আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রসঙ্গ শিক্ষক নিয়োগ ও খুলনা ইউনিভির্সিটির কথা

মমমমমম অনেক কিছু দেখছি অনেক কিছু শিখছি কিন্তু আমরা ভাল কিছু শিখছি না । কথায় কথায় আমরা বলি শিক্ষকরাই জাতির মেরুদন্ড । কথাটা একদম মিথ্যা না । যদি আমরা আমাদের কাল জয়ী শিক্ষকদের দিকে তাকাই তাহলে বুঝতে পারব ব্যাপারটা। তারা ধরে বেধে গরু গাধা কে মানুষ করে তোলেন।

ভাল একজন শিক্ষকই পারেন একটা পুরো একটা সমাজকে জাগিয়ে তুলতে। আজ আমদের শ্রধেয় শিক্ষকরা রাস্তায় মার খাই পুলিশের হাতে কারন তারা দেশের কথা বলেন মানুষের দেশপ্রেমকে জাগ্রত করেন। সমাজে তাদের প্রয়োজনীয়তা অশেষ। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের মত জায়গায় তাদের প্রয়োজন স্ব থেকে বেশি। বিশ্ববিদ্যালয় এমন একটা জায়গা যেখানে মানুষের চিন্তা-চেতনা পরিপূর্ণতা লাভ করে।

এই সকল জায়গায় দরকার সবথেকে ভাল মনের মেধাবী, উন্নত চিন্তা-চেতনার অধিকরী ব্যক্তিদের যারা সব মোহকে পাশ কাটিয়ে তার ছাত্রদের জ্ঞানের আলোয় উদ্ভাসিত করবে। আজ কি হচ্ছে ? আজ কাল শিক্ষক নিয়োগের নামে ভোটার শিক্ষক তৈরি করা হচ্ছে। এটা যে কেবল দুই একটা জায়গার ব্যাপার তা নয় এটা সমগ্র বাংলাদেশ এ ছেয়ে গেছে। আমি সরল কথা বলতে পছন্দ করি। আমার কথা হল যে, আপনি যদি আপনার থেকে কম যোগ্যতা সম্পন্ন ব্যক্তিকে শিক্ষক হিসাবে নিয়োগদেন তাহলে সে কিভাবে ভাল হবে, সে ও ভবিষ্যতে একই কাজ করবে ।

এভাবে ভাল ছাত্রদের পথ বন্ধ করার অধিকার কি উপাচার্যদের আছি? কিসের বোর্ড, যারা বোর্ডে থাকে তারা তো হুক্কুমুক্কু পাবলিক । সোনা বাদ দিয়ে কয়লা নিয়ে তা থেকে আর যায় হোক কালা রঙ যাবে না। আমাদের দেশে শিক্ষক নিয়োগের কোন নীতিমালা আছে বলে আমি মনে করি না। সেই মান্ধাতার আমলের মত যে প্রথম হবে সেই স্যার হবে, এই নিয়ম মেনে চলছে নিয়োগ প্রক্রিয়া। এতেও হয়ত মাঝে মধ্যে কিছু ভাল ছেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের মত জায়গায় নিয়োগ পাই, কিন্তু এখন সেই নিয়ম ও মানা হচ্ছে না।

যার মামা, চাচা আছে সেই স্যার হিসবে নিয়োগ পাছে কালে ভদ্রে কিছু ভাল ছেলে যাচ্ছে। ভাল শিক্ষক আর ভাল ছাত্রের মধ্যে বিস্তর ফারাক রয়েছে। মুখস্ত করে হয়ত ভাল রেজাল্ট করা যায় কিন্তু ভাল ছাত্র সব সময় ভাল শিক্ষক হয় না। কারন ভালো শিক্ষক হতে গেলে কিছু বেসিক জিনিসের দরকার হয়। আর তা না থাকলে ভাল শিক্ষক হওয়া সম্ভব না।

যে ব্যক্তি নিজে বোঝে ও অন্য মানুষের ভিতরে তার নিজের জ্ঞান সঞ্চারিত করতে পারে সে ব্যক্তি শিক্ষক হবার যোগ্যতা রাখে। সবার বোঝনোর ক্ষমতা সমান থাকে না, কিন্ত নুন্যতম বোঝনোর ক্ষমতা না থাকলে সে কিভাবে শিক্ষক হবে। একজন শিক্ষক বেবল তার ছাত্রদের যে পড়াশোনার ক্ষেত্রে এগিয়ে নিয়ে যাবে এটা ভুল ধারনা , ছাত্রদের, পড়াশোনার পাশাপাশি সহশিক্ষা কার্যক্রমে(কবিতা, গান, নাটক, মানবসেবা, সমাজনীতি, বিতর্ক ও অনান্য) এগিয়ে নিয়ে যাবার দায়িত্ব শিক্ষকের। যারা এসবের সাথে নিজেকে না জড়িত রাখল তারা কিভাবে ভবিষ্যতে ছাত্রদের এগিয়ে নিয়ে যাবে। সক্রেটিস অনেক বড় শিক্ষক ছিল কারন সে সহজে মানুষ কে বোঝতে পারত।

আমাদের দেশে কোন নীতিমালা নেই বলেই আমরা ভাল শিক্ষক পাই না আর জাতি বঞ্চিত হচ্ছে তাদের অগ্রগতি থেকে। কেন একজন ছাত্র লবিং করবে শিক্ষক হবার জন্য? কেন শিক্ষক নিয়োগের সময় তার রাজনৈতিক পরিচয় দেখতে হবে? কেন তার যোগ্যতা কে বিবেচনাই আনা হবে না? আমার আজকের কথার আবতারনা খুলনা ইউনিভার্সিটির এফ এম আর টী বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের প্রতিবাদ স্বরূপ। কিছুদিন আগে নতুন করে ৩ জনকে শিক্ষক হিসবে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে। যাদের ভিতর দুই জন বিভিন্ন বর্ষের ১ম ও একজন না প্রথম না ৩য়। তারা হতে পারে কেতাবি জ্ঞনে ১ম কিন্তু বাস্তব জ্ঞানে শূন্য।

আজকাল ১ম বানান হয়। তেমনি তারা দুজন । তাদের থেকে অন্য ব্যক্তিরা সেদিনের ভাইবাতে উপস্থিত ছিল। তাদের ভিতর একজন শিক্ষক ও ছিল যে নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেরত আসতে চেয়েছিল। এছাড়া অন্য ব্যক্তিরা ছিল যার বাইরে থেকে পড়াশোনা করে এসেছিল।

যা হোক বড় বড় ব্যক্তিরা যাদের যোগ্য মনে করেছে তাদের নিয়েছে। এতে কিছু না হোক ভোট ত বেড়েছে মাননীয় উপাচার্যের। পদ নিয়ে ত ভয় নেই। আজকাল খুলনা ভার্সিটির কিছু বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের ব্যাপারে প্রধান যোগ্যতা হয়ে দাড়িয়েছে বিভাগের স্যারদের দালালি , তাদের বাজারের ব্যাগ বয়ে দেওয়া, তাদের ছেলে মেয়েদের পড়ান, নিয়োগ প্রাপ্তদের ভিতর একজন আছে, যার অন্যতম যোগ্যতা মাননীয় উপাচার্যের মেয়েকে বিভিন্ন জায়গায় ভর্তি পরীক্ষা দিতে নিয়ে যাওয়া ও তার বিভিন্ন ডকুমেন্ট রেডি করে দেওয়া। আর একজন আছে যার যোগ্যতা ছিল যে, সে এক জুনিয়র শিক্ষককে ভারতে নিয়ে গেছিল অবশ্য ওই জুনিয়র শিক্ষক চিকিৎসার জন্য গিয়েছিলেন এর পর ওই শিক্ষক ই তার হয়ে লবিং করছেন বলে জানা গেছে, এবং ওই শিক্ষক মাননীয় উপাচার্যের খুব কাছের মানুষ বলে সবাই জানে।

আমি তাদের আমার ছাত্র জীবনে কোনদিন কোন মানবসেবা ধর্মী কাজে ত দূরে থাক কোন সামাজিক কাজে দেখিনি। তাহলে কেন এই সব আর্বজনাকে নিয়োগ দিয়ে বিভাগটাকে ভাগাড়ে পরিনত করতে হবে। এরা কি শিখবে কেবল আল্লাহ-ভগবান ই জানেন। যে দুইটা ছেলেকে নেওয়া হইয়েছে তাদের সামাজিক মেলামেশা যেমন ভাল না তেমন বোঝানোর কোন ক্ষমতা শুন্য। আর যে মেয়েটাকে নেওয়া হয়েছে তার কোন যোগ্যতাই নেই।

তার যোগ্যতা তার বাবা। ব্যাপারটা এমন হয়ে দাড়িয়েছে যে যার কোন গতি নেই তাকে ভার্সিটিতে ঢুকিয়ে দাও। এর আগেও মাননীয় উপাচার্য একটা আগাছাকে বৈজ্ঞনিক কর্মকর্তা হিসবে নিয়োগ দিয়েছিলেন তার প্রতিবাদ করতে যেয়ে পারিনি। ০৫ ব্যাচ থেকে তাকে নেওয়া হয়েছে অথচ ০৫ ব্যাচের ১ম মেহেদি হাসান এসেছিল ফিনল্যান্ড থেকে, কিন্তু দুঃখের বিষয় সে মৌখিক পরীক্ষার কার্ডের জন্য দেরি করতেছিল। সে থাকাকালীন সময়ে কার্ড ছাড়া হয়নি, শুধু তাই না সে যেদিন বিমানে চড়ছে সেই দিন বিকাল বেলায় অন্য প্রার্থীদের ফোন করে মৌখিক পরীক্ষার তারিখ জানান হয়।

কি ঘৃণ্য রাজনীতি ও কোন প্রতিবাদ করেনি তাই আমি করছি। এর এক বড় ভাই জার্মান থেকে আসেনি সব জানে বলে। এর নাম যদি হয় শিক্ষক নিয়োগ তাহলে ধিক । অনান্য দেশে পরীক্ষামূলক ভাবে প্রাথমিক নিয়োগ দেওয়া হয় একাধিক ব্যক্তিকে তাদের ভিতর থেকে পরে দুই এক জন কে নেওয়া হয়, এখানে তারা কেমন ক্লাস নেয় এটা খুবই গুরুত্বের সাথে নেওয়া হয় এবং ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের মার্কিং করে। আমাদের এখানে দরে এনে শিক্ষক বানিয়ে দেওয়া হয়।

এর জন্য অন্য সিনিয়র শিক্ষকরাও দায়ী। শিক্ষক নিয়োগের জন্য কিছু নীতিমালা থাকা উচিত যেমন নিরপেক্ষ কমিটি অবশ্যই উপাচার্য ও বিভাগীয় প্রধান বাদে, সেটা হবে গোপন কমিটি যেন প্রার্থীরা জানতে না পারে এট লবিং ঠেকাবে। নুন্যতম সি জি পি এ , কেবল প্রথম শ্রেনী হলে হবে না। তাহলে মেধাবী ও সৃজনশীল ব্যক্তিরা সু্যোগ পাবে। যথাযোগ্য মূল্যয়ন পরীক্ষা ব্যবস্থা ও নির্দিষ্ট পাশ মার্ক।

এতে কেতাবী বুদ্ধীধারীদের পাশাপাশি অন্য ভালরাও সুযোগ পাবে। ছাত্র-ছাত্রীদের গোপন মার্কিং এর ব্যবস্থা। গ্রহনযোগ্যতা যাচাই হবে। কমপক্ষে মাস্টার্স পাশ করা থাকতে হবে, বাইরের ডিগ্রী থাকলে বিবেচনায় আনতে হবে। অভিজ্ঞ্ররা সুযোগ পাবে।

সামাজিক কার্যাবলীকে বিবেচনায় আনতে হবে। পরবর্তীতে নেতৃত্বদানের মত মানুষ আসার পথ তৈরি হবে। রাজনৈতিক পরিচয়কে বিবেচনায় আনা যাবে না, তেমনি ধর্মের ব্যাপার ও আনা যাবে না। ছোট একটা গল্প বলি একবার এক্সম্যান যশোর এ এক বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রার্থী হয়েছিল। পরে তাকে প্রয়োজনীয় যোগ্যতার অভাবে বাদ দেওয়া হয়।

সে এ্টা ফোন করে জেনেছিল। পরে যাকে নেওয়া হয় তার নাম স্পাইডার ম্যান, সে আবার এক্সম্যানের ১ বছরের সিনিয়র যার যোগ্যতা এক্সম্যানের চেয়ে অনেক কম। তার যোগ্যতা তার বড় ভাই অনেক বড় নেতা ছিল , এখন ও আছে। সেই স্পাইডারম্যানের সু ঃনাম এখন দূর থেকেও শোনা যায় যে সে কেমন ক্লাস করায়। এক্সম্যান যশোরের রেজিস্ট্রারকে ফোন করে জানতে চাই তার কি অযোগ্যতা ছিল পরে সে হুক্কুমুক্কু কথা বললে এক্সম্যান বলে স্পাইড্যারমানের কি যোগ্যতা ছিল যে তাকে নেওয়া হল? তখন সে বলল সেটা আন্দাজ করে নেন...........................।

আশাকরি ভার্সিটির সবাই বুঝবে। আর নামগুলো বলে সবাই কে লজ্জায় ফেলব না। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।