আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পলাশীর কুখ্যাত প্রাসাদ ষড়যন্ত্রকারী ঘষেটি বেগমের কপালে কবর জোটেনি ।

আমরা জানি একদিন আমরা মরে যাব এই জন্যেই পৃথিবীটাকে এত সুন্দর লাগে। যদি জানতাম আমাদের মৃত্যু নেই তাহলে পৃথিবীটা কখনোই এত সুন্দর লাগতো না আজ লিখবো পলাশীর প্রসাদ ষড়যন্ত্রকারীর অন্যতম হোতা কুখ্যাত ঘষেটি বেগম সম্পকে। নবাব সিরাজউদ্দৌলার পতনের পর পরবর্তী জীবনে কি ঘটেছিল সে ঘষেটি বেগমের কপালে তার বয়ান নিম্নে পেশ করা হলো br /> তার প্রকৃত নাম মেহেরুন্নেসা বেগম হলেও ইতিহাসে কুচক্রী নারীর প্রতীক হিসেবে তিনি ঠাই পেয়েছেন ঘষেটি বেগম নামে, যা ছিল তার ডাক নাম। সিরাজউদ্দেীলার নানা আলীবর্দী খাঁর ছিল তিন কন্যা। ক্রমানুসারে তাদের নাম ছিল মেহেরুন নেসা ওরফে ঘষেটি বেগম, মায়মুনা বেগম এবং নবাব সিরাজউদ্দৌলার মা আমেনা বেগম।

স্বামীর মৃতুর পর নিঃসন্তান ঘষেটি বেগম স্বামীর অগাত সম্পদের মালিক হন। নবাব তথা প্রসাশনের উপর প্রভাব বিস্তারের লোভে ঘষেটি বেগম চেয়েছিলেন সিরাজ নয় তার মেঝ বোন মায়মুনার পুত্র শওকত জং হোক বাংলা-বিহার-উড়িষ্যার নবাব। কারণ শওক প্রায় সারা দিনই মদ্যপান করতেন। আর চাটুকারদের কথামতো সিদ্ধান্ত নিতেন। তাই তার উপর প্রভাব বিস্তার করা সহজ হতো ঘষেটি বেগমের জন্য ।

তবে আলীবর্দী খাঁনের ইচ্ছায় তার মৃতু্র পর সিরাজউদ্দৌলা মসনদে আরোহণ করলেও ঘষেটি বেগম তা মেনে নিতে পারেননি। ফলে সিরাজউদ্দৌলাকে মসনদ থেকে যে কোন মূল্যে বিতাড়িত করার সুযোগ খুঁজতে থাকেন ঘষেটি বেগম। এদিকে শওকত জং ক্রমান্বয়ে নবাবের অবাধ্য হতে থাকেন। দিল্লির সম্রাট দ্বিতীয় আরওঙ্গজেবের প্ররোচনায় শওকত জং একপর্যায়ে বিদ্রোহী হোয়ে উঠেন। তৎকালীন ২টি কোটি রুপি ঘুষের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি সম্রাট দ্বিতীয় আওরঙ্গজেবের কাছ থেকে বাংলা-বিহার-উড়িষ্যার নবাব হওযার ফরমানও আদায় করে নেন।

এতে ক্ষিপ্ত হয়ে নবাব সিরাজউদ্দৌলা তার তার বিশ্বস্ত ও সাহসী সেনানয়ক মহন লালের নেতৃত্বে একদল সৈন্য পাঠান পুর্নিয়ার রাজ্যের রাজা শওকত জংকে শায়েস্তা করার জন্য। পলাশী যুদ্ধের আট মাস আগে ১৬ অক্টোবর ১৭৫৬ সালে মহন লালের সৈন্যদের আক্রমনের মুখে শওকত জং মাতাল অবস্থায় গুলিবিদ্ধ হন এবং মৃতু বরণ করেন। এ ঘটনা ঘষেটি বেগমকে আরও ক্ষেপিয়ে তোলে এবং প্রতিহিংসার আগুন আরও বাড়িয়ে দেয়। এমটি এক প্রেক্ষাপটে লর্ড ক্লাইভ আর মীর জাফরের সংগে পলাশীর যুদ্ধে গোপন চক্রান্তে হাত মেলান ঘষেটি বেগম। প্রয়োজনে তনি তার বিপুল সম্পদ খরচেরও প্রস্তাব করেন।

আর এমই আশা করেছিলেন ক্লাইভ এবং মীর জাফর কালের বিবর্তনে যুদ্ব এবং নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয় ও মৃতুর মধ্য দিয়ে মীর জাফর ইংরেজদের হাতের পুতুল হয়ে ক্ষমতায় আরোহণ করেন। এতে ক্ষমতায় প্রভাব বিস্তারের যে স্বপন্ন ঘষেটি বেগম দেখেছিলেন তা কার্যত অপুর্ণ থেকে যায় ইংরেজদের আধিপত্যের কারণে। এক পর্যায়ের ঘষেটি বেগম দ্বন্দে জড়িয়ে পড়েন মীর জাফর এবং তার পুত্র মীরনের সংগে। পরিণতিতে ঘষেটি বেগমকে বন্দী করে পাঠিয়ে দেয়া হয় ঢাকার (বর্তমান পুরান ঢাকায়) জিঞ্জরা প্রসাদে। এখানে বন্দী থাকা সত্বেও ঘষেটি বেগম নতুন চাপ শুরু করেন মীর জাফর এবং মিরনের বিরুদ্ধে ।

এতে ক্ষিপ্ত হয়ে এবং ভবিষ্যতে বিপদ হতে পারে ভেবে মীরন ঘষেটি বেগমকে বন্দী অবস্থায় নৌকায়যোগে মুর্শিদাবাদে ফেরত পাঠানোর আদেশ দেন। নৌকা ঘষেটি বেগমকে নিয়ে জিঞ্জিরা প্রসাদ ছেড়ে গেলেও মুর্শিদাবাদে পৌছেনি কোন দিনও। পথেই নৌকাডুবিদে ঘষেটি বেগমের সলিল সমাধি ঘটে বলে ধারণা করা হয়। ফলে বলা যায়, বাংলা-বিহার-উড়িষ্যার মাটিও ঠাই দেয়নি কুচক্রী ঘষেটি বেগমকে। সাড়ে তিন হাত মাটিও জোটেনি এ বিশ্বাসঘাতকিনীর কপালে।

অঢেল-সম্পদ তার কোন কাজেই আসেনি। আজে এ পর্যন্ত-আগামী কাল লিখবো-মীর কাশেম সম্পর্কে । ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ৩৯ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.