এবার রাবিনোভিচ পর্বঃ
১।
একদিন অস্ফূটে বলেই ফেলল রাবিনোভিচ :
-- শালার অভিশপ্ত জীবন
সাদা পোশাকে কেজিবির লোক ছিল আশেপাশেই । খপ করে ধরল এবং বলল :
-- চলুন আপনাকে যেতে হবে আমার সঙ্গে ।
ভয়ে ফ্যাকাশে হয়ে গিয়ে তোতলাতে তোতলাতে রাবিনোভিচ বলে :
-- আমি তো খারাপ কিছু বলিনি । বলছিলাম পশ্চিমি পুঁজিবাদী দেশগুলোর অভিশপ্ত জীবনের কথা ।
-- আপনি বললেন আর আমি বিশ্বাস করলাম, এতটাই নিরেট নই আমি ? অভিশপ্ত জীবন কোথায়, তা ভালো করেই জানা আছে আমাদের । চলুন আমার সঙ্গে ।
২।
রাবিনোভিচকে প্রশ্ন করা হল:
-- জাতি হিসাবে ইহুদিরা এত আশাবাদী কেন ?
-- ইতিহাস আমাদের বাধ্য করেছে আশাবাদী হতে ।
-- কি রকম ?
-- যেমন ধরুন, মিশরের ফারাওরা যখন ছিল, ইহুদিরাও তখন ছিল ।
আজ ফারাওরা নেই । কিন্তু ইহুদিরা আছে । ছিল প্রাচীন গ্রীকরা, তখন ইহুদিরাও ছিল । প্রাচীন গ্রিকরা আজ নেই, কিন্তু ইহুদিরা আছে । ছিল রাশিয়ার জার, ছিল ইহুদিরা ।
আজ জার নেই, কিন্তু ইহুদিরা আছে । স্তালিন ছিল, ইহুদিরা ছিল । স্তালিন নেই, ইহুদিরা আছে । নাসের ছিল, ইহুদিরা ছিল । নাসের নেই, ইহুদিরা আছে ।
এখন আছে কমিউনিস্টরা, আছে ইহুদিরা ।
-- আপনি কি কিছু ইঙ্গিত করতে চাইছেন ?
-- মোটেও না । আমি শুধু বলতে চাই, আমরা ফাইনালে উঠেছি ।
৩।
কেজিবি অফিসে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে রাবিনোভিচকে ।
-- আমাদের কাছে খবর এসেছে, আপনি হিব্রু ভাষা শিখছেন । তার মানে ইজরায়েল যাওয়ার প্ল্যান আছে আপনার ।
-- মোটেও না । আমি ধর্মীয় গ্রন্থে পড়েছি, স্বর্গে হিব্রু ভাষায় কথা বলতে হবে ঈশ্বরের সঙ্গে । তাই হিব্রু ভাষাটা শিখে রাখছি ।
-- মৃত্যুর পর আপনি স্বর্গে যাবেন, এই ধারনা আপনার হল কোথা থেকে ?
-- তা নিশ্চিত করে বলতে পারি না ঠিকই । তবে নরকে যদি যেতেই হয়, তার জন্য রুশ ভাষাটা তো শেখাই আছে !
৪।
রাবিনোভিচ মারা যাওয়ার পর তাকে নরকে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হল । যমদূতদের কাছে সে তীব্র প্রতিবাদ জানাল । বলল :
-- সোভিয়েত দেশে এত বছর কাটানোর পরেও কি আমার স্বর্গে যাওয়ার সৌভাগ্য হতে পারে না ?
-- যে জীবন তুমি সোভিয়েত দেশে কাটিয়ে এসেছো, হে রাবিনোভিচ, যমদূত বলল, তারপর নরকই তোমার কাছে মনে হবে স্বর্গের মতো !
৫।
এক বস্তা রুবল নিয়ে গ্রাম থেকে রাবিনোভিচ এল মস্কো শহরে । শহরে পৌঁছে সে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেল । পুরনো রুবলের বদলে নতুন রুবল কোথায় দিচ্ছে, তার হদিশ অনেক জিজ্ঞাসা করেও কারও কাছ থেকে পেল না । ঘাড়ে ওই ভারি বস্তা নিয়ে এদিক ওদিক ছোটাছুটি করাও সম্ভব হচ্ছে না । তাই সে ফুটপাতে তার বস্তাটা রেখে নিজেই খোঁজ নিতে গেল কোথায় মুদ্রা বদলের কাউন্টার খোলা হয়েছে ।
সব জেনে ফিরে এসে দেখে তার রুবলগুলি সব ফুটপাতে গড়াগড়ি যাচ্ছে, আর বস্তাটা হাওয়া !
৬।
কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য নেওয়া হচ্ছে । তার জন্য চলছে ইন্টারভিউ ।
এমনই এক সাক্ষাৎকারে রাবিনোভিচের কথার বিবরন:
প্রশ্ন : তোমার মা কে ?
উত্তর : সোভিয়েত ইউনিয়ন ।
প্রশ্ন : তোমার বাবা কে ?
উত্তর : আমাদের মহান নেতা কমরেড স্তালিন ।
প্রশ্ন : তোমার সবচেয়ে কাঙ্খিত স্বপ্ন কী ?
উত্তর : অচিরেই পুরোপুরি অনাথ হয়ে যাওয়া । (!)
৭।
রাবিনোভিচ নতুন গায়ক। স্টেজে গান গাইতে ওঠার আগেই নিশ্চিত ছিল, নিজের সাফল্য সম্পর্কে । সে ভেবে রেখেছিল : প্রথম গানের পর যদি হাততালি না পড়ে তাহলে লেনিনের উপর গান গাইব ।
তারপরেও যদি হাততালি না দেয় শ্রোতারা, তাহলে গাইব স্তালিনের উপর গান । দেখব, তখন হাততালি না দিয়ে তারা যায় কোথায়....
কোথায় আবার ? কেজিবির দপ্তরে !
৮।
রাবিনোভিচদের যৌথ খামারে জুতোর সরবরাহ এসেছে মাত্র একজোড়া । সেই জুতো জোড়া কাকে দেওয়া হবে তা নিয়ে মিটিং চলছে । অনেকে দীর্ঘ বক্তৃতা দিলেন ।
সবার শেষে উঠলেন যৌথ খামারের ডিরেক্টর । তিনি বললেন : আমি প্রস্তাব করছি, জুতোজোড়া আমাকে দিয়ে দেওয়া হোক । এই প্রস্তাবের পক্ষে যারা, তাঁরা চুপ করে বসে থাকুন । আর সোভিয়েত শাসনব্যবস্থার বিপক্ষে যাঁরা, তাঁরা হাত তুলুন !
৯।
রাবিনোভিচের ছেলে প্রশ্ন করছে বাবাকে :
-- বাবা এখন কি দেশে কমিউনিজম ? না কি, অবস্থা আরও খারাপ হবে
আগের পর্ব দেখতে পারেনঃ
কমিউনিস্ট জোক্স কালেকশান ৩
কমিউনিস্ট জোক্স কালেকশান ২
কমিউনিস্ট জোক্স কালেকশান ১ ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।