জানার আগ্রহ মানুষের চিরন্তন, বই হলো তার বাহন, আইনের মৃত্যু আছে কিন্তু বইয়ের মৃত্যু নেই। বন্ধন এবং স্বাধীনতা দুটি ভিন্ন অর্থ বহনকারী শব্দ। কিন্তু একটি বৈবাহিক বা পারিবারিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে এই দুই পর্যায়কে একই সুতোয় বাঁধতে হয়। বন্ধন এবং স্বাধীনতা দাঁড়িয়ে থাকে কিছু ছোট ছোট ভারসাম্যের উপর। একরৈখিক বা স্বেচ্ছাচারের মধ্যে দিয়ে যে বন্ধন সেটি যেমন একটি ভালো সম্পর্কের অন্তরায় তেমনি অবাধ স্বাধীনতা ভোগ বা যাপনের ইচ্ছাটিও সম্পর্কের ভেতর টানাপোড়েন এনে দিতে পারে।
যেমন ধরুন: আমরা অনেকেই আমাদের সঙ্গীটর প্রতি অতিমাত্রায় কেয়ারিং। এটি হয়ত নানা কারণেই আমরা করে থাকি কিন্তু পাশাপাশি আমাদের এটাও ভেবে দেখতে হবে যে, এতে করে সঙ্গীটির স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ হচ্ছে কি না। ফলে নিজেদের সম্পর্কের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে আমাদের কিছু বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে: প্রতিটি সম্পর্কই কিছু বিশেষ শর্ত মেনে চলে। দুজনেরই দায়িত্ব সেই শর্তগুলো নির্দিষ্ট করা সংসারে একসঙ্গে থাকতে গেলে একে অন্যের প্রতি নির্ভরশীল হয়ে পড়তে হয়। এটাই সংসারের ধর্ম।
কিন্তু কোন একজন অন্যজনের উপর কখনই মাত্রাতিরিক্ত নির্ভরশীল হয়ে পড়বেন না। এটি খুব একটা ভালো পরিণাম বয়ে আনেনা। যদি মনে হয়, সঙ্গীর ব্যবহারের জন্য আপনার স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ হচ্ছে তা হলে বুঝতে হবে সম্পর্কটাকে নতুন করে ঝালিয়ে নেবার সময় এসেছে জেদের বশে কোন কাজ করা ঠিক না। এতে করে স্বীয় যোগ্য সম্মানেরই হানি ঘটে সঙ্গীর সঙ্গে আপনার পছন্দ বা ভালো লাগায় পার্থক্য থাকতেই পারে। এক্ষেত্রে উভয়ের পছন্দের মধ্যে সমঝোতা বজায় থাকা খুবই জরুরি।
এইরকম সমস্যা হাজির হলে মাথা ঠান্ডা রেখে সঙ্গীকে যুক্তি দিয়ে বোঝাতে চেষ্টা করুন। এতে কাজ না হলে পরিবারের বড়দের সাহায্য নিন কিংবা সঙ্গীটি যার কথাকে মান্য করে তার সাহায্য নিন এমনও হতে পারে আপনি একটি খোঁড়া যুক্তি নিয়ে বসে আছেন। এক্ষেত্রে সঙ্গীর সিদ্ধান্তটির যৌক্তিকতা পুনরায় ভেবে দেখুন। প্রয়োজনে মেনে নিন সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে একা না নিয়ে একসাথে নিলে কিংবা সঙ্গীর মতামতকে গুরুত্ব দিলে দেখবেন সমস্যা হচ্ছে না বরং সহযোগিতার মনোভাবই বজায় থাকছে কোন দায়িত্ব পুরোপুরি নিজের উপর টেনে নেবেন না বা সঙ্গীর উপর ছেড়ে দেবেন না। দায়িত্বটি উভয়ের কাছে থাকলে কাজটি সুচারুরূপেই সম্পন্ন হবে দিনে অন্তত একবার পরিবারের সবাই মিলে বসুন।
সেটা হতে পারে কোন এক বেলার খাবার সময় কিংবা টিভি দেখবার সময়। সেইসময় নানা আলাপচারিতায় দৈনন্দিন টুকিটাকি সমস্যাগুলো নিয়ে আলোচনা করুন সবারই সম্পর্কের বাইরেও একটি জগৎ থাকে। বলা যায় থাকাটা একান্ত জরুরি। সেই একান্ত সময়টিতে নিজের যা ভালো লাগে সেটিই করুন। দিনের অন্তত কিছু সময় নিজের জন্য ব্যয় করুন এই নিজস্বতা আপনাকে খুব বেশি পরনির্ভরশীল হতে দেবে না ফলে একধরনের মানসিক স্বাধীনতা আপনি সব সময় উপভোগ করতে পারবেন
সুত্রঃ
------ নাজিয়া কাইয়ুম
দৈনিক আজাদী ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।