শুভ জাহিদ @ http://howcanigetanemailaddress.com/ যারা বলে যে অজ্ঞ ব্যক্তিরা পরকালে নাজাত পাবে না তাদের দলিল?
প্রশ্ন (৬) ঃরসূল (দ.) আদী বিন হাতীম (রা.) খ্রিষ্টান থাকা অবস্থায় যখন তাঁর গলায় ক্রুশ দেখলেন তখন কুরআনের আয়াত পড়লেন-
“তারা তাদের আলিম ও দরবেশদের রব বানিয়ে নিয়েছে। ” (সূরা তওবা, ৯/৩১) তখন আদী বিন হাতীম (রা.) বললেন-
“আমরা আমাদের আলিমদের ইবাদাত করিনা। ” রসূল (দ.) বললেন, “তোমাদের আলিমরা হারামকে হালাল বললে মানতে না আর হালালকে হারাম বললে মানতে না? ” তিনি বললেন, “হ্যাঁ, মানতাম। ” রসূল (দ.) বললেন “ঐভাবেই তোমরা তাদের ইবাদাত করেছ। ” (হাসান, তিরমিযি, ৩০৯৫, মুসনাদে আহমাদ)
এই আয়াত এবং হাদিসটিকে গভীরভাবে লক্ষ্য করুন।
যখন আল্লাহ্ বললেন তারা (খৃষ্টানরা) তাদের আলিম ও দরবেশদের রব বানিয়ে নিয়েছে। তখন আদি বিন হাতিম (রা.) বুঝলেন না কিভাবে তারা তাদের আলিম ও দরবেশদের রব বানিয়েছেন। যখন রসূলুল্লাহ্ (দ.) বুঝিয়ে দিলেন তখন আদি বিন হাতিম (রা.) বুঝলেন তারা অজান্তেই তাদের আলিম ও দরবেশদের রব বানিয়েছেন।
অতএব, তারা অজ্ঞ থাকার পরেও এত বড় অপরাধ অর্থাৎ রব বানিয়ে শিরক্ করার কারণে আল্লাহ্ তাদেরকে পাকড়াও করবেন বলেই এই আয়াত দ্বারা প্রতীয়মাণ হয়। তাহলে বুঝা গেল অজ্ঞ থাকাও অপরাধ।
তাই অজ্ঞতার মাস’আলা ইসলামে গ্রহণযোগ্য নয়।
উত্তর ঃ
এই বুঝটি সঠিক নয়। এই আয়াত এবং হাদিসে এত বড় অপরাধ অর্থাৎ আলিম ও দরবেশদের রব বানিয়ে শিরক্ করার কারণে তাদেরকে শাস্তি দিবেন এ কথা আল্লাহ্ বলেননি। তবে হ্যাঁ হয়তো বা একথা ভাবতে পারেন যে, এখানে বলেননি তাতে কি হয়েছে। শিরকের ভয়াবহ পরিণতি সম্পর্কে আল্লাহ্ তো অন্য আয়াতে বলেছেন।
এ কথার উত্তররে বলা হবে, র্শিকের ভয়বহ পলিণতি তার জন্যে হবে যে জেনে-বুঝে র্শিক করেছে। আর যে না জেনে র্শিক করেছে তার কোনো শাস্তি নেই।
মহান আল্লাহ্ বলেন,
“ভুলক্রমে কোন অপরাধ করলে তোমাদের কোন দোষ নেই। ” (সূরা আহযাব, ৩৩ ঃ ৫)
এই আয়াত অনুযায়ী যে ব্যক্তি না জেনে কোন কুফরী কাজ করে তাকে আল্লাহ ধরবেন না। সেই ব্যক্তিকে তো কাফির বলার প্রশ্নই আসে না।
মহান আল্লাহ্ বলেন,
“আর যে কেউ রসূলের বিরুদ্ধাচরণ করে তার কাছে সত্যপথ সুস্পষ্ট হবার পরে, আর অনুসরণ করে মু‘মিনদের পথ ছেড়ে ভিন্ন পথ, আমি তাকে ফেরাবো সেই দিকে যে দিকে সে ফিরেছে, আর তাকে প্রবেশ করাবো জাহান্নামে, আর মন্দ সেই আবাসস্থল”। -সূরা নিসা ৪ ঃ ১১৫
এই আয়াতে আল্লাহ দু’টি কারণে জাহান্নামী হবার কারণ বলেছেন।
(ক) সত্যপথ প্রকাশিত হওয়ার পরে রসূলের বিরুদ্ধাচারণ করা।
(খ) সত্যপথ প্রকাশিত হওয়ার পরে মু’মিনদের পথ ছেড়ে ভিন্ন পথে চলা।
আয়াতটি থেকে আরও বুঝা গেল, কারও কাছে সত্য পথ প্রকাশ না পাওয়া পর্যন্ত তার কর্মের জন্য আল্লাহ তাকে ধরবেন না।
কারণ জাহান্নামে দেয়া হবে সত্য পথ প্রকাশের পর।
মহান আল্লাহ্ বলেন,
“রসূলগণকে সু-সংবাদদাতা ও ভীতি প্রদর্শনকারী হিসেবে (পাঠানোর উদ্দেশ্য হচ্ছে) যাতে করে রসূলদের আগমণের পর আল্লাহ্’র বিরুদ্ধে মানুষের অযুহাতের কোনো সুযোগ না থাকে। ” -সূরা নিসা, ৪/১৬৫
এই আয়াত থেকে বুঝা যায় রসূল না পাঠালে আল্লাহ্’র বান্দাগণ আল্লাহ’র কাছে যুক্তি পেশ করবে যে, হে আল্লাহ্ আমি সঠিক কথা জানতাম না। আর এই অযুহাত যুক্তিসংগত হবে বিধায় বান্দারা যাতে করে কোনো অযুহাত না দেখাতে পারে এজন্যই আল্লাহ্ রসূলগণকে পাঠিয়েছেন। এ আয়াতটি থেকে আরো বুঝা যায় যে, রসূলগণকে না পাঠালে বান্দারা সঠিক কথা না জানার কারণে অজ্ঞ থেকে যাবে।
আর এই অজ্ঞতাই বান্দারা অযুহাত হিসেবে পেশ করবে। যা কি’না আল্লাহ্ গ্রহণ করাটা যুক্তিসংগত হবে। কারণ আল্লাহ্ হচ্ছেন ন্যায় বিচারক। তাই আল্লাহ্ এই অজ্ঞতার অযুহাত রসূল পাঠানোর মাধ্যমে বন্ধ করে দিয়েছেন।
বুঝা গেল যে, অজ্ঞতা আল্লাহ্’র কাছে গ্রহণযোগ্য হবে।
অর্থাৎ যে ব্যক্তি অজ্ঞ থাকবে তাকে আল্লাহ্ শাস্তি দিবেন না। অতএব, প্রশ্নকারীর উল্লেখিত আয়াত এবং হাদিসে যে শিরকের কথা বলা হয়েছে তা না জেনে করার কারণে তা আল্লাহ্’র কাছে ক্ষমারযোগ্য। একটি বিষয় বিশেষভাবে লক্ষ্যনীয় যে, আদি বিন হাতি (রা.) ঐ র্শিক সম্পর্কে অজ্ঞ ছিল বলে, সমগ্র খৃষ্টান সমাজই অজ্ঞ ছিল এই দাবী করা ঠিক হবে না। তাই যে সকল খৃষ্টান ঐ র্শিক সম্পর্কে অবগত থাকার পরও তা থেকে বিরত হয়নি, সে সকল খৃষ্টান আল্লাহ্’র কাছে ক্ষমা পাবে না।
=============================================
বইয়ের নাম: "কাফির বলার প্রয়োজনীয়তা ও নিয়ম"
লেখক: মুহাম্মদ ইকবাল বিন ফাখরুল
এই প্রথম বারের মতো কাফির বলা নিয়ে কোন বই প্রকাশ পেতে যাচ্ছে।
বইটি কিনতে ও পড়তে হবে। বইটি পড়লে জানতে পারবেন-
=> কাফিরকে কেন কাফের বলতে হবে?
=> কাফিরকে কাফির না বলে গোপন করলে তার পরিণতি কি?
=> কোন মুসলিমকে কাফির বললে তার পরিণতি?
=> ঢালাওভাবে কাফির বলা থেকে কেন বিরত থাকতে হবে?
=> কাফির বলা নিয়ে আলেমদের মধ্যে যে সকল মতবিরোধ হয়েছে তা সমাধানের জন্য।
প্রাপ্তি স্থান: ১. আল্লামা আলীমুদ্দিন একাডেমী, ৯০ হাজী আব্দুল্লাহ সরকার লেন, বংশাল, ঢাকা। তাওহীদ পাবলিকেশন্স এর পাশের দোকান।
২. হুসাইন আল মাদানী প্রকাশনী, ৩৮ বংশাল নতুন সড়ক, ঢাকা।
অথবা ফোন করুন এই নম্বরে-০১৬৮১-৫৭৯৮৯৮। সম্ভব হলে আমরা হাতে হাতে বই সরবরাহ করব। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।