আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রোকেয়া: বেবি মওদুদের লেখায়-পর্ব ৩

রোকেয়ার শিক্ষার্জন হয়েছিল বড় ভাই ও বোনের কাছে। বিয়ের পর স্বামীর কাছে। সেই সঙ্গে ছিল তাঁর নিজের আগ্রহ এবং আন্তরিকতা। তিনি ছিলেন স্ব-মেধায় শিক্ষিত। শুধু মাত্র বাংলা নয়, ইংরেজী ভাষাও ছিল তার করায়াত্ত।

উর্দু, ফারসী, হিন্দি ও আরবী ভাষা-সাহিত্যের ওপরও ভালো দখল ছিল। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ছিল না। কিন্তু তার জ্ঞানের সাধনা ও সাহিত্য রচনা দেখে কি নূন্যতম সন্দেহ জাগে যে, রোকেয়া ছিলেন স্ব-শিক্ষিত। স্ব-শিক্ষা মানুষকে উন্নত করে, তাঁর যদি মেধা থাকে, মননের চর্চা থাকে-তাহলে সে সমাজের বুদ্ধিজীবীর তালিকায় উঠে আসে। তাঁর কল্যাণ ধর্ম, মানবিক চিন্তা-ভাবনা, সংস্কারধর্মী কর্মকান্ড তাকে শ্রেষ্ঠত্বের আসনে নিয়ে বসায়।

তিনি হয়ে ওঠেন সমাজের বিবেক, যুগের প্রতিনিধি, কালের কণ্ঠ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ, বিদ্রোহী কবি নজরুল-শেরে বাংলা ফজলুল হকের মতো মহিয়সী রোকেয়াও বিবিসি শ্রোতা জরীপে শ্রেষ্ট বাঙালির মর্যাদায় অধিষ্টিত হতে পেরেছেন। রোকেয়ার জীবনের অভিজ্ঞতাই তাঁকে সমৃদ্ধ করেছে। সেই অভিজ্ঞতার প্রথম আবেদনটি ছিল নারীর স্বাধীনতা। এই স্বাধীনতা অর্জনের জন্য তিনি নিজেকে স্ব-শিক্ষায় শিক্ষিত করেছেন।

তারপর লেখনী ধরেছেন। অবরোধবাসিনী হয়েও অবরোধের বেড়াজাল ভাঙতে সমাজকে জাগতে আহ্বান করেছেন, ধর্মের নামে শোষণের বিরুদ্ধে কঠোর বক্তব্য দিয়েছেন এবং সঙ্গে সঙ্গে নারীকেও জাগরণী বাণী শুনিয়েছেন। তার কথাগুলো আমরা দেখি, ‘ধর্মই আমাদের দাসত্ব বন্ধন দৃঢ় হইতে দৃঢ়তর করিয়াছে, ধর্মের দোহাই দিয়া পুরুষ রমনীর উপর প্রভুত্ব করিতেছেন। ’ ‘জীবনটাকে শুধু রান্নাঘরেই সীমাবদ্ধ রাখা উচিৎ নহে। ’ ‘কন্যা পণ্যদ্রব্য নহে যে, তাহার সঙ্গে মোটরগাড়ি ও তেতলা বাড়ি ফাউ দিতে হইবে’ ‘আমি সমাজকে দেখাইতে চাই, একমাত্র বিবাহিত জীবনই নারীজন্মের চরম লক্ষ্য নহে, সংসার ধর্মই জীবনের সারধর্ম নহে।

’ ‘যাহা হউক, মাতা, ভগিনী, কন্যে! আর ঘুমাইও না—উঠ, কর্তব্য পথে অগ্রসর হও। ’ ( রোকেয়া রচনাবলী থেকে) উপরের উল্লেখিত পবিত্র রোকেয়া পাঠ থেকে আমরা উপলব্ধি করতে পারি রোকেয়ার কঠোরতা। সমাজকে তিনি ঘষে ঘষে জাগাতে চেয়েছেন। নারীর অসহায়ত্বকে তিনি চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়েছেন। ধর্মের নামে নারীর ওপর শোষণ, পুরুষশাসিত সমাজ ব্যবস্থার কুফল।

নারীর অসহায়ত্ব ও দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে তাকে ক্রীতদাসী করেছে, তার একাকীত্বের সুযোগে ‘পতিতা’ করে সমাজচ্যূত করেছে, তার সৌন্দর্য ও শিল্পকলার সুবিধা দিয়ে তাকে ভোগ করেছে এবং কলঙ্কিত করে রেখেছে। নারীকে কখনও মানুষ হিসেবে বিবেচনা করেনি—তার ব্যক্তিত্বকে মর্যাদা দেয়নি। রোকেয়াই প্রথম বলেছেন, নারী মানুষ। নারীরও অধিকার আছে। শারীরিক ও মানসিক শক্তি বিকাশের জন্য তার শিক্ষা অর্জনের অধিকার আছে।

চাকরি বা ব্যবসা করে অর্থোপার্জনের অধিকার আছে। সৃজনশীল প্রতিভার বিকাশের অধিকার আছে। সমাজের কাজ করার অধিকার আছে। বাইরে বের হবার, চলাফেরার অধিকার আছে। আমরা রোকেয়ার জীবনে এই অধিকারগুলো রূপায়িত হতে দেখি।

তিনি নিজের জীবনে যা গ্রহণ, যে আদর্শ হিসাবে ধারণ করেছেন সেটাই দেখাতে চেয়েছেন পরিবারে-সমাজে। তাই তাঁর আদর্শের উত্তরাধিকারী হতে সক্ষম হয়েছিলেন শামসুন্নাহার মাহমুদ, সুফিয়া কামালসহ তাঁর স্কুলের ছাত্রীরা। রোকেয়া আদর্শে মুগ্ধ শুধু এরাই নন, ঐ সময়ের শিক্ষিত-সচেতন পুরুষরাও মুগ্ধ হয়েছিলেন বলে তাদের নিজ নিজ ঘরের স্ত্রী ও কন্যাদের অবরোধ ভাঙ্গতে উদ্বুদ্ধ করেন। কন্যাদের শিক্ষা ও সংস্কৃতি চর্চায় সহযোগিতা করেছেন। তাদের কারণেই নারীও এগিয়েছে, সমাজ জেগেছে।

রাষ্ট্রও নারীর শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিয়েছে। এটা আমাদের স্বীকার করতেই হবে। তারপরও কিন্তু বাধা-বিপত্তি এসেছে ধর্মান্ধ ও কুসংস্কারবাদী গোষ্ঠীর কাছ থেকে, নারী বিদ্বেষী পুরুষের কাছ থেকে। এমন কি নারীর ভোটে নির্বাচিত স্বৈর শাসকদের কাছ থেকে যারা এই ধর্মান্ধ গোষ্ঠীকে সর্বদা আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে প্রতিষ্ঠিত করে থাকে। আমরা এটা পাকিস্তানী শাসকদের মধ্যে দেখেছি এবং বাংলাদেশে দুই স্বৈরশাসকের আমলেও দেখেছি।

বাংলাদেশ স্বাধীতা অর্জনের পর যে পবিত্র সংবিধান দেয়া হয়, সেখানে স্পষ্ট করে বলা আছে নারী-পুরুষের সমান অধিকারের বিষয়টি। জাতীয় জীবনের সর্বস্তরে মহিলাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার ধারারও উল্লেখ আছে। এই অবস্থানে আসতে নারীকেই আন্দোলন করতে হয়েছে, রোকেয়ার কাছ থেকে যারা শিক্ষা-দীক্ষা নিয়েছেন তারাই একটু একটু করে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। পরিবারে-সমাজে তাদেরও অনেক কটু কথা শুনতে হয়েছে, রোকেয়া যেভাবে সমাজের কাঠমোল্লাদের কাছ থেকে অভিসম্পাত শুনেছেন। আমরা দেখেছি নারী স্বাধীনতার জন্য রোকেয়া ধর্মের কঠোর সমালোচনা করেছেন।

তিনি শৈশবে তোতাপাখির মত কোরান শরীফ পাঠকে মনে প্রাণে গ্রহণ করতে পারেন নি। তারপরও ধর্মগ্রন্থ প্রতিদিন পাঠ করতেন, তিনি নিজেই চিঠিতে লিখেছেন, “প্রতিদিন ভোরে আমি পাক কোরানের ২/১ পৃষ্টা পড়লে বড় শান্তি পাই। কত সান্তনা রয়েছে এই কথা কয়টিতে “আমি এদুনিয়ায় কিছু চাই না, আমার পুরস্কার জমা রয়েছে সারা দীন দুনিয়ার মালেকের কাছে। ” নিয়মিত নামাযও পড়তেন। কোরান শরীফের বাংলা অনুবাদ করে তা ঘরে ঘরে পাঠ করার দাবি করেন।

নিয়মিত নামায পড়তেন, হোস্টেলের ছাত্রীদের নামায পড়াতেন এবং স্কুল শুরুর পূর্বে প্রার্থনা করা হতো। সেই রোকেয়াকে আমরা লিখতে দেখি “আমাদিগকে অন্ধকারে রাখিবার জন্য পুরুষগণ ঐ ধর্ম্মগ্রন্থ গুলিকে ঈশ্বরের আদেশপত্র বলিয়া প্রকাশ করিয়াছেন। ….. এই ধর্মগ্রন্থগুলি পুরুষ-রচিত বিধি ব্যবস্থা ভিন্ন আর কিছুই নহে। মুনিদের বিধানে যে কথা শুনিতে পান, কোন স্ত্রী মুনির বিধানে হয়ত তাহার বিপরীত নিয়ম দেখিতে পাইতেন। কিন্তু স্ত্রী লোকদের সেরূপ যোগ্যতা কই যে, মুনি ঋষি হইতে পারিতেন?” (আমাদের অবণতি)।

তিনি ঐ একই প্রবন্ধে আরও স্পষ্টভাবে বলেছেন, “যেখানে ধর্ম্মের বন্ধন অতিশয় দৃঢ় সেইখানে নারীর প্রতি অত্যাচার অধিক। যেখানে ধর্ম্ম বন্ধন শিথিল, সেখানে রমণী প্রায় পুরুষের ন্যায় উন্নত অবস্থায় আছেন। ” ধার্মিক সমাজকে তিনি আঘাত দিতে চাননি সত্য। কিন্তু যুক্তি দ্বারা বোঝাতে চেয়েছেন ধর্মান্ধরা সমাজকে কতখানি পিছিয়ে রাখছে। নারীকে শৃংখলিত করে অবরোধের বেড়াজালে আটকিয়ে রেখেছে।

উপলব্ধি করা যায়, রোকেয়া ধর্মের বাইরে আসতে সমর্থ হন শুধুমাত্র নারীর অধিকারের দাবিতে। ধর্মের নামে বাড়াবাড়ি তার পছন্দ ছিল না। ধর্মকে ব্যক্তিগত অনুভূতির আধার ভাবতেন। সেখানে শান্তি অর্জন করতেন। নারী স্বাধীনতা ও পুরুষের সমকক্ষতা অর্জনকে তিনি উর্ধ্বে স্থান দিয়েছেন এবং সে কারণে শিক্ষার কথা বলেছেন।

শিক্ষার্জনের মাধ্যমে নারী স্বাধীনতা পাবে ও মর্যাদাপ্রাপ্ত হবে এটাই ছিল তাঁর প্রত্যাশা, তাঁর স্বপ্ন-তাঁর দূরদৃষ্টিসম্পন্ন দৃষ্টিভঙ্গি। তিনি ধর্মবিরোধী ছিলেন না, কিন্তু ধর্মের অপব্যাখ্যা ও ধর্মের নামে জোর করে চাপিয়ে দেবার প্রবল প্রতিবাদী, বলা যায় ‘বিদ্রোহী’ ছিলেন। রোকেয়া স্পষ্ট করেই বলেছেন, যখনই নারী মাথা তুলবার চেষ্টা করেছে তখনই পুরুষ ধর্মের ভয় দেখিয়ে তাকে দাবিয়ে রেখেছে এবং তার ওপর প্রভুত্ব প্রতিষ্ঠা করেছে। আমরা তো দেখেছি, ধর্মের নাম করে কীভাবে ফতোয়া দিয়ে দণ্ড দেয়া হয়, ঘরের বাইরে যাবার নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয় এবং সর্বশেষ গত ২৯ নভেম্বর ২০১০ তারিখে পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে একটি ধর্মীয় সংগঠণের বিবৃতি ‘ইভ টিজিং না থাকলে পুরুষ হিজড়া হয়ে যাবে। ’ এসবই নারীকে শোষণ করার জন্য পুরুষের ষড়যন্ত্র।

নারীকে তারা বেশ্যা-পতিতা-ডাইনী-নরকের কীট-মুর্খ নাম দিয়ে ক্রীতদাসী, সেবাদাসী ও মনোরঞ্জনকারী হিসেবে বিবেচনা করে এসেছে। ধর্মীয় নেতা, ধর্মীয় শাসক এবং তাদের ভাবশিষ্যরা ধর্মীয় রীতিনীতি নিয়ন্ত্রণ করার নামে মানবাধিকারকে অগ্রাহ্য করেছে। আর সে কারণে নারীও যেমন অসহায় ও নিরাপত্তাহীন থেকেছে তেমনি দারিদ্রের কষাঘাতে জর্জরিত হয়ে মানবেতর জীবনযাপনে বাধ্য হয়েছে। বিশেষ করে পণপ্রথা, বহুবিবাহ, সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত রাখা, বৈধব্য জীবন ইত্যাদি কারণেও নারী দরিদ্রতর থেকে গেছে। অশিক্ষা-অসচেতনা-অর্থাভাব-অনাহার ইত্যাদি কারণে তার ভাগ্য অন্ধকারাচ্ছন্ন থেকে গেছে।

আমাদের মনে রাখতে হবে—রোকেয়া নারী স্বাধীনতা চেয়েছিলেন বলেই ‘আঞ্জুমানে খাওয়াতীনে ইসলাম’ গঠন করে সমাজকল্যাণমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়েছিলেন। তিনি তৃণমূল থেকেই কাজ শুরু করেন। মধ্যবিত্ত উচ্চবিত্ত সম্ভ্রান্ত ঘরে ঘরে গিয়ে স্কুলের জন্য ছাত্রী সংগ্রহ করেছেন এবং শিক্ষাদানের পাশাপাশি সেলাই রন্ধন স্বাস্থ্য সেবার প্রাথমিক কাজগুলো শিক্ষা দিতেন যাতে মেয়েটি স্বাবলম্বী হতে পারে। ঠিক তেমনি কলকাতার বস্তিতে ঘুরে ঘুরে তিনি মেয়েদের শিক্ষা ও গার্হস্থ কর্মকাণ্ড শেখাতেন। তিনি ঘরে ঘরে গিয়ে নারী জাগরণের কথা বলতেন এবং বিভিন্ন শিক্ষা ও নারী প্রতিষ্ঠানে আমন্ত্রিত হয়ে বক্তৃতা দিতেন।

তাঁর বক্তৃতার প্রধান বিষয়টি ছিল অবরোধ ভাঙ্গতে হবে, নারীকে শিক্ষা দিতে হবে এবং স্বাধীনভাবে চিন্তা-ভাবনা ও চলফেরার অধিকার দিতে হবে। পুরুষের সমকক্ষতা অর্জনের অধিকারী হতে হবে। তিনি বাঙালি নারী জাগরণের গোড়াপত্তন শুরু করেন কলম হাতে নিয়ে তীক্ষ্ম ও যুক্তি সম্পন্ন লেখার মাধ্যমে। তাঁর আবেগ ও ভাবালুতাকে গুরুত্ব না দিলেও তাঁর বহু তীক্ষ্ম ব্যঙ্গোক্তি ও উদাহরণ গুরুত্বের দাবিদার। বিভিন্ন সাহিত্য থেকে উদ্বৃতি এনেছেন, এতে বোঝা যায় তার জ্ঞানের চর্চা ও সাধনার কোন ঘাটতি ছিল না।

সেখানে তিনি যথেষ্ট মেধাবী ছিলেন। বিশিষ্ট লেখক ড. আবদুল মান্নান সৈয়দ বলেছেন, “…. চিন্তায়, চেতনায়, কর্মে নারী জাগরণে তথা বাংলার নবজাগরণে তাঁর ভূমিকা দ্বিতীয় রহিত। আধ্যাত্মিকতার স্থলে ঐহিকতা, গড্ডলের স্থলে ব্যক্তিকতা, ভাবালুতার স্থলে ভাবুকতা, আবেগের স্থলে যুক্তিশীলতা, প্রশ্নহীন সমর্থনের স্থলে জিজ্ঞাসু বিবেচনা-পুনর্বিবেচনা, বিমূর্ত কল্পনার স্থলে যুক্তিশীলতা, প্রশ্নহীন সমর্থনের স্থলে মনস্বিতা ও তার সকর্মক প্রয়োগ-বেগম রোকেয়া রেঁনেসাসের এইসব চরিত্রলক্ষণ অসম্ভব উজ্জীবিত। ” (বেগম রোকেয়া গ্রন্থ থেকে) বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপিকা ড. সৈয়দ তানভীর নাসরিন লিখেছেন “রোকেয়ার বহুমুখী প্রতিভার বিকাশ ও স্ফুরণ ঘটেছে তাঁর যুক্তিবাদ ও বিজ্ঞানমনস্কতাকে কেন্দ্র করে। সেই চিন্তন তাঁর লেখায় পরিস্ফুট হয়েছে, তেমনই তার জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপকেও পরিচালিত করেছে।

” (বেগম রোকেয়া: ইতিহাসের পরম্পরা প্রবন্ধ থেকে) এরপর আর অনুসন্ধানের প্রয়োজন পড়ে না রোকেয়া প্রতিভার সাক্ষর। তাঁর লেখনীর শাণিত ধারা মুসলিম সমাজকে জাগিয়েছে, ঘষে ঘষে বিবেক জাগ্রত করেছে, নারীকে তাঁর শক্তি অর্জনে সাহসী করেছে এবং অবরোধ ভাঙ্গতে সহায়তা করেছে। রোকেয়ার মৃত্যুর প্রায় ৭৮ বছর পার হয়ে আমরা এখন একুশ শতকে চারদিকে অবশ্যই তাঁর স্বপ্ন সম্ভাবনার ছটা দেখতে পাই। কিন্তু তাই বলে নারী দমন, নির্যাতন ও বৈষম্য বিলুপ্ত হয়ে যায়নি। কখনও কখনও ভয়াবহ আকারে ঘটে থাকে।

রাষ্ট্রীয় আইন, সামাজিক বিচার, পারিবারিক বন্ধন সবই আছে—আগের চেয়ে অনেক সুবিধা ও উন্নত অবস্থানে রয়েছে, তারপরও নিরাপত্তাহীনতা রয়ে গেছে। ধর্মান্ধ কাঠমোল্লাদের অপপ্রচার আছে, নারী পণ্য হিসাবে উপস্থাপনের ষড়যন্ত্র আছে, নারীকে অপমান ও বিড়ম্বনায় ফেলার অপচেষ্টা আছেই। সুবিধাবাদী নারীর ক্ষমতায়ন হচ্ছে, কিন্তু বৃহত্তর ভাগ্যাহত নারীসমাজ শোষণ ও বঞ্চনার শিকার থেকেই যাচ্ছে। রোকেয়া যে পুরুষের সমকক্ষতা চেয়েছেন তার ধারে কাছেও এরা যেতে পারে নাই। নারীকে সঙ্গী বা মানুষ নয়, মুর্খ-অসচেতন, অবহেলিত ও ক্রীতদাসী হিসেবে পুরুষ অপমান-অমর্যাদা -বঞ্চনা করেই যাচ্ছে।

চলবে....  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.