কুরআনুল কারীমে মহান আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, "নিঃসন্দেহে আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য দ্বীন হচ্ছে একমাত্র ইসলাম" (আল-ইমরান-১৯)। ইসলাম প্রকৃতপক্ষে সেই আন্দোলনের নাম যা পৌত্তলিকতা ও জাহিলিয়াতের সকল ধ্যান ধারণার মূলোৎপাটন করে তাওহীদের আলোকে এক নতুন বিজ্ঞানসম্মত সমাজ ব্যবস্থা কায়েম করতে চায়। মানব রচিত সকল মতবাদের প্রাসাদ ভেঙ্গে আল্লাহর একত্ববাদের ভিত্তিতে আদর্শ জাতি-রাষ্ট্র গঠন করাই এর মৌলিক কাজ। ইসলাম নিছক কোন ধর্ম বা মতবাদের নাম নয়। ইসলাম সকল মানুষের, সকল জাতির, সর্বকালের একমাত্র গ্রহণযোগ্য ও পূজনীয় জীবনদর্শন।
ইসলাম কোন ব্যক্তি কেন্দ্রিক জীবন আদর্শ নয়। এটা স্বয়ং মহান রাব্বুল আলামীন কর্তৃক মনোনীত জীবন ব্যবস্থা। মহান আল্লাহ তায়ালাই উভয় জগতের কল্যাণ ও কামিয়াবির জন্য মানব জাতির জন্য ইসলামকে নিয়ামতস্বরূপ দিয়েছেন। আর পৃথিবীর বুকে আদি মানব হযরত আদম (আঃ)- এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। আল্লাহ প্রেরিত নবী-রাসূলগণ মানুষের হিদায়াতের জন্য এ ইসলামের পথেই আহ্বান জানিয়েছেন।
হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) হলেন তাঁদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ।
আমরা জানি- ইঞ্জিন যিনি তৈরী করেন, একে সচল রাখার জন্যও তিনি দকিনির্দেশনা সম্বলিত গাইডলাইন তথা ক্যাটালগ দিয়ে থাকেন। তদ্রুপ সৃষ্টিকর্তাও মানুষ সৃষ্টি করে তার জন্য সত্য ও সঠিক পথনির্দেশনা বাতলে দিয়েছেন; সেই পথই হল ইসলাম। আর এ সহজ, সরল পথে চলার জন্য যে বিধান দরকার তাও তিনি মহানবী (সাঃ) এর মাধ্যমে নাযিল করেছেন আল-কুরআন। জীবনের প্রতিটি দিক ও বিভাগ সম্পর্কে সুস্পষ্ট রূপরেখা প্রদান করেছে এ মহাগ্রন্থ আল-কুরআন।
মানব জীবনের সাথে সংশ্লিষ্ট সবকিছুরই অপূর্ব সন্নিবেশ ঘটেছে আল-কুরআন মজিদে। মানুষ, জাতি, সম্প্রদায়, রাষ্ট্র, দর্শন, সংস্কৃতি, ধর্মবিশ্বাস সম্পর্কে কুরআনের বক্তব্য সকল যুগের, সকল সময়ে জন্য প্রযোজ্য।
ইসলাম চির প্রগতিশীল ও চির আধুনিক ধর্ম। ধর্মীয় গোড়ামী, ধর্মান্ধতা, কুসংস্কার, ঈর্ষাকাতরতা, সাম্প্রদায়িকতা, মৌলবাদী সন্ত্রাস, জঙ্গীপনা, প্রতিক্রিয়াশীলতাকে ইসলাম কখনও প্রশ্রয় দেয় না। ইসলাম শান্তি ও সৌহার্দের ধর্ম।
বস্তুবাদ ও আধ্যাত্মবাদের মধ্যে সমন্বয় সাধনের পাশাপাশি ইহকাল ও পরকালের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করেছে ইসলাম।
তাই এ সুন্দর পৃথিবীটাকে মনের মত করে গড়তে হলে ইসলামের বিকল্প নেই। একমাত্র ইসলামই ইহুদী, খ্রীষ্টান, হিন্দু, বৌদ্ধ, মুসলিমসহ সকল ধর্ম, বর্ণ, শ্রেণী, সম্প্রদায়ের মানুষকে সাম্য ও মৈত্রীর বন্ধনে আবদ্ধ করতে পারে। মহানবী (সাঃ) এর প্রচেষ্টায় ৭ম শতাব্দীতে মদীনাকে কেন্দ্র করে এমনি এক সমাজ ও রাষ্ট্র ব্যবস্থা গড়ে উঠেছিল। সে সমাজে ছিল না কোন অন্যায়, অবিচার, অনাচার, হিংসা, বিদ্বেষ।
ক্রীতদাস, সংখ্যালঘু থেকে শুরু করে নারী, শিশুসহ সকল মানুষ সেখানে খুঁজে পেয়েছিল কাঙ্খিত সুখের ঠিকানা। যাকাত, ভিক্ষা, দান-খয়রাত নেয়ার মত কোন লোক খুঁজে পাওয়া যায়নি সে সমাজে। পৃথিবীর ইতিহাসে ইসলাম ছাড়া অন্য কোন মতাদর্শ এমন সুষম, সুশৃংখল, সুবিন্যস্ত, সুনিয়ন্ত্রিত সমাজ ও রাষ্ট্রব্যবস্থা উপহার দিতে পারেনি বিশ্ব মানবতাকে। তাই দেখা যায়, ইসলামের সুশীতল ছায়াতলেই লুকায়িত আছে প্রকৃত শান্তি। ইসলামের মধ্যেই মানুষের ইহকালীন শান্তি ও আখিরাতের মুক্তির মূলমন্ত্র নিহিত।
এটাই হলো ইসলামের প্রকৃত রূপ। তাই আসুন ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা আমাদের জীবনের প্রতিটি দিক ও বিভাগে অনুসরণ করি। আল্লাহ আমাদের সহায় হোন। আমিন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।