আমি চাই শক্তিশালী স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ
ইংল্যান্ডের ক্লাব চেলসি ও জার্মান বায়ার্ন মিউনিখ উভয়কেই যথেষ্ঠ সংগ্রাম করে UEFA চ্যাম্পিয়ন্স লীগের সেমিফাইনালে দুই স্প্যানিশ জায়েন্ট বার্সেলোনা ও রিয়াল মাদ্রিদকে হারিয়ে ফাইনালে উঠতে হয়। তবে এই দুই সেমিফাইনালে আমি এগিয়ে রাখব চেলসিকেই। কারণ ন্যু ক্যাম্পের দ্বিতীয় লেগে প্রথমে এক গোল ও একজন লাল কার্ড(জন টেরি) এবং পরে আরো একটি সহ ২ গোলে পিছিয়েও ড্র করা অসম্ভবকে সম্ভব করার মতই। বার্সেলোনায় আছে জগতের সেরা মেসি এবং জাভি, ইনিয়েষ্টা, ফাবরিগাস, মাস্যেরানোর মত চৌকস খেলোয়াড়। এর বিপরীতে চেলসিতে স্রেফ ড্রগবা ও ফার্নান্ডো টোরেসই বিশ্ব মানের খেলোয়াড়, বিশ্বখ্যাত তারকা তেমন নেই।
১০ জন নিয়েও দৃঢ়তার সাথে বার্সেলোনাকে চীনের প্রাচীরের মত আটকে রাখার জন্য অনেক পরিশ্রম, কৌশলের পাশাপাশি কঠিন মনোবলের দরকার হয়। চেলসির খেলোয়াড়রা যেন নিজেদেরকে উজাড় করে জীবন-মরণ লড়াইয়ে ঝাপিয়ে পড়ে। আর ম্যাচ শেষ হওয়ার একটু আগে স্প্যানিয়ার্ড ফার্নান্ডো টোরেসের মাঝ মাঠ হতে লম্বা দৌড়ে বল নিয়ে ঠান্ডায় মাথায় গোল করা ছিল সত্যিই অসাধারণ। এর ফলে চেলসি পরাজয়ের হাত থেকে রক্ষা পায় এবং নিজেদের মনোবলকে আরো চাঙ্গা করে।
আর জার্মানীর শীর্ষ ক্লাব বায়ার্নের রিয়ালের সান্টিয়াগো বার্নাব্যুতে হিসাবী খেলা খেলে টাইব্রেকারের মাধ্যমে জিতেছে।
উভয় লেগে যার যার মাটিতে ২-১ গোলে জিতে এওয়ে গোলও সমান হওয়ায় টাইব্রেকারে গড়ায়। এখানে বায়ার্নের সবচেয়ে বড় এডভান্টেজ যে তাদের বেশীর ভাগ জার্মান খেলোয়াড়রা শারিরীক ভাবে শক্তিশালী যারা ১২০ মিনিটের বেশী ম্যাচ খেলেও সক্রিয় থাকে। রিয়ালের রোনাল্ডো, কাকা, হিগুয়ান, বেনজেমা, মাসুদ ওজিলের বিপরীতে বায়ার্নও কম না গোমেজ, রিবেরি, রোবেন, শোয়াইনষ্টাইগাররা সমান তালে খেলেছে। রিয়ালের খেলোয়াড়দের টাইব্রেকারে গোল মিসই প্রমাণ করে যে তারা ফিজিক্যাল ফিটনেসে পিছিয়ে ছিল।
এবার যে চ্যাম্পিয়ান্স লীগের ফাইনালটা হবে বার্য়ানের নিজস্ব ক্লাব মাঠ তথা আলিয়ানৎছ আরেনায়।
আজকে ১৯শে মের এই ফাইনালে তারকা, নিজ মাঠ সব বিবেচনায় বায়ার্নই এগিয়ে থাকবে। সেই বিচারে চেলসির বেশ কিছু নিয়মিত খেলোয়াড় কার্ডের সমস্যায় আজকের ম্যাচে নেই। তাই তাদেরকে রক্ষাণাত্নক ও কৌশলী খেলা ছাড়া সফল হওয়া কঠিন। সাম্প্রতিক লিভারপুলকে এফএ কাপ ফাইনালে শুরু হতে আক্রমণ করে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ান হয় চেলসি। সেই ধাচের খেলা খেললেও বায়ার্ন সম্পূর্ণ ভিন্ন বিষয়।
একেতো তারকায় ভরপুর তার উপর বায়ার্নের শক্তি সামর্থ্য অনেক বেশী। তাই শুরু হতে আক্রমণ করে খেললে পাল্টা আক্রমণে চেলসীর ডিফেন্স বিপদে পড়বে। তাই চেলসিকেই কাউন্টার এটাকে খেলা উচিত। এই বিষয়ে ২০১০ এর ফাইনাল স্মরণীয়! সেইবার ইটালীর ইন্টার মিলান এই বায়ার্নকেই কৌশলী খেলায় ২-০ গোলে পরাজিত করেছিল। ইন্টারে একমাত্র তারকা ছিল ওয়েসলি স্নাইডার।
ইন্টার যে খুব পরিশ্রমী ও গতির খেলা খেলেছে তা নয়। বায়ার্নের খেলার কৌশলের উপরই তাদের খেলাকে গুছিয়ে খেলেছে। যদিও আর্জেন্টাইন দিয়েগো মিলিতো খুব ঠান্ডা মাথায় দুটি চমৎকার গোল করেছিল কিন্তু আসল স্তম্ভ গড়েছিলেন পর্তূগীজ কোচ জোসে মরিনহো! বিশ্বের অন্যতম সেরা কোচ এবং ইটালিয়ান ফুটবলের কৌশল দুটোই বায়ার্নকে কুপোকাত করে। এখন দেখার বিষয় চেলসির ইটালিয়ান কোচ রবার্টো ডি ম্যাটেও কিভাবে তার দলকে খেলান। আবারও বলতে হচ্ছে কেবল মাত্র কৌশলই পারে বায়ার্নকে পরাজিত করতে।
বায়ার্ন যে তাদের সর্বশক্তি উজাড় করে দিবে তাতে কোন সন্দেহ নেই। এর বিপরীতে চেলসি কি ন্যুক্যাম্পের মত দৃঢ়তার সাথে রক্ষণভাগ সামলে কৌশলে গোল করতে পারবে? এটা জানার জন্য আজকে আমাদের ম্যাচ দেখতে হবে।
আমি ফুটবলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আর্জেন্টিনা ও ইটালীর সমর্থক হলেও মনে করি ইংলিশ ফুটবল লীগ পৃথিবীর সেরা। তাই ক্লাব ফুটবল লেভেলে সব সময় ইংল্যান্ডের ক্লাব গুলোকেই সমর্থন করি। যদিও ম্যান ইউ আমার ফেভারিট তবে আজকের ম্যাচে চেলসিকেই সমর্থন করব! অবশ্যও এও চাই ফাইনাল ম্যাচটা যেন প্রাণবন্ত ও উপভোগ্য হয়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।