তুমি যদি প্রতিটি দিন এটা ভেবে পার কর যে আজই তোমার জীবনের শেষ দিন, তাহলে একদিন তুমি সত্যি সঠিক হবে। চলচ্চিত্র-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের তথ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক, প্রধানমন্ত্রী বরাবর চিঠি, চলচ্চিত্র বয়কটের ঘোষণা—কোনোকিছুই থামাতে পারল না হিন্দি ছবির বাংলাদেশে প্রবেশকে। এ মাসেই আসছে আমদানি করা বলিউডের নয়টি ব্লকবাস্টার ছবি। শিল্পী-নির্মাতাদের বাধা এবং আন্দোলনকে তোয়াক্কা না করেই বলিউডের এই ছবিগুলো বাংলাদেশের প্রেক্ষাগৃহে আনা হচ্ছে বলে জানা গেছে। আজ মঙ্গলবার প্রথম আলো ডটকমের সঙ্গে আলাপকালে বলিউডের নয়টি ছবির বাংলাদেশের আসার ব্যাপারে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে বলে জানান বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মিয়া আলাউদ্দিন।
আমদানি করা নয়টি হিন্দি ছবি হচ্ছে ‘শোলে’, ‘কাভি খুশি কাভি গাম’, ‘ডন’, ‘ওয়ান্টেড’, ‘থ্রি ইডিয়টস’, ‘তারে জামিন পার’, ‘দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে’, ‘দিলতো পাগল হ্যায়’ ও ‘কুচ কুচ হোতা হ্যায়। ’
প্রথম আলো ডটকমকে মিয়া আলাউদ্দিন আরও বলেন, ‘২০১০ সালের জানুয়ারিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিয়ে ভারতীয় ১২টি চলচ্চিত্র আমদানির জন্য এলসি খোলা হয়। এর মধ্যে হিন্দি নয়টি ও বাংলা তিনটি চলচ্চিত্র রয়েছে। গত বছর তিনটি বাংলা চলচ্চিত্র এসে পৌঁছেছে। এগুলো হচ্ছে ‘জোর’, ‘বদলা’ ও ‘সংগ্রাম’।
‘জোর’ ও ‘বদলা’ এরই মধ্যে মুক্তি পেয়েছে। আর ১৫ জুন মুক্তি পাচ্ছে হরনাথ চক্রবর্তী পরিচালিত সংগ্রাম ছবিটি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জোর ও বদলা ছবি দুটি প্রেক্ষাগৃহে একেবারেই দর্শক টানতে পারেনি। সংগ্রামের ব্যাপারেও খুব আশাবাদী হওয়া যাচ্ছে না। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মিয়া আলাউদ্দিন বলেন, ‘প্রেক্ষাগৃহে দর্শক টানতে না পারলেও কিন্তু ছবিগুলো যে পরিমাণ ব্যবসা করেছে, তাতে আমরা সন্তুষ্ট।
আমাদের বিশ্বাস, আগের ছবি দুটির চেয়ে সংগ্রাম ছবিটি দর্শক বেশি উপভোগ করবেন। ছবির গল্প ও অন্যান্য উপকরণ আমাদের দেশীয় চলচ্চিত্রের মতোই। ফলে প্রেক্ষাগৃহে গিয়ে দর্শকদের মনে হবে তাঁরা দেশীয় ছবিই দেখছেন। ’
বলিউডের ছবিগুলোর ব্যাপারে মিয়া আলাউদ্দীন বলেন, ‘এ মাসের শেষ দিকেই নয়টি হিন্দি ছবি বাংলাদেশে এসে পৌঁছবে। এরপর আমরা ছবিগুলো সেন্সর ছাড়পত্রের জন্য জমা দেব।
তারপর সময় সুযোগমতো ছবিগুলো বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি দেওয়া হবে। দেশীয় চলচ্চিত্রের যাতে ক্ষতি না হয়, সেদিকে লক্ষ রেখে চলচ্চিত্রগুলো আমদানি করা হয়েছে। ভারতীয় ছবি বাংলাদেশের প্রেক্ষাগৃহে প্রদর্শনের প্রক্রিয়া হিসেবে গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর মুক্তি পায় জিত্ অভিনীত ‘জোর’ এবং এরপর এ বছরের ২০ জানুয়ারি মুক্তি পায় প্রসেনজিত্ অভিনীত ‘বদলা’ ছবিটি।
উল্লেখ্য, স্বাধীনতার পরপরই তত্কালীন সরকার বাংলাদেশি চলচ্চিত্রশিল্পকে বাঁচাতে ভারতীয় চলচ্চিত্র আমদানি নিষিদ্ধ করে। ১৯৭২ সালে এক অধ্যাদেশের মাধ্যমে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
কিন্তু ২০১০ সালের জানুয়ারি মাসে বাংলাদেশ সরকার ভারতীয় ছবি আমদানি ও প্রেক্ষাগৃহে প্রদর্শনের অনুমতি প্রদানের সিদ্ধান্ত নেয় এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আমদানি নীতিমালা থেকে এ-সংক্রান্ত বিধিনিষেধ তুলে নেয়। কিন্তু দেশীয় চলচ্চিত্রের পরিচালক-প্রযোজক ও শিল্পী-কলাকুশলীদের আন্দোলনের মুখে সরকার ভারতীয় ছবি আমদানির ওপর পুনরায় বিধিনিষেধ আরোপ করে। সরকারের এই নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে আমদানিকারক ও প্রদর্শকেরা উচ্চ আদালতে রিট আবেদন জানান। আদালতের নির্দেশে উল্লিখিত সময়ে যেসব ছবি আমদানির জন্য এলসি খোলা হয়, সেসব ছবিকে চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড ও তথ্য মন্ত্রণালয় অনাপত্তিপত্র দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে জোর, সংগ্রাম, বদলাসহ বলিউডের নয়টি চলচ্চিত্র আমদানি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সুত্র: প্রথম আলো ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।