আমি একজন পর্যটন কর্মী। বেড়াতে, বেড়ানোর উৎসাহ দিতে এবং বেড়ানোর আয়োজন করতে ভালোবাসি। পানির স্তর দ্রুত নেমে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে রাজধানীতে বিকল্প পানির উৎস খুঁজছে ওয়াসা। দ্রুত বেড়ে চলা নগরের মানুষের জন্য প্রতিদিন ২৩০ কোটি লিটার পানির চাহিদা থাকলেও ওয়াসা ২০৫ থেকে ২১০ কোটি লিটার পানির জোগান দিতে পারছে। গরমের মওসুমে এর পরিমাণ আরো কমে যাচ্ছে।
এ পানির জন্য ওয়াসাকে নির্ভর করতে হচ্ছে গভীর নলকূপ থেকে তোলা পানির ওপর। কিন্তু এভাবে চলতে থাকলে ভবিষ্যতে পানি সরবরাহ ঝুঁকির মধ্যে পড়বে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাখসিম এ খান বলছেন, তারা বর্তমানে ৮৭ শতাংশ পানি গভীর নলকূপ থেকে তুলছেন। কিন্তু বেশি দিন এর ওপর নির্ভর করলে ভবিষ্যতে পানিসঙ্কটে পড়বে ওয়াসা।
এ জন্য তারা বিকল্পের সন্ধান করছেন।
এখন ১৩ শতাংশ পানির জোগান দিচ্ছে সায়েদাবাদ ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট। যার পানি আসে মূলত শীতলক্ষ্যা ও বুড়িগঙ্গা নদী থেকে। কিন্তু সামনের দিকে এখানে নলকূপের ওপর থেকে তারা দৃষ্টি সরিয়ে বৃষ্টির পানির ওপর নজর দিয়েছেন।
তাখসিম এ খান জানান, গত বছর তারা পরীক্ষামূলক রাজধানীর সেগুনবাগিচা ও লালমাটিয়াতে ওয়াটার রিচার্জিংয়ের দুটো পাইলট প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছেন; যাতে তারা সফল হয়েছেন। এ সাফল্যকে তারা সামনে আরো গুরুত্বের সাথে নিচ্ছেন।
তিনি বলেন, ওয়াসা রাজধানীর ১০টি জায়গায় এখন ওয়াটার রিচার্জিং প্রজেক্ট বাস্তবায়ন করতে চায়। এ জন্য এলাকাও নির্ধারণ করা হয়েছে। রাজধানীর উত্তরা, মিরপুর, বনানী, গুলশান, খিলগাঁও, মতিঝিল, মোহাম্মদপুর ও গেন্ডারিয়াতে এসব ওয়াটার রিচার্জিং প্রজেক্ট বাস্তবায়ন করা হবে। এসব এলাকায় বৃষ্টির পানি ধরে রেখে ব্যবহার করলে যথেষ্ট সাশ্রয়ী হবে।
ওয়াসা সূত্র মতে, বৃষ্টির পানি দিয়ে বৃষ্টির মওসুমের বাইরে ও স্থানীয়ভাবে পানির জোগান দেয়া সম্ভব।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের হিসাবে রাজধানীতে বছরে ২ দশমিক ৫ থেকে ৩ দশমিক ৫ মিটার হারে পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে। তাদের মতে, এটি হচ্ছে মূলত গভীর নলকূপের মাধ্যমে বেশি পরিমাণে পানি উত্তোলনের কারণে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের ১৯৯১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, এ সময়ের মধ্যে ভূগর্ভের পানির স্তর সর্বোচ্চ ৫৩ মিটার পর্যন্ত নেমে গেছে। সর্বনিম্ন নেমেছে আট মিটার। তাদের হিসাবে রাজধানীর মিরপুর এলাকায় পানির স্তর নেমে গেছে ৫৩ দশমিক ৭৫ মিটার।
৩৭ দশমিক ৪ মিটার নেমে গেছে সবুজবাগে, মোহাম্মদপুরে নেমেছে ১৮ দশমিক ৫৯ মিটার, সূত্রাপুরে নেমেছে ৮ দশমিক ২২ মিটার ও ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় নেমেছে ১৪ দশমিক ১৪ মিটার।
পানির স্তর নেমে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে এবং রাজধানীতে ক্রমবর্ধমান চাহিদায় ওয়াসা রেইন ওয়াটারের পাশাপাশি আরো তিনটি ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট স্থাপন করতে যাচ্ছে। এগুলো স্থাপন করা হবে খিলক্ষেত, পাগলা ও সায়েদাবাদে। এর জন্য আরো অন্তত ১০ বছর লাগবে। তবে নতুন প্রজন্মের জন্য ঢাকায় পানিসঙ্কট কাটিয়ে উঠতে ওয়াসা সারফেস ওয়াটারের ওপরই সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছে বলে ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাখসিম এ খান জানান।
তিনি বলেন, বৃষ্টির পানি এ ক্ষেত্রে সর্বাধিক সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে। আমরা সে লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছি। এখান থেকে বাসাবাড়িতে ব্যবহারের পানির জোগান হতে পারে। অন্তত যে ছয় থেকে সাত মাস বৃষ্টি হয়, এ সময়ে আমরা একটি ভালো সাপোর্ট পেতে পারি।
বৃষ্টির পানি নিয়ে কাজ করছে বেসরকারি আন্তর্জাতিক সংস্থা ওয়াটার এইড।
এর দেশীয় প্রতিনিধি ডা: মো: খায়রুল ইসলাম বলেন, ওয়াসা যে উদ্যোগ নিচ্ছে, এটি খুবই ভালো। এটি পানির স্তর দ্রুত নেমে যাওয়া রোধ করবে, এটি এখন পরীক্ষিত। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।