নতুনদিনের মিছিলে,একজন বেয়নেটধারী সৈনিক মাঝে মাঝে রাতগুলো বিষন্নতার আড়ালে নিজেকে লুকিয়ে রাখে। রাতজাগা সবাই যেনো এক একটি নিষিদ্ধ বিষণ্ণ নগরীর প্রহরী। একা একা এই দীর্ঘরাতগুলো কিছুতেই কাটতে চায়না। আমার মতো আরোকিছু দুঃখবোনা মানুষের কারনে রাতগুলো পেরিয়ে কখন যে ভোর হয়ে যায়, টের পাইনা। আমাদের একটা মজার খেলা আছে, ফেসবুকে।
আমরা কবিতা কবিতা খেলি। সেইসব কবিতা মাঝে মাঝে ১৮+ কেও হার মানায়। আবার মাঝে মাঝে কাউকে আক্রমন করে কবিতা লেখা হয়। যাকে আক্রমন করা হয়, তার ঠোঁটেও প্রশ্রয়ের হাসি থাকে। আগে এই কবিতার খেলায় রিয়েল ডেমন, নীরব ০০৯ থাকতেন।
এখন তারা ব্যাস্ত। তাই কম আসেন। তবু কিছু রাত আলাদা থাকে। সবাই একযোগে ঝাঁপিয়ে পড়ে কবিতা কবিতা খেলায়। কবিতাগুলো প্রায়শয় দুঃখমোড়া থাকে।
গতকাল রাতে ব্লগার নোমান নমি ভাই বললেন, চলেন আজকে সুখের কবিতা লিখবো। রাজি হয়ে গেলাম। ডাকলাম কামরুল হাসান শািহ ভাইকে (যদিও উনি উনার স্বভাবজাত ফাঁকিবাজি বেশ ভালোই দেখিয়েছেন) শুরু হলো কবিতা কবিতা খেলা-
নোমান নমিঃ
বৃষ্টির কি অঝোর মিছিল
টুপটাপ স্লোগানে শোনাচ্ছে
শুভ্রতার গান
ভিজে গিয়ে পৃথিবী
খুঁজছে বেঁচে উঠার সিড়ি।
নিশাচর ভবঘুরেঃ
বৃষ্টির প্রতিটি ফোঁটা
তোমার কালোচুল বেয়ে নামুক
লাল টিপের কপাল বেয়ে
তোমার গোলাপী ঠোঁটে গিয়ে থামুক।
নোমান নমিঃ
আগুন জ্বলেনি এমন কথা বলবো না
আগুনের হুংকারে পুড়েছিলো মনযন্ত্র
এবার তবে আগুন পোড়ার পালা
শ্মমানে চাপা দিয়েছি মরণ অশ্রু।
নিশাচর ভবঘুরেঃ
আগুনে এঁকেছি এক
কিশোরীর অবয়ব
ধোঁয়াটে অথচ, বেড়ে উঠছে
উঠোনের লতানো গাছটার মতো।
কামরুল ভাইঃ
বৃষ্টিতে ভিজে পেয়ারা গাছে জাগে নতুন পাতা
আর প্রেমের তরে কাউয়া ব্যাটার নষ্ট মাথা।
নোমান নমিঃ
পাখীরা পাখীদের আকাশে নাচে
আমার নৃত্যকলা মন বাঁদারে
মিছিল শেষে মশালটা বিশ্রামে
আগুন তখন পাখীদের শরীরে।
পাখীরা তখন এক ঝাঁক সুখ ডানায় উড়ন্ত
পাখী সমাজের বিজ্ঞান ভিত্তিক পাঠে
আমার স্রোত নদী যৌবনা দুরন্ত।
নিশাচর ভবঘুরেঃ
গাছের পাতার আড়ালে যে
শালিক ঘুমিয়েছিলো
বৃষ্টি এসে হঠাৎ
তাকে চমকে দিলো।
নোমান নমিঃ
কষ্ট পেলে নাকি মনের মসজিদ মন্দির ভেঙ্গে যায়
নাস্তিকের মনে আবার মসজিদ মন্দির কি?
নিশাচর ভবঘুরেঃ
অন্ধকারে নিজের অবয়বের সাথে
পুরানো ঐতিহাসিক খেলা খেলি
নিজের ছায়াকে মুকুট পরিয়ে দেই
ঘরের প্রতিটি আসবাব তখন
আমার মন্ত্রী-উজির, সৈন্য।
নোমান নমিঃ
আগামি শীতের আগে তোমার সিগ্যনাল আমি ঠিকই বুঝে নিবো
পাখীদের ঠোঁটের চুম্বন ব্রেক কষবে তোমার ঠোঁট।
ব্যারিকেডে একখান স্টেনগান দেখবে
ম্যাগজিন ভরা থাকবে চুমুর বুলেট।
নিশাচর ভবঘুরেঃ
বিবর্তনের ধারায় আমিও
যখন নিজেকে প্রেমিক পুরুষ ভাবতে শিখেছি
পকেটে তখনো কিছু ছেঁড়া বাসটিকেট
আর তোমার লেখা চিরকুট
যেখানে ভালোবাসি শব্দটির উপরে
গাঢ় চুম্বনের দাগ।
কামরুল ভাইঃ
সন্ধ্যা শেষের বন্ধ্যা রাত্রিরা
আমাকে কখনও কিছুই দেয়নি
না কোন নতুন স্বপ্ন
না নতুন কোন ভোর
তোর বর্ণচোরা ভালবাসার স্মৃতি নিয়ে
বন্ধ্যা রাত্রির সাথে আমার দীর্ঘ সহবাস।
নোমান নমিঃ
এ শহরে ল্যাম্পপোষ্ট ভিজে যায়
আলুহীন মাছের ঝোল বিষাদ
শাহাবাগের চুড়ি খালার রঙীন চুড়ি
রিকশার জ্যামে দুঃখ খুজিঁ।
ছবির হাঁটের পুরোন তেলে ভাজা বেগুনী
গুড়ের চায়ে দিই দম
বেনসনে ইচ্ছেমতন কামনা
এত সুখ কোমল নরম।
এ শহরে বেলী ফুলে মালা হয়
শোভা পায় শাড়ী সুন্দরীর হাঁতে
বলতে ইচ্ছা হয় "হাতে নয়
গলাতেই বাঁধ"
নিশাচর ভবঘুরেঃ
মেয়ে, চোখে চোখ রাখো
তোমার চোখ থেকে মুছে দেই
বিষোন্নতার কাজলরেখা
বিধাতার কাছে নরম আলোর এক
সূর্য্যোদয়ের আবেদন করেছি
আবেদন মঞ্জুর হলেই
দুজনে সূর্য্যস্নানে যাবো।
কামরুল ভাইঃ
শেষ বিকেলের আলোয়
তোর গালের গোলাপী আভায়
আমার অপার্থিব সুখ।
নোমান নমিঃ
কি অবাক
হাসলেও তোমার ঠোঁট সুন্দর
কাঁদলেও?
তুমিতো উভয়চর।
আমি হয়ে যাই ঠোঁট গুপ্তচর।
নিশাচর ভবঘুরেঃ
শেষ বিকেলের হলদে আলোয় দেখা
তোমাকে, তোমার বাসন্তি রাঙ্গা শাড়িতে
গায়ে হলুদের আসর থেকে পালিয়ে আসা
পুরানো প্রেমিকা মনে হয়েছিলো।
নোমান নমিঃ
নোটিশ বোর্ডে ঝুলিয়েছ ভালোবাসার হস্তরেখা
বিষাদি সকালের পড়েছে প্রথম ঘন্টা
রনাঙ্গন থেকে এক পতাকা সুখ নিয়ে এসেছি
কিনিনি অর্জন করেছি রক্ত আবেগে।
মানচিত্রসম এক আয়তন সুখ
রাষ্ট্রপ্রধানের মাথা এবার হেট হবে
সে বলেছিলে "ব্যার্থ হবে"
প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার কাছাকাছি সুখ।
নগর পিতার আসনের সমান সুখ।
নোটিশ বোর্ডে আবার ভালোবাসার হস্তরেখা ঝুলাও
সুখী সকালে একের পর এক ঘন্টা পড়ুক।
পত পত করে উড়ুক সুখী পতাকা।
কামরুল ভাইঃ
দৃষ্টি সীমায় তোর কম্পিত ঠোঁট,
তীব্র হৃদস্পন্দনে কিংবা কামনায়।
নোমান নমিঃ
তুমি সার্বভৌম রাষ্ট্র
তোমার ঠোঁটে চুমু খেয়ছি বলে
"রাষ্ট্র দ্রোহিতার মামলা করতে পারবে না"
কেবল বুনো একটি কামড় দিতে পার।
কামরুল ভাইঃ
কিছু জয় করতে তো ভালবাসিনি
নিজেকে হারাতেই শুধু ভালবাসায় ভেসেছি।
নোমান নমিঃ
সুখ পাখীদের দেশে
কাকের কর্কশ কান্না
স্বর্গ তখন শরৎফুলের বনে
ছোট্ট করে ম্যাগপাইয়ের স্বপ্ন রান্না। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।