জানার চেয়ে অজানা বেশি কৃষ্ণ বিবর (BLACK HOLE)
মহাবিশ্বে মহাকাশে মহাকাল- মাঝ,
আমি মানব একাকী ভ্রমি বিস্ময়ে , ভ্রমি বিস্ময়ে । ।
তুমি আছ, বিশ্বনাথ, অসীম রহস্যমাঝে,
নীরবে একাকী আপন মহিমানিলয়ে ।
অনন্ত এ দেশকালে, অগণ্য এ দীপ্ত লোকে,
তুমি আছ মোরে চাহি – আমি চাহি তোমা- পানে ।
--------- কবিগুরু
মহাবিশ্বে রহস্য ঘেরা যত বিষয় আছে তার মধ্যে কৃষ্ণ বিবর অন্যতম ।
মানুষ কল্পনার রাজ্য থেকে বিজ্ঞানের নতুন নতুন দিগন্ত উন্মুচিত করে বাস্তবের সিঁড়িতে পা দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে মহাকালের দিকে । সময়ের সাথে সাথে মানুষের চিন্তা, চেতনা প্রযুক্তির উন্নতির ফলে অনেক অজানা রহস্যের সহজ সমাধান করা সম্ভব হচ্ছে । কৃষ্ণ বিবর সম্পর্কে প্রথম প্রস্তাব করেন ইংরেজ বিজ্ঞানী জন মিশেল ১৭৮৩ সালে একটা গবেষণাপত্রে । যদি পৃথিবী থেকে কোন বস্তু খাড়াভাবে উপরের দিকে নিক্ষেপ করা হলে বস্তুটি উপরের দিকে উঠতে উঠতে মহাকর্ষের প্রভাবে বেগ শূন্য হয়ে ভূ- পৃষ্ঠে ফিরে আসবে । কিন্তু যদি বস্তুটির এমন বেগ দেয়া যায় ,অভিকর্ষের প্রভাবকে অতিক্রম করতে পারে তাহলে বস্তুটি কখনো পৃথিবীতে ফিরে আসবেনা- এ বেগকে মুক্তি বেগ বলে ।
পৃথিবীতে মুক্তি বেগের মান প্রতি সেকেন্ড ১১.২ কিঃমিঃ এবং মঙ্গল গ্রহে ৫.১ কিঃমিঃ সূর্যের ১৬০ কিঃমিঃ। আলোর বেগ সেকেন্ডে ৩০০০০০কিঃমিঃ যার উপর মহাকর্ষরে কোন প্রভাব পড়না । তবে মিচেল যুক্তি দেখিয়েছিলেন এমন তারকা খুজে পাওয়া যাবে যার ভর আনেক বেশী এবং আকারে অনেক ক্ষুদ্র । তাহলে তার মুক্তি বেগ হবে আলোকের বেগের থেকে বেশী । সেখান থেকে কোন আলো বের হতে পারবে না শুধু মহাকর্ষের মাধ্যমে তারকাটির অস্তিত্ব জানা যাবে ।
মহাকর্ষ বল কীভাবে আলোর কনার উপর কাজ করে তা বুঝার জন্য ১৯১৫ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে । অ্যালবারট আইনস্টাইন তার জেনারেল থিউরি অব রিলেটিভিটি দিয়ে তা ব্যাখ্যা করেন এবং গাণিতিকভাবে কৃষ্ণ বিবর থাকতে পারে এ প্রস্তাবকে সুদৃঢ় করে । পুরোপুরি বুঝতে আরও কয়েক দশক আপেক্ষা করতে হয় ।
মুক্তি বেগ (Escape Velocity): সর্বাপেক্ষা কম যে বেগে কোন বস্তুকে (যেমন –রকেট) খাড়া উপরের দিকে নিক্ষেপ করলে মহাকর্ষীয় ক্ষেত্র অতিক্রম করে, পৃথিবী , চাঁদ বা ণক্ষত্রে ফিরে আসেনা সেই বেগকে মুক্তি বেগ বলে।
মুক্তি বেগ = √2GM/R,
G= মহাকর্ষীয় ধ্রুবক, M= ভর , R= ব্যাসার্ধ
অথবা মুক্তি বেগ =√2gR , g= অভিকর্ষজ ত্বরণ ( চলবে )
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।