:::
প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য নিয়ে সমুদ্রের বুকে জেগে উঠেছে এক নয়নাভিরাম দ্বীপ। পটুয়াখালীর কুয়াকাটা থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে বঙ্গোপসাগরে জেগে ওঠা এই দ্বীপের নাম ‘চর তুফানিয়া’।
এখন পর্যন্ত এখানে লোকবসতি গড়ে ওঠেনি। আছে নিবিড় সবুজের সমারোহ। এই বৃক্ষরাজির তলায় অগণিত লাল কাঁকড়ার ঝাঁক।
তবে এখন মানুষের আনাগোনা বেড়ে যাওয়ায় লাল কাঁকড়ার আবাসভূমি হুমকির মুখে। বন্য প্রাণী সংরক্ষণ আইনের আওতায় এই দ্বীপকে অভয়ারণ্য ঘোষণা করা উচিত। এতে একদিকে নিরাপদ থাকবে লাল কাঁকড়ার আবাসভূমি, অপরদিকে এই দ্বীপের নির্ধারিত স্থানগুলোয় পর্যটকদের ভ্রমণের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
নামকরণ
বঙ্গোপসাগরের বুকে বিশাল এই দ্বীপ জেগে উঠতে শুরু করে গত শতকের ষাটের দশকে। তখন এই দ্বীপে সাগরের বিশাল বিশাল ঢেউ আছড়ে পড়ত।
সাগরের বিশাল বিশাল ঢেউ এমনভাবে ভেঙে পড়ত, যা দেখলে মনে হতো তুফান বইছে সাগরের বুকে। সেই থেকে জেলেরা এই দ্বীপের নাম দেন ‘চর তুফানিয়া’।
দ্বীপে যাদের বসবাস
চর তুফানিয়া এক অন্য রকম দ্বীপ। এক কথায় এই দ্বীপের মূল বাসিন্দাই হচ্ছে লাল কাঁকড়া। যাদের উপস্থিতিতে সমুদ্রের রুপালি সৈকত রক্তিম হয়ে ওঠে।
জনমানবশূন্য দ্বীপে হঠাৎ করে মানুষের উপস্থিতি ঘটলে দিগ্বিদিক ছুটতে থাকে লাল কাঁকড়াগুলো। দ্রুত আশ্রয় নেয় গর্তে, আবার অনেক কাঁকড়া ব্যস্ত হয়ে পড়ে নিজেদের বালু দিয়ে আড়াল করতে।
দ্বীপটি ছিল লাল কাঁকড়ার নিরাপদ আবাসভূমি। এই দ্বীপের সৈকতজুড়ে অবাধে লাল কাঁকড়ার দল বিচরণ করত। কিন্তু এখন এই দ্বীপে লাল কাঁকড়ারা নিরাপদ নেই।
ইদানীং মানুষের আনাগোনা বেড়ে যাওয়ায় লাল কাঁকড়াদের নিরাপদ আবাসভূমি এখন হুমকির মুখে।
অবস্থান
পটুয়াখালীর নবগঠিত রাঙ্গাবালী উপজেলা থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে এই দ্বীপ। পর্যটন মৌসুমে কুয়াকাটা থেকে কিছু ট্রলার পর্যটকদের নিয়ে চর তুফানিয়ায় যাতায়াত করে। যাতায়াতে সময় লাগে প্রায় তিন ঘণ্টা।
আয়তন
পটুয়াখালী বন বিভাগের তথ্য অনুয়ায়ী এক হাজার একর আয়তনের এই চর তুফানিয়ায় প্রায় ৫০০ একর ভূমিতে বনাঞ্চল রয়েছে।
দ্বীপের দক্ষিণে এক কিলোমিটার দীর্ঘ সৈকত, যা দেখলে মুগ্ধ হতেই হবে।
অপরূপ বৃক্ষরাজি
এই দ্বীপে সবুজের মনোরম সমারোহ। ১৯৭৪-৭৫ ও ২০০৭-০৮ সালে বন বিভাগ দুই দফায় এই দ্বীপে বনায়ন করে। ৫০০ একর বিস্তীর্ণ বনভূমিতে রয়েছে কেওড়া, ছইলা, গেওয়া, বাবলাসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। এ ছাড়াও রয়েছে ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল।
দূর থেকে দেখলে মনে হবে সাগরের বুকচিরে জেগে উঠছে এক সবুজ বনভূমি।
বন বিভাগের বক্তব্য
উপকূলীয় বন বিভাগ, পটুয়াখালীর বিভাগীয় বন কর্মকর্তা গোবিন্দ রায় বলেন, চর তুফানিয়া নয়নাভিরাম একটি দ্বীপ। এই দ্বীপের বিশাল এলাকাজুড়ে লাল কাঁকড়ার বসবাস। সবুজে আচ্ছাদিত এ দ্বীপের অপরূপ সৌন্দর্য নিসন্দেহে পর্যটকদের আকর্ষণ করবে। একটি প্রকল্পের মাধ্যমে চর তুফানিয়াকে পর্যটকদের কাছে আরও আকর্ষণীয় করে গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান তিনি।
[link| Click This Link ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।