমঝোতা ছিল এবং ম্যাচে সমতাটা তাদের প্রাপ্য ছিল। কারণ তারা দারুণভাবে ম্যাচ শেষ করেছিল। '
রেফারির কাছ থেকে এমন আচরণ মেনে নিতে না পেরে ম্যাচ শেষে চড়াও হয়েছিলেন এলচের খেলোয়াড়রা।
তাদের অভিযোগ অনেক। প্রথমার্ধেই তারা রেফারির পক্ষপাতিত্ব আচরণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। রিয়াল পয়েন্ট হারাচ্ছিল বলে রেফারি অতিরিক্ত সময় ইচ্ছা করেই দীর্ঘ করেছে। কেননা চতুর্থ রেফারি যেখানে ৩ মিনিট অতিরিক্ত সময়ের সংকতে দিলেন, সেখানে এলচের বিরুদ্ধে পেনাল্টির নির্দেশটা দেওয়া হয়েছে চতুর্থ মিনিটে। এখানেই শেষ নয়, এলচের স্ট্রাইকার কোরোকে স্পষ্টভাবে শরীর দিয়ে আটকে রাখার পরও সার্জিও রামোসকে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখাননি রেফারি।
এ ছাড়া আরও বেশ কয়েকটি পক্ষপাতিত্ব সিদ্ধান্ত দর্শকদের দৃষ্টি এড়ায়নি।
রিয়ালের জন্য দিনটি ভালো না গেলেও ক্রিস্টিয়ানো ছিলেন ছন্দে। পর্তুগিজ উইঙ্গার দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই দারুণ এক ফ্রি-কিক থেকে তার দলকে এগিয়ে দিয়েছিলেন। ৫১ মিনিটে ওই গোলের পরই মূলত ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় রিয়াল মাদ্রিদ। ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয় এলচে।
৯১ মিনিটে হেডের সাহায্যে এলচের পক্ষে সমতা ফেরান রিচমন্ড বোকে। তারপর শেষ মুহূর্তের সেই প্রশ্নবিদ্ধ গোলটি এসেছে রোনালদোর পা থেকেই। এ জয়ে ছয় ম্যাচে পাঁচটি জয় ও একটি ড্র নিয়ে রিয়াল ১৬ পয়েন্টসহ লিগ টেবিলের তৃতীয় স্থানেই রয়েছে। আর বার্সেলোনা ও অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদ ১৮ পয়েন্ট করে নিয়ে গোল ব্যবধানে প্রথম ও দ্বিতীয় অবস্থানে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।