ক্ষেতা পুড়ি তোর ভালবাসার- ফিরিয়ে দে আগের সহজ জীবন আমার। ।
প্রেমে ব্যর্থ হবার পর থেকে মনে হচ্ছে জীবনটা বুঝি উলট-পালট হয়ে গেলো। আমার খেতে ভালো লাগে না,শুতে ভালো লাগে না। গান বই কিছুই ভালো লাগে না।
ফেইসবুক,টুইটার কিছু না। দুঃখটা কারো সাথে শেয়ার করতে পারলে ভালো লাগত-তা সম্ভব না। কারন তাকে নিয়ে আমি খুব উচ্চ ধারনা পোষন করতাম। বন্ধুরা বলত আমি প্রেমে অন্ধ, তারা সত্য দিকটা উন্মোচিত করতে গেলে তাদের সাথে ঝগড়ার অবস্থা হয়ে যেতো। আমার আড্ডা ভালো লাগে না, আবার একা থাকতে ভালো লাগে না।
সব মিলিয়ে জটিল-যন্ত্রনাময় একটা অবস্থা। দুনিয়াতে নিজেকে অবাঞ্চিত বস্তু বলে মনে হয়। নিজেকে আগে কখনো এতটা অসহায় বলে মনে হয় নাই। দুনিয়াতে হঠাৎ করে যেন আমি প্রচন্ড একা, বন্ধুবিহীন হয়ে গেলাম। আমার যেন কিছুই নেই, আমি যেন দাড়িয়ে আছি এক প্রচন্ড প্রান্তরের শেষ মাথায়- চারদিকে শুনশান নিরবতা কেবল ভাংগনের শব্দ ছাড়া।
আমার সামনে এক প্রকান্ড নদী- সে ধেয়ে আসছে, ভেংগে আসছে তীব্র গতিতে যেন আমাকে গ্রাস করতে। হাজারো মানুষের ভীড়ে আমি একা। চারদিকে এত কোলাহল, আমি যেন সব কিছুর মাঝে অন্ধ-বধির হয়ে গেছি। কিছুই দেখছি না, কিছুই শুনছি না। খালি হেটে বেড়াই।
ফার্মগেইট থেকে শাহবাগ, শাহবাগ থেকে নিউমার্কেট,নিউমার্কেট-আজিমপুর-চানখারপুল-গুলিস্তান-সদরঘাট। কিংবা মিরপুর-মহাখালি-বনানি-গুলসান-বারিধারা-বাড্ডা-উত্তরা। আমার খালি হাটতে ভালো লাগতো, আমি হাটতাম আর নিজেকে প্রবোধ দিতাম-“নাহ, এ নিয়ে দঃখ করার কিছু নেই,এটাই নিয়ম। অতীত নিয়ে আবেগ-প্রবন হবো না। যা হবার হয়ে গেছে,শেষ।
আগামির দিকে চোখ রাখতে হবে। স্মৃতির পিছুটান ক্ষতিকর, দূর্বল করে দেয় মানুষকে। সহজভাবে গ্রহন করব সবকিছুকে। যতদিন বেচে আছি-সহজভাবে বাচব,নিজের জন্য বাচব। ”নিজের প্রবোধগুলো নিজের কাছেই প্রহসনের মত মনে হয়।
প্রবোধগুলো কোন এক অদৃশ্য দেয়ালে বাধা পেয়ে ফিরে আসে, আঘাত করে। রক্তাক্ত করে আমাকে, আমার প্রেমিক সত্তাকে। আর আত্নহত্যা করার সহজ উপায় নিয়ে ভাবতাম। সোহরাওয়ার্দী হসপিটালের সামনের পাচটি ফার্মেসী থেকে দশটি ঘুমের বড়ি কিনে পবিত্র একটা দিন খুজতে লাগলাম। এই যখন অবস্থা,তখন একদিন…………………………….।
ক্যাম্পাসে বসে সবাই আড্ডা দিচ্ছি,এমন সময় এক বন্ধু বলে,দোস্ত Bluetooth টা অন করত। মজার একটা জিনিস দেবো। আমি বলি কি?দুইটা পর্ন নিয়ে যা,সে বলে। আমি বলি না রে দোস্ত এসব আর ভাল লাগেনা। তবুও জোর করে দিলো-আরে নে নে, পুরা বাংলা মাল।
রেইপ ভিডিও দেখে মজা পাবি। বাসায় এসে ফাইল দুইটা পিসিতে কপি করি।
প্রথম ভিডিওটা আমি আটবার চেষ্টা করেও পুরোপুরি দেখতে পারি নাই। একটি মেয়েকে কীভাবে প্রতারিত করা হয়েছিলো,বোকা মেয়েকে কীভাবে প্রতারিত হয়েছিলো-তারই রিয়েল ভিডিও। মেয়েটির জন্য আমার খুব মায়া হচ্ছিলো।
আমার শরীরটা বারবার কেপে উঠছিলো। মেয়েটিকে আমার নিজের বোন মনে হচ্ছিলো। আর ঘটনাটি যেনো বাস্তবে ঘটছে। একজন ভাইয়ের সামনে তার বোন সর্বস্ব হারাচ্ছে অথচ ভাইটি কিছু এ করতে পারছে না। ফাইলটি বারবার ওপেন করি,আবার অফ করি।
মেয়েটিকে রক্ষা করতে না পারি,অন্তত তার লজ্জাটি তো আমি দেখলাম না। একজন লোকের কাছে থাক না তার গোপন শরীরটা গোপন। কৌতূহলি মন নবম চেষ্টায় সম্পূর্ন ভিডিওটি দেখলো। খুবই কষ্টকর ও দঃখজনক একটা ব্যাপার। মানুষের যে কত রকম দঃখ থাকতে পারে।
তার কষ্টের কাছে নিজের কষ্টগুলোকে তুচ্ছ,মেকি এবং আরোপিত মনে হলো। মেয়েটি যখন আমারে ছ্যাইড়া দেন ছ্যাইড়া দেন বলে চিৎকার করছিলো,সত্যি তখন আমারে চোখে পানি চলে আসছিলো। আমার কাছে কেনো জানি মনে হচ্ছিলো এই পশুটার সাথে একাত্তরের পাক আর্মিদের কোনো প্রভেদ নাই। পরে পশুটা নাম জেনেছিলাম পরিমল। আর এই ঘটনা নিয়ে কতকিছুই না ঘটে গিয়েছিলো দেশের সেরা স্কুলটিতে,সারা দেশে।
যুদ্ধাপরাধীর বিচার বিচার করে মুখে ফেনা তোলা সরকারের নগ্নরূপ দেখেছি নব্য গোপালগঞ্জীয় রাজাকারদের বাচাতে।
ওইদিন আর ২য় ভিডিওটা দেখা হলোনা। টিউশনিতে চলে গেলাম। কিন্তু গিয়ে দেখলাম বাসায় কেউ নেই। চলে আসলাম,পরদিন গিয়ে দেখি যাকে পড়াবো সে নেই।
তার ফিরে আসলাম। তিন দিন পর আবার পড়ানোর ডেট। রাতে ফেইসবুকে বসার সময় মনে হলো ২য় ভিডিওটা দেখি।
এটা একটা “স্বেচ্ছা-মরণ”। সম্ভবত প্রেমিক-প্রেমিকা হবে।
ছেলেটি শুধু শুয়ে শুয়ে ভিডিও করছে আর যা করার মেয়েটিই করছে। শেষে মেয়েটি ছেলেটির উরু ধরে এমন মুগ্ধ ভাবে তাকালো যা অবাক করার মত। কিছু কিছু দৃশ্য মানুষকে মুহূতের মধ্যে অন্যরকম করে দেয়, মনের সবচেয়ে অন্ধকার জায়গায় আলো ফেলে। সব বাধা,সংকোচ দূর করে দেয়। এটিও ঠিক তেমন একটি দৃশ্য।
এমন প্রেমময় দৃষ্টি নিয়ে কম প্রেমিকাই তার প্রেমিকের দিকে তাকিয়েছে। অন্তত আমার প্রেমিকার দৃষ্টি কখনোই এত প্রেমময় ছিলো না। এমন প্রেমময় দৃষ্টি দেখে আমার ছেলেটিকে হিংসা করতে ইচ্ছা করছিলো। মেয়েটির চরিত্রহীনা দশ্যটি আমার কাছে তার পবিত্রতা হয়ে ধরা দিলো।
আমার কেনো জানি মেয়েটিকে মনে হচ্ছিলো তাকে আমি চিনি,কোথায় যেনো দেখেছি।
তার কথা বলার ভঙ্গিটি আমার খুব পরিচিত লাগছিলো। কম আলোয় মোবাইলে ভিডিও করা বলে আমি তাকে চিনতে পারছিলাম না। তিন্ দিন পর টিউশনিতে গেলাম। ছাত্রীর আম্মা বললো, স্যার এই নিন আপনার টাকা। আপনাকে আর আসতে হবে না।
মেজ়াজটা চরম খারাপ হয়ে গেলো। এখন আমার খরচ চলবে কেমন করে। টিউশনি পাওয়ার মত কঠিন কাজ আর এই ঢাকা শহরে আর একটাও নাই। মেজাজ ঠিক করতে ছাত্রীর বাসার সামনে দোকানে গেলাম সিগারেট কিনতে। দোকানদার বলে মামারে দেখি প্রতিদিন আসেন আবার না পড়াইয়াই যান গা।
আমি বলি যারে পড়ামু সে তো বাসায় নাই। দোকানদার বলে,থাকব কেমনে, নানির বাড়ী পাঠাইয়া দিছে। আমি বলি কেন?আরে আপনার ছাত্রী তো প্রভা হয়ে গেছে।
রাতে বাসায় এসে ২য় ভিডিওটা অন করি,আমার কাছে সব ক্লিয়ার হয়ে যায়। হ্যা এই মেয়েটিকেই আমি গত তিন বছর ধরে পড়িয়ে আসছিলাম।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।