বুদ্ধিজীবী হতে ডিগ্রী লাগেনা। ডিনামাইট এবং নোবেল প্রাইজের কথা সবাই জানেন। নোবেল প্রাইজের পেছনে থাকা শ্রদ্ধেয় স্যার আলফ্রেড নোবেলও সর্বজন বিদিত একজন ব্যক্তি। বিস্ফোরক আবিষ্কারের উপর গবেষণার কথাও সবার কমবেশী জানা। আজ আমি তোমাদের বলব ডিনামাইট আবিষ্কারের গল্প।
কিভাবে নোবেল ভাইজান ডিনামাইটের সন্ধান পেলেন! ডিনামাইট! হুম, যা বদলে দিলো যুদ্ধের গতি-প্রকৃতি।
সুইডেনের একজন বিখ্যাত রসায়নদিন এবং ইঞ্জিয়ার হলেন আলফ্রেড নোবেল। নোবেল সহকর্মীদের নিয়ে নাইট্রোগ্লিসারিন স্টাবিলাইজ করার চেষ্টা করছেন। নাইট্রোগ্লিসারিন হচ্ছে একধরণের বিস্ফোরক তরল পদার্থ। নাইট্রোগ্লিসারিন অল্পতেই বিস্ফোরিত হয়।
ছোটখাট কিছু বিস্ফোরণ হতে লাগল। ১৮৬৪ সালে সুইডেনের স্টকহোলে একটা বিস্ফোরন ঘটে। কয়েকজন লোক মারা যায়। তার মধ্যে আলফ্রেড নোবেলের ছোট ভাইও ছিলেন। নোবেল মানসিক ভাবে ব্যাথিত হলেও ভেঙে পড়েন নাই।
তিনি দৃঢ় মনোবল নিয়ে গবেষণা চালিয়ে যেতে লাগলেন।
নাইট্রোগ্লিসারিনের এই ইনস্ট্যাবিলিটির ধর্মের উপর ভিত্তি করে তিনি বিস্ফোরক সঙ্গরক্ষণ করতে শুরু করলেন। একদিন নাইট্রোগ্লিসারিনের পাত্র সরানোর সময় নোবেল খেয়াল করলেন একটি ক্যান ভাঙা। তরল নাইট্রোগ্লিসারিন গড়িয়ে পড়ার কথা। কিন্তু পাত্রের ভেতরে জমাট বেঁধে আছে।
একটি সেডিমেন্টারি রক মিক্সার নাম কাইজেলঘুর (kieselguhr) তরলকে শুষে নিয়েছে। তরল অবস্থায় নাইট্রোগ্লিসারিন নিয়ে নাড়াচড়া করা বিপদজনক। এই ঘটনা থেকে নোবেল আবিষ্কার করলেন যে বিষ্ফরকের সাথে স্টাবিলাইজার হিসেবে kieselguhr মেশালে এটা স্টাবিলাইজ হয়ে পড়ে। নোবেল একটি ফর্মুলা দাড় করালেন যাতে কাইজেলঘুরের সাথে তরল বিষ্ফোরক মেশালে তার কর্মক্ষমতা নষ্ট না হয়।
১৮৬৭ সালে তার আবিষ্কৃত পণ্যের প্যাটেন্ট নাম নিবন্ধন করলেন ডিনামাইট (dynamite) নামে।
এই আবিষ্কার থেকে নোবেল বিপুল পরিমান অর্থ অর্জন করেন। নোবেলের ডিনামাইট আবিষ্কারের পেছনে প্রধান উদ্দেশ্য ছিলো পাহাড় কেটে রাস্তা তৈরী করা। কিন্তু যুদ্ধ বিগ্রহে বিপুল পরিমানে ডিনামাইট ব্যবহার হতে থাকলো। যুদ্ধের বিভীষিকা নোবেলকে ব্যাথিত করল। তিনি মৃত্যুর আগে এক উইল করে গেলেন।
সেই উইলের হাত ধরে প্রবর্তিত হলো নোবেল প্রাইজ। যা আজকের বিশ্বের সব থেকে সম্মানিত পুরষ্কার।
প্রথম বাঙালী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং প্রথম বাংলাদেশী ড: মুহাম্মদ ইউনুস নোবেল পুরস্কার পাওয়ায় আমরা গর্ববোধ করি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।