দৈনিক আমাদের সময় গত ২৩ মে সংবাদ করে জঙ্গি আতঙ্কে ভুগছে জামায়াত ও ছাত্রশিবির। বাস্তবতা হলো বাংলাদেশে জঙ্গির উত্থান বাংলাদেশে হুজি’বি গঠন এর মাধ্যমে ১৯৯২ সালে ওসামা বিন লাদেনের আর্থিক ও আদর্শিক সমর্থনে। ১৯৯৮ সালে একই আদর্শ ও সমর্থনে গঠিত হয় জেএমবি । এসব জঙ্গি সংগঠনের নেতারা আফগানিস্তানে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে। HUJI এর নেতা শেখ ফরিদ আফগানিস্তানে যুদ্ধ করেছে।
জানা যায় প্রায় ৪০,০০০ বাংলাদেশী আফগানিস্তানে তালেবান ও আল-কায়দার সাথে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশগ্রহন করে (কবির, ২০০৬)। এদের অনেকেই পরে ফিরে এসে জঙ্গি সংগঠন গড়ে তুলে। বাংলাদেশে এসব জঙ্গি সংগঠনসমূহ রাজনৈতিক সমর্থন পায় জামায়াতের ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের নিকট থেকে। জেএমবি’র নেতা শায়খ আব্দুর রহমান ও সিদ্দিকুল ইসলাম বাংলা ভাই এক সময় জামায়াত/ শিবিরের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিল।
এছাড়া ২০০৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট ও US Department of Justice আন্তর্জাতিক জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সম্পর্ক ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের জন্য বিভিন্ন দেশে অবৈধভাবে অর্থ লেনদেন করার বিষয়সহ ৪৫টি অভিযোগ উল্লেখ করে বাংলাদেশ সরকারকে অবহিত করে।
কিন্তু রাজনৈতিক কারণে এবং জামায়াত ক্ষমতার অংশ হওয়ায় তৎকালীন জোট সরকার এসব অভিযোগের কোন তদন্ত করেনি। জামায়াতে ইসলামী আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সাথে ঘনিষ্ট সম্পর্কের কারণে সংগঠনটিকে সারা বিশ্বের জন্য হুমকি উল্লেখ করে ২০০৪ সালে রাশিয়ার ফেডারেল সিকিউরিটি ব্যুরো (এফএসবি) একে কালো তালিকাভুক্ত করে (Chris Blackburn, 2006)। আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক গোয়েন্দা বিশ্লেষক ও ব্রিটিশ নাগরিক Chris Blackburn বিশ্বজুড়ে বিবিসি’র A Question Leadership ডকুমেন্টারী তৈরী করতে গিয়ে Chris Blackburn বাংলাদেশের জামায়াতে ইসলামীর আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠনের সাথে এর নেটওয়ার্কের তথ্য উপস্থাপন করেন।
তবে সংবাদে উল্লখ করা হয় বর্তমান প্রক্ষোপটে জামায়াত এখনই শক্ত অবস্থান দেখাতে চাচ্ছে না। তাই সরকার পতনের আন্দোলনে কৌশলে নামার পরিকল্পনা নিয়েছে।
দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে তারা ‘ধীরে চলো নীতি’ গ্রহণ করেছে। জামায়াত নেতারা মনে করছেন, গত ১৮ মে ‘দৈনিক দ্য স্টেটসম্যান’ পত্রিকায় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির নেতৃত্বাধীন তৃণমূল সরকারের রাজ্য গোয়েন্দা বিভাগের তথ্যের ভিত্তিতে একটি রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। ওই রিপোর্টে বলা হয়, বাংলাদেশ ভিত্তিক নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন হুজি সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক গড়তে ‘ভারতীয় সংখ্যালঘু তরুণীরা অস্ত্র প্রশিক্ষণ নেবে বাংলাদেশে’। সূত্রমতে, এ রিপোর্ট বাংলাদেশের বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ার পর সরকারের শীর্ষ পর্যায়েও তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এতে জঙ্গিবাদের সঙ্গে জামায়াতের সম্পর্ক স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, জামায়াতের উচ্চপর্যায় থেকে সারাদেশের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সর্বোচ্চ সতর্কতা ও সংগঠিত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ডাক এলেই জঙ্গি সহযোগিতায় মাঠে নামার জন্য প্রস্তুত থাকারও নির্দেশনা রয়েছে। বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে অবস্থিত বিদেশি দূতাবাসগুলো জামায়াতের কার্যক্রম নিবিড় পর্যবেক্ষণ করছে। ৫ শীর্ষনেতার গ্রেপ্তার ও সরকারের যুদ্ধাপরাধের বিচার আয়োজনের প্রেক্ষাপটে জামায়াত কোন পথে এগোচ্ছে- তা পর্যবেক্ষণে রেখেছে দূতাবাসগুলো।
জামায়াত এর জঙ্গি ভয় নাকি জঙ্গি সহযোগিতায় কোন নতুন পরিকল্পনা?
সংবাদ সূত্র_
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।