এই ভিডিওটা দেখুন। যেন কোন হিংস্র প্রাণীকে বিনাশ করার জন্য একদল মানুষরূপী শুয়োর ক্ষেপে উঠেছে। ওটা নারী নয়, ওটা কোন ভয়ংকর প্রাণী। যেন ওটাকে বিনাশ না করলে ধর্ম আর রইবে না।
এই নারীটি কি নাস্তিক ?
এই নারীটি কি নাস্তিক ?
এই নারীটি কি নাস্তিক ?
এই নারীটি কি নাস্তিক ?
এই নারীটি কি নাস্তিক ?
না, এই নারীটি নাস্তিক নয়।
এই নারীটি কোন খারাপ মহিলা নয়। এই নারীটি কোন অপরাধী নয়। এই নারীটি পকেটমার নয়, ছিনতাইকারী নয়, চোর নয়। তার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ নাই। তার বিরুদ্ধে ক্ষেপে ওঠার কোন কারণ নাই।
এই নারীটি কোন অশ্লীল পোশাক পরে নি। কোন উগ্র পোশাকও পরে নি। বাংলাদেশী মেয়েদের স্বাভাবিক পোশাক পরেছে। তাহলে কেন তারা এই নারীটির উপর হামলে পড়ল ?
তার উপরে হেফাজতে ইসলামের মধ্যযুগীয় শুয়োরদের ক্ষেপার একটাই কারণ, তিনি একজন সাংবাদিক। তিনি ঘর ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে এসেছেন।
তিনি আধুনিক একজন নারী। তিনি একজন সুস্থ এবং স্বাবলম্বী উচ্চ শিক্ষিত নারী। তিনি আর দশটা সাধারণ নারীর চেয়ে অনেক এগিয়ে গেছেন। এমনকি অনেক পুরুষের চেয়ে তিনি এগিয়ে। তাই তার উপর তাদের এত আক্রোশ।
তারা চায়, নারীরা ঘরে বন্দী থাকুক। তারা চায়, নারীরা অশিক্ষিত থাকুক। তারা চায়, নারীরা কর্মহীন বেকার থাকুক। তারা চায়, নারীরা তাদের শয্যায় থাকুক। তারা চায়, নারীরা কেবল তাদের বহু বিবাহের শিকার হোক।
নারীরা কেবল তাদের ঔরসে তাদের মতো মধ্যযুগীয় শুয়োর পয়দা করে যাক।
তারা যে নারীদের অবরোধবাসিনী মনে করে, সেটার প্রমাণ এই ভিডিওটি। তারা চায়, নারীরা তাদের আক্রমণের শিকার হয়ে ভয়ে ঘরের কোণে গিয়ে লুকাক। তারা চায়, নারীরা তাদের গলগ্রহ হয়ে থাকুক। তারা এই বাংলাদেশে মধ্যযুগীয় অন্ধকার ফিরিয়ে আনতে চায়।
প্রথমবার যখন এই নারী সাংবাদিকের আক্রমণের শিকার হওয়া নিয়ে পোস্ট লিখলাম, তখন কিছু শুয়োর হেফাজতের পক্ষে সাফাই গাইল। তাদের কথা হল, নারীটি কেন সেখানে গেল ? নারীটি দায়ী। নারীটি ওখানে গেলে আক্রান্ত হবে ? একটা রাজপথে নারী নিরাপদ না, কেন ?
এদের আচরণ দেখলে মনে হয়, এরা কোন নারীর গর্ভে ছিল না কোন দিন। কোন মায়ের গর্ভে এরা কখনো ছিল না। এরা কখনও কোন নারীর দুধ পান করে নি।
এদের মা ছিল না । এরা নারীর হাতে কোন দিনও খাবার খায় নি।
আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী নারী। তার কাছে করজোড়ে নিবেদন, আপনি শক্ত হোন। বাংলাদেশকে মধ্যযুগীয় তালিবান শাসনে ফিরে যেতে দিবেন না।
এই বর্বরদের সঙ্গে কোন আপস নাই।
এরা জামাত শিবিরের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে ঈমান রক্ষার ভুয়া ধুয়া তুলে নেমেছে। তাদের মূল টার্গেট হল, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচাল। এদের মূল টার্গেট হল, জামাতকে রাষ্ট্র ক্ষমতায় নিয়ে আসা। এদের মূল টার্গেট হল, বাংলাদেশকে পশ্চাদপদ আফগানিস্তান বানানো।
এদের মূল টার্গেট হল, বাংলাদেশকে তালিবার রাষ্ট্র বানানো।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাদ্রাসাগুলোতে জঙ্গী তৈরি করা হয়। এদের শিক্ষাক্রম আধুনিক করেন। এদের ধর্ম শিক্ষার পাশাপাশি আধুনিক জ্ঞান বিজ্ঞান শেখানোর ব্যবস্থা করেন। পুরো বাংলাদেশে আমরা ধর্ম শিক্ষার পাশাপাশি আধুনিক জ্ঞান বিজ্ঞান শিখতে চাই।
আমরা সবাই আধুনিক সুশিক্ষিত হতে চাই। আমরা চাই, নৈতিকতা ও বিজ্ঞান আমাদের মানুষ হিসেবে গড়ে তুলুক। তাই সবার জন্য চাই একমুখী শিক্ষা। কেবল ধর্মীয় উগ্রপন্থী তৈরির কারখানা মাদ্রাসা চাই না।
যারা এই সব মাদ্রাসায় দান করেন, তারা একবার ভাবুন।
আপনার দান সদকা কাকে দিচ্ছেন ? কার হাতে তুলে দিচ্ছেন কোরবানীর চামড়া ? আপনি উগ্রপন্থী তৈরির কারখানায় কেন রসদ যোগাচ্ছেন ? আপনার ইংলিশ মিডিয়ামে পড়া সন্তানের কল্লা কেটে নেয়ার জন্য ? আপনার মেয়ের সম্ভ্রমের উপর হামলা চালানোর জন্য ? আপনার পরিবারের নিরাপত্তা কেড়ে নেয়ার জন্য ? আত্মঘাতী বোমা হামলা চালিয়ে আপনাকে গুষ্ঠিশুদ্ধ মেরে ফেলার জন্য ?
বাংলাদেশের নারী সমাজ,
এখনও সময় আছে জেগে উঠুন। এদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলুন। এদের হাতে আপনারা কেউ নিরাপদ নন। আপনারা প্রত্যেকে এদের টার্গেট। আপনাদের অপরাধ, আপনারা উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করছেন।
আপনাদের অপরাধ, আপনারা পুরুষের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কর্মক্ষেত্রে কাজ করে যাচ্ছেন। আপনাদের অপরাধ, অনেক পুরুষের চেয়ে আপনার মেধা-মননে এগিয়ে গেছেন। আপনাদের অপরাধ, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রপ্তানী খাত গার্মেন্টস সেক্টরকে আপনারা তৈরি করেছেন এবং বাঁচিয়ে রেখেছেন।
গণমাধ্যম কর্মীরা,
এখনও বসে থাকবেন ? আপনাদের বাড়িঘরে এসে কল্লা নামানোর জন্য অপেক্ষা করছেন ? এরা ক্ষমতায় গেলে আপনারাই সবার আগে টার্গেট হবেন। সুতরাং এখনই রুখে দাঁড়ান।
আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভাইয়েরা,
আপনারা অনেক মার খেয়েছেন এদের হাতে। আপনাদের অনেক নিরপরাধ সহকর্মী প্রাণ হারিয়েছেন এদের তাণ্ডবে। সুতরাং আর সহ্য করা নয়। এবার ভিডিও ফুটেজ দেখে দেখে এই সব দুস্কৃতিকারীকে আইনের আওতায় আনুন। এদের আইনের কাঠগড়ায় নিয়ে দাঁড় করান।
আপনারা বাঁচুন, বাংলাদেশকে বাঁচান।
কাপুরুষ যারা এখনও ঘরে বসে ঝিমাচ্ছেন, মাথা চুলকাচ্ছেন, ভাবছেন, কোন পক্ষে যাবেন, তারা কি রক্ত মাংসের মানুষ নন ? আপনার মা বোনের গায়ে হাত পড়ার অপেক্ষা করছেন ? আপনার স্ত্রীর সম্ভ্রম কেড়ে নেয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন ? আপনার বোনের শ্লীলতাহানির জন্য বসে বসে হাত কামড়াচ্ছেন ? আপনার বাড়ির দরজা ভেঙ্গে নারীদের ধর্ষণ করার জন্য প্রতীক্ষা করছেন ?১৯৭১ সালে একবার আমাদের নারীরা ধর্ষিতা হওয়াতে আপনাদের লজ্জা লাগে নি ? আপনাদের কি আসলে লজ্জা নাই ? সময় থাকতে এদের বিরুদ্ধে নামুন। নইলে কেউ রক্ষা পাবে না।
এদেরকে যুক্তি দিয়ে বুঝিয়ে লাভ নাই। অনেক বোঝানো হয়েছে।
এরা সব বুঝে শুনেই এই পথে নেমেছে। সুতরাং এদের প্রতিরোধ ছাড়া কোন পথ নাই। এদের যেখানে পাবেন, সেখানেই প্রতিরোধ করুন। এদের অর্থনৈতিকভাবে মারুন, এদের রাজনৈতিকভাবে মারুন, এদের সামাজিকভাবে মারুন। আর যদি মুখোমুখি আক্রমণ করতে আসে, এদের সাপের মতো করে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে মারুন।
অন্যান্য পোস্ট :
বাংলা হবে আফগান : নারীদের পেটানো শুরু করে দিয়েছে হেফাজতে ইসলাম
মর্মস্পর্শী ঘটনা : হেফাজতে ইসলামের হামলায় আহত সাংবাদিক নাদিয়া শারমিন বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে ভর্তি
বাংলা হবে আফগান : ‘নারীবিরোধী’ এক সমাবেশ
বাংলা হবে আফগান : গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর হেফাজতের হামলা
মিথ্যাচার গুরু মাহমুদুর রহমানের ৮৫ কোটি টাকার ভয়ংকর ষড়যন্ত্র
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।