আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা

মহান জাতীয় সংসদে মাননীয় স্পিকার গত ১ ফেব্রুয়ারি, ৭১ নম্বর বিধিতে জনগুরুত্বপূর্ণ নোটিসের ওপর আলোচনার সময় সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার প্রস্তাব করেন। আমরা এই প্রস্তাবকে ধন্যবাদ জানাই। একজন ছাত্রের মাস্টার্স শেষ করতে তার বয়সের প্রায় ২৭ থেকে ২৮ বছর অতিবাহিত হয়। কারণ অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ে সেশনজট, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা, পরীক্ষা পেছানো, দীর্ঘ সময় পর ফলাফল প্রকাশ ইত্যাদি কারণে ৫ বছরের অনার্স ও মাস্টার্স শেষ করতে ৭ থেকে ৮ বছর অথবা তারও বেশি সময় অতিবাহিত হয়। একজন চাকরিপ্রার্থী যে ২ বা ৩ বছর সময় পায় তা খুব স্বল্প।

দেশে প্রচুর বেকার সমস্যা এবং স্বল্পসংখ্যক চাকরির বিজ্ঞাপনের তুলনায় এই সময় খুবই সংক্ষিপ্ত। আমাদের দেশে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ১৮-৩০ বছর। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর চাকরিগুলোর জন্য যে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয় যেখানে শিক্ষাগত যোগ্যতা অনার্স বা মাস্টার্স অথবা উভয়ই চাওয়া হয় সেখানে ১৮ বছর বয়স কতটা যৌক্তিক? কারণ, ১৮ বছর বয়সে অনার্স বা মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন সম্ভব নয়। তবে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর যে সকল চাকরিতে শিক্ষাগত যোগ্যতা এস.এস.সি বা এইচ.এস.সি চাওয়া হয় সে ক্ষেত্রে ১৮ গ্রহণযোগ্য। একজন ছাত্র জ্ঞান অর্জনের জন্য শিক্ষা অর্জন করে এবং প্রাপ্ত জ্ঞানকে দেশের কল্যাণে ব্যয় করার জন্য নিবেদিত থাকে।

কিন্তু বয়সের কারণে যদি প্রাপ্ত জ্ঞানকে দেশের কাজে প্রয়োগ করতে না পারে তাহলে নিজের স্বপ্ন ভেঙে যায়— ফলে সমাজে অপরাধপ্রবণতা বৃদ্ধি পেতে পারে। আমাদের দেশে একজন চাকরিজীবী ৫৯ বছর বয়স পর্যন্ত দেশের জন্য প্রয়োজনীয় হয়, তবে একজন চাকরিপ্রার্থী ৩০ বছর পার হয়ে গেলে দেশের জন্য অপ্রয়োজনীয় হয়ে যায়। উন্নত দেশ তথা যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা এবং পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত আজকে পৃথিবীকে নেতৃত্ব দিচ্ছে। তাদের চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ থেকে ৪০ বছর। আগে ডিগ্রি পাস করে যে সব চাকরিতে আবেদন করা যেতো এখন সেখানে অনার্স বা মাস্টার্স চাওয়া হয়।

আগে অনার্স কোর্স ছিল ৩ বছর এখন ৪ বছর, ডিগ্রি কোর্স ছিল ২ বছর এখন ৩ বছর। শিক্ষা পদ্ধতিতে মানসম্মত শিক্ষাদানের জন্য কোর্সের মেয়াদ বেড়েছে কিন্তু চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়েনি। শিক্ষিত এবং মেধাসম্পন্ন বেকার সমাজ দেশের যেমন বোঝা তেমনি সুযোগ পেলে দেশের সম্পদে পরিণত হতে পারে এবং দেশ ও জাতির কল্যাণে তারা এগিয়ে আসবে। বর্তমান সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড প্রশংসনীয়। যদি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানো হয় তাহলে শিক্ষিত বেকার তরুণ সমাজের কাছে বর্তমান সরকারের গ্রহণযোগ্যতা আরো বৃদ্ধি পাবে।

শুধু বর্তমান প্রজন্ম নয় পরবর্তী প্রজন্ম এর ফলাফল ভোগ করবে। চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানো বর্তমান সময়ের দাবি। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.