http://www.facebook.com/godfatherhasan71 শুরুতেই বলে রাখি আমার এই পোষ্টের সমর্থনে আমি কোন প্রমাণ বা সূত্র দিতে পারব না। তাই বিশ্বাস কিংবা অবিশ্বাস নিজ দায়িত্বে করবেন।
সম্প্রতি আমেরিকার সপ্তম নৌবহর নিয়ে যে আলোচনা চারিদিকে শুরু হয়েছে তার প্রেক্ষিতে আমি আমার এক পরিচিত জনের সাথে খুব খোলামেলা কথা বলেছি। বলা বাহুল্য তিনি বর্তমান সরকারের অত্যন্ত ঘনিষ্ট একজন। সঙ্গত কারণেই তাঁর পরিচয় আমি প্রকাশ করতে পারছি না।
প্রথমেই তাঁর সাথে আলোচনার সার সংক্ষেপ তুলে ধরব, তারপর এ বিষয়ে আমার মতামত আপনাদের সাথে শেয়ার করব। আশা করি আপনারাও আপনাদের মূল্যবান মতমত জানাবেন।
তাঁর কাছে প্রথমেই জানতে চেয়েছিলাম আমেরিকার নৌবহর চট্টগ্রাম বন্দরে আসতে চাওয়ার খবর সত্যি কিনা?তিনি জানিয়েছেন বিষয়টি এখনো একেবারেই প্রাথমিক পর্যায়ে আছে। এ বিষয়ে সরকারের সাথে আলোচনা শুরু হয় ২০১২ সালেই। ঠিক কবে থেকে এ আলোচনা শুরু হয়েছে তা নির্দিষ্ট করে তিনি জানেন না।
তবে সবচেয়ে অবাক করা বিষয়, তিনি বলেছেন হিলারি ক্লিন্টনের সফরের সময় এ বিষয়ে কোন আলোচনাই হয়নি। মূলত, মার্কিন রাষ্ট্রদূত মজিনা এ ব্যাপারে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন। ওবামা সরকার মার্কিন ঘাঁটি থাকার বিনিময়ে বাংলাদেশকে বিপুল পরিমাণ সামরিক ও অর্থ সাহায্য দেওয়ার প্রস্তাব করেছে।
কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলের বৈঠকে এই প্রস্তাবের ব্যাপারে নেতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমেরিকার সাথে সামরিক সম্পর্কে জড়ানোর অভিজ্ঞতা সুখকর হবে না।
এছাড়া ভারতের এ বিষয়ে ঘোরতর আপত্তি আছে। আবার, দলের অনেকেই প্রস্তাবের পক্ষে। তারা প্রধানমন্ত্রীকে বুঝাতে চাচ্ছেন যে, মার্কিন সাহায্য পেলে বাংলাদেশের চেহারা রাতারাতি বদলে যাবে। তবে এখনও এ ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। মার্কিনিরা বিএনপির সাথেও যোগাযোগ করেছে বলে তিনি জানান।
বিএনপির মনোভাব সম্পর্কে তিনি অবশ্য কিছু জানেন না। এদিকে আমেরিকা ২০১৬ সালের মধ্যে সপ্তম নৌবহর দক্ষিণ এশিয়ায় আনতে চায় বলে মার্কিন রাষ্ট্রদূত সরকারকে ও বিরোধি দলকে (সম্ভবত) জানিয়েছে।
এই হল তাঁর কথা। এখন আমি মনে করি মূলত চীনের হুমকি মোকাবেলার জন্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়ায় তার নৌবহর রাখতে চায়। তাছাড়া ভারত ও পাকিস্তানের ক্রমবর্ধমান শক্তিও তাদের চিন্তার বিষয়।
সবদিক বিবেচনায় আনলে বাংলাদেশ সবচাইতে ভালো অপশান। কিন্তু চীন কি এটা মেনে নিবে?এমনকি ভারত কিংবা পাকিস্তানও মেনে নিবে না। তাই নৌবহর রাখলে এদের শত্রু হতে হবে। সাথে রাশিয়ারও। যাই হোক, আমি মনে করি আমেরিকা এক্ষেত্রে বিএনপিকে বেশী বিশ্বাস করবে।
কেননা বিএনপির সাথে তাদের বন্ধুত্ব অনেক পুরানো। যেহেতু সামনে নির্বাচন সেহেতু আওয়ামী লীগও চাইবে মারকিনিদের খুশি রাখতে। তবে আওয়ামী লীগের জন্য ভারত একটা বাঁধা হবে। আর এই সুবিধা পেতেই আমেরিকা নির্বাচনের ঠিক আগে এই আলোচনা শুরু করেছে। এখন দেখা যাক কোথাকার জল কোথায় গড়ায়।
আপনাদের সবার কাছে একটা নিবেদন, আমার কথা গুলো বিশ্বাস না করুন আমার কোন দুঃখ নাই। কিন্তু আমেরিকার নৌবহর বাংলাদেশে থাকতে চায় এটা নিছক গুজব বলে উড়িয়ে দিবেন না। অন্তত টাইমস অফ ইন্ডিয়ার মত একটা মিডিয়াকে বিশ্বাস করুন।
আর আসুন আমরা যে দলের বা যে মতাদর্শের সমর্থক হই না কেন, যখনই যে সরকার সপ্তম নৌবহর আনতে চেষ্টা করবে সে সরকারের সিদ্ধাতের প্রতিবাদ করব। আমরা আমাদের প্রিয় মাতৃভূমিকে দখলদার মারকিনিদের ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করতে দিতে পারি না।
এই সপ্তম নৌবহর কি সেই নৌবহর নয় যেটা ১৯৭১ এ আমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে, আমার এই সবুজ বাংলাকে লাল রক্তে রঞ্জিত করতে রওনা হয়েছিলো?
সবশেষে সেই পরিচিত উক্তি "আমেরিকা যার বন্ধু হয় তার শত্রুর প্রয়োজন হয় না" ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।