...............................................................................................................................................................। মাত্র কয়েকদিন আগেই শেষ হল বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্ট বার এসোসিয়েশনের নির্বাচন। যেখানে আইনজীবীরা দলীয় পরিচয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহন করে। দেশের বিচারকার্য পরিচালনা করেন আইনজীবীগন। সমাজের দেশের উপর তাদের যে ভুমিকা তা নিশ্চয়ই অধিক সম্মান প্রদর্শন যোগ্য।
দেশের সমাজের শান্তিশৃঙ্গখলা বজায় রাখতে তাদের ভুমিকা অপরিহার্য। আদালত পাড়ার সমস্যা তারাই কেবল সমাধান করতে পারেন। দু’পক্ষের বিরোধ তারাই মেটাতে পারেন,তাদের আদেশই শিরোধার্য। কোন দেশে আইন পরিচালনা আর বিচারকার্য যদি স্বচ্ছ ভাবে পরিচালিত না হয় সে দেশে কখনোই শান্তি বিরাজ করতে পারেনা। আইনজীবীগনকে সবসময় নিরপেক্ষ ভুমিকা পালন করতে হয়।
তারা কোন পক্ষের হয়ে বৈধ বিচারকার্য পরিচালনা করতে পারেন না। ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে তাদের সততাকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে রাখতে হয়। আমাদের বর্তমান রাজনীতির প্রেক্ষাপট আর আদর্শ সম্পর্কে সবারই জানা,সে বিষয়ে না হয় পরে আসি। এই দেশে আয়তনের তুলনায় অধিক জনসংখ্যা বসবাস করে। সে হিসেবে মানুষে মানুষে একটু কলহ বিবাদ হবার আশংকা একটু বেশি-ই।
প্রতিপক্ষ না থাকলেতো আর ঝগড়া বিবাধ হয় না,মানুষ তো ইচ্ছে করেও পশুর সাথে গিয়ে ঝগড়া করতে পারেনা। কিন্তু তাই বলে এত অসঙ্গতি থাকবে কেন?এক ঘরে কি দশ জন মানুষ কখনো শান্তিতে থাকতে পারেনা?স্বাধীন হবার পর থেকে এই ভুখন্ডের মানুষেরা সর্বোচ্চ কত বছর শান্তিতে ছিলেন আমার খুব জানতে ইচ্ছে করছে। তবে আমাদের প্রাপ্ত অতীত ধারনা থেকে মনে হয় তারাও খুব বেশি সুখে ছিলেন না। স্বাধীনতার স্বাদটা একটু ছুয়ে দেখা মাত্রই শেষ। প্রত্যাশা অনুযায়ী আমাদের প্রাপ্তি আসেনি কোনদিন।
রাজনৈতিক কলহ আমাদের সব স্বাধীনতা হরন করেছে। একটা দুষিত স্রোতের মত ভেসে ভেসে আমাদের প্রতিটি ক্ষেত্রকে নোংরা করে দিয়েছে। সে ধারাবাহিকতায় নোংরা হয়েছে আমাদের আইনজীবী সমাজও তথা দেশের আদালত পাড়াগুলো। যারা ন্যায় বিচারকার্য পরিচালনা করবেন তারা কিভাবে দলীয় বাতাস গায়ে লাগিয়েই আদালত পাড়ায় ঘোরাঘুরি করেন?রাজনৈতিক বিবাদে নিজেদের জড়িয়ে পড়ান?আমার বোধগম্য নয়। আদালত পাড়াকে শক্তিশালী আর অপশাসন মুক্ত করতে না পারলে দেশে কখনো শান্তি আসবেনা।
আমাদের আদালত পাড়ার দলাদলি কি কখনো বন্ধ হবেনা?বিজ্ঞজনদের এই বোধদয় কবে উদয় হবে?তারা কি আদালত পাড়ার সুবিধা পাওয়ার জন্য এই নির্বাচন বন্ধ করছেন না?আর আইনজীবী গন কি তাদের সুবিধা আদায়ের জন্য এই নির্বাচনে অংশগ্রহন করছেন কিংবা উতসাহ বোধ করছেন?এমন পরাধীন আদালত পাড়ার দরকার কি?ভেঙ্গে দিলেই তো হয়। দেশ থেকে বিচারকার্য উঠিয়ে দেন,যে যার মত করে চলবে ফিরবে,হানাহানিতে যে জিতবে সে সুবিধা ভোগ করবে,এককথায় জোর যার মুল্লক তার। –প্রকৃতপক্ষে এ আমাদের এর চাওয়া নয়,আমরা কখনই চাই না আদালত পাড়া ধ্বংশ হোক, এ কেবলই অভিমানের বহিঃপ্রকাশ। আদালত অসহায় মানুষদের একমাত্র অবলম্বন। সব জায়গায় ভুপাতিত হলেও আদালতে গিয়ে সে তার অধিকার ফিরে পাবার সামর্থ্য রাখে।
আইনজীবীগনদের প্রতি বিনীত অনুরোধ,দলীয় মায়াজালে জড়িয়ে পড়া আপনাদের মানায় না,এ কখনো কাম্যও নয়। আপনারা রাজনীতির শিকার হবেন কেন?রাজনৈতিক নেতাদের কথামত আপনাদের চলতে হবে কেন?রাজনৈতিক নেতারা আপনাদের কথামত চলবে। সবার উপরে আপনারা। আদালত পাড়াকে দলীয় প্রভাব মুক্ত করতে আপনাদেরই প্রথম এগিয়ে আসতে হবে। আর বর্তমান বাংলাদেশে তো এর বিকল্পই নেই।
আপনাদের সদইচ্ছাই পারবে দেশের চেহারা পালটে দিতে। আমাদের রাজনীতির মহাজ্ঞানীরা যেভাবে দিনদিন গনতন্ত্র চর্চায় বিশেষজ্ঞ হয়ে উঠছেন তাদের মনে এ শুভ চিন্তার উদয় যে আদৌ হবেনা তা মোটামুটি নিশ্চিত করে বলা যায়। তবুও আমরা হতাশায় ডুবে নই,সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা আমাদের আইনজীবী গনদের মনে এই উপলব্ধিটার অনুভব যেন শীঘ্রই হয়। তাদের শুভ চিন্তার তড়িত প্রয়োগই কেবল আমাদের প্রত্যাশা পুরনে সহায়ক হতে পারে
০৪-০৪-২০১২, ঢাকা
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।