আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বার্সেলোনায় পেপ গার্দিওলা আধ্যায়ের সমাপ্তি

খেলার খবর জানতে ভিজিট করুন ইনফো স্পোর্টস বিডি ডটকম। বার্সেলোনার ইতিহাস কি ম্লান হয়ে পরবে? পেপ গার্দিওলা দায়িত্ব ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্তের পর এখন এই প্রশ্নই উঠতে শুরু করেছে। চারবছরে তার কোচিং জীবনে বার্সেলোনার ঘরে এসেছে ১৩টি ট্রফি। তার তত্ত্বাবধানে ৬১৯টি গোল করেছেন বার্সেলোনা আর বিপরীতে গোল হজম করেছেন মাত্র ১৭৮টি। বিশ্বের ক্লাব ফুটবলে এমন কোনো ট্রফি নেই যা বার্সেলোনার ঘরে আসেনি।

মাত্র ১৩ বছর বয়সে পেপ খেলোয়াড় হিসাবে যোগ দেন লা মাসিয়াতে। সেখান থেকেই যাত্রা শুরু গার্দিওলার। ২০০১-এ ঘরের ক্লাব বার্সেলোনার ‘বি’ দলের দায়িত্ব নেন তিনি। তারপর রাইকার্ডের সঙ্গে কাজ করেছেন। ২০০৮-এ মূল দলের দায়িত্ব গ্রহণ।

শেষ চার বছর তিনি একাই ছিলেন মেসিদের দায়িত্বে। শাসন করেছেন গোটা বিশ্ব। তার বিজয় রথ থমকে দাঁড়ালো ২০১২-তে। চেলসির কাছে চ্যাম্পিয়নস লিগ সেমিফাইনালে পরাজিত হওয়ার পর প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। শুরু হয় জল্পনা।

শুক্রবার দুপুরে বার্সেলোনার ক্লাব কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা, তারপর ফুটবলারদের সঙ্গে সভার পর ভিড়ে ঠাসা সাংবাদিক সন্মেলনে তিনি ঘোষণা করে দেন দায়িত্ব ছাড়ার সিদ্ধান্ত। তার পছন্দের ফুটবলারদের অনেকেই তখন পাশে হাজির। তাহলে কী পেপের বিদায়ের পর অনেক ছন্ন ছাড়া হবে বার্সেলোনার ফুটবলের? যে পাসিং ফুটবল ‘পেপ স্টাইল’ নামে স্পেনীয় ফুটবলে ইতোমধ্যে বন্দিত হয়েছে। খোদ বার্সলোনার কর্তারা ঘোষণা করেছেন, ক্লাবের দীর্ঘ ইতিহাসে পেপ গার্দিওলাই সেরা কোচ। তবু জোরজার না করে তার ইচ্ছেকে সন্মান জানিয়েই, তাকে ছেড়ে দেয়া হচ্ছে।

গার্দিওলার সহকারী হিসেবে কাজ করা টিটো ভিলানোভা এখন কোচের দায়িত্ব পালন করবেন। কেন দায়িত্ব ছাড়লেন পেপ? এই প্রশ্ন সর্বত্র। জবাবে তিনি বলেছেন, “সময় থাকতে ছেড়ে দেয়াই ভালো। শেষ চার বছর আমি দায়িত্বে থেকে ফুটবলারদের কাছ থেকে নিয়েছি, তা দেওয়ার চেষ্টা করেছি, দর্শক, সমর্থকদের। কতটা দিতে পেরেছি তা ফুটবলপ্রেমীরাই বলতে পারবেন।

ফুটবলাদের সাহায্য না পেলে কিছুই করতে পারতাম না। যাওয়ার বেলায় কিছুই নিয়ে যাচ্ছি না। হাজার হাজার মানুষের ভালোবাসাকে সঙ্গী করে বিদায় নিচ্ছি। ” পেপ দায়িত্ব ছাড়ার কথা ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে স্পেনের বিভিন্ন সংবাদপত্রে, ট্যুইটারে বার্সেলোনার সমর্থকদের হাহুতাশ প্রকাশ পেয়েছে। কেউ বলেছেন, সিদ্ধান্তটা আরো একবার খতিয়ে দেখলে ভালো হতো।

কেউ প্রশ্ন তুলেছেন, পেপকে ছেড়ে দেয়া উচিত হয়নি বার্সেলোনার। আবার কেউ বলেছেন, ‘পেপ যেখানেই যান তার জন্য রইলো শুভেচ্ছা। ’ কোন নতুন দায়িত্ব নিয়ে পেপ গার্দিওলা বার্সেলোনার ছাড়লেন? চেলসি না স্পেনের জাতীয় দল। গভীর রাত পর্যন্ত এই প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যায়নি। পেপ নিজেও কিছু বলতে চাননি।

সাংবাদিক সন্মেলন শেষে বার্সেলোনার সভাপতি সান্দ্রো রোসেল জড়িয়ে ধরেন পেপকে। বলেন, ‘বার্সেলোনার ইতিহাসে পেপ হচ্ছেন সেরা কোচ। তার বিশেষ পদ্ধতির ফুটবল বিশ্বে জনপ্রিয় হয়েছে। আমরা সন্মান করি পেপকে। ’ সজল চোখে তখন বসে জাভি, ইনিয়েস্তা, পিকেরা।

চার বছরে এরাই ছিলেন পেপ গার্দিওলার বিশ্বস্ত সৈনিক। কিন্তু মেসি কেন নেই? সাংবাদিক সন্মেলন কক্ষেই ফিসফাস। কোনদিকেই চোখে পড়েনি মেসিকে। বিদায় বেলায় তিনি কাছে থাকলে হয়তো আরো ভালো লাগতো পেপের। কিন্তু তা নিয়ে কিছুই প্রকাশ করলেন না তিনি।

৪১ বছর বয়সে তিনি বিশ্ব ফুটবলের এক নম্বর কোচ। বার্সেলোনার ইতিহাসে জায়গা করে নিয়েছিলেন যোহান ক্রুয়েফ। তাকে সরিয়ে পেপ গুয়ার্দিলোর যুগের সূচনা। মাঝে ছিলেন রাইকার্ড। যার সঙ্গী হিসেবে সিনিয়র দলে আত্মপ্রকাশ ঘটেছিল পেপের।

সেই পেপ যুগের সমাপ্তিতে বার্সেলোনার ঘরে বিদায়ের করুণ সুর। চোখে ভাসে সেই পাসিং ফুটবল। একের পর এক গোল। বিধ্বংসী মেসি, জ্যাভি, ইনিয়েস্তারা। নবাগত টিটোকে কী আদৌ সেই ফুটবল ঘরানার পথ ধরে হাঁটবেন? সময় বলে দেবে।

সূত্রঃ Click This Link ।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.