আনাড়ী রন্ধন শিল্পীর ব্লগ B-)। ব্লগের বাজে-মানহীন লেখাগুলোর মাস্টার পিস দেখতে চাইলে এই ব্লগারের পোষ্ট গুলো পড়ে দেখতে পারেন। কথা দিচ্ছি, নিরাশ হবেন না। B-)
=হ্যালো
=> কোথায় তুমি ?
=বাইরে আছি, গাড়ীর শব্দ শুনতে পাচ্ছো না?
=> কোথায় যাচ্ছো?
=> তুমি কি সব জায়গায় যাওয়ার সময় আমাকে বলে যাও, আমি কেন কৈফিয়ত দিবো তোমাকে?
= অনেক পাকনা হয়ে গেছো!
=> সেটা আরো আগেই হওয়ার দরকার ছিলো, তাহলে তোমার সাথে তাল মেলাতে পারতাম আর এখন এই দিন দেখতে হতো না।
যাগগে নিজের কাজে বের হয়েছি।
তোমার হানিমুন কেমন হলো?
= প্রমান ছাড়া আজেবাজে কথা বলো না
=> আমি যদি যেদিন প্রমান দেবো হাতে নাতে দেবো এবং সব কিছুর ফয়সালা জায়গায় দাড়িয়ে করে আসবো।
= ঠিক আছে করো যা পারো
****************************************
ফোন রেখে গাড়ীর জানালা দিয়ে তাকিয়ে দশ বছর পেছনের সময়ে চলে যায় নিশা। পারিবারিক ভাবেই বিয়ে হয়েছিলো শান্তর সাথে। বিয়ের পরে আস্তে আস্তে প্রকাশ পায় শান্ত-ভদ্র চেহারার আড়ালের শান্তর আসল রুপ। মদ ও পরনারীর প্রতি আসক্ত প্রচন্ড ভাবে।
অনেক চেষ্টা করেও নেশা ফেরাতে পারেনি শান্তকে। এর মাঝেই কোল জুড়ে আসে একমাত্র মেয়ে নুসাইবা। ভেবেছিলো মেয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে হয়ত এবার ভাল হয়ে যাবে। কিন্তু না, কুকুরের লেজ নাকি বারো বছর সোজা নলের ভেতর রাখলেও সোজা হয়না কখনো। দু'বছর একটু ভাল থাকলেও পরে যেই সেই ।
বাহ্যিক ভাবে অশান্তি পারিবারিক ভাবে মেটানোর চেষ্টা করা হলেও মানসিক যে অশান্তি সেটা নিশা কাকে বলবে? কিভাবে বাবা-মা বা শ্বশুর বাড়ীর লোকদের বলবে যে শান্ত তাকে শারীরিক ভাবে অপমানিত করে প্রতিনিয়ত। পর্ণে আসক্ত শান্তকে কোন ভাবেই বোঝাতে পারেনা সেসব ছবির মেয়েরা মডেল আর নিশা একজন সাধারন মেয়ে, তাদের মতন হওয়া নিশার পক্ষে সম্ভব নয়!
নুসাইবার জন্মের সময় শান্তর নির্দেশ ছিলো নরমাল ডেলিভারি করানো যাবে না এতে নাকি নিশার ফিজিক্যাল সোন্দর্য নষ্ট হয়ে যাবে! কথাটা শুনে নিশার দুনিয়া কেঁপে উঠেছিলো! নিশার কোন কথা-যুক্তি মানতে নারাজ ছিলো শান্ত। ভাগ্য ভাল ছিলো হসপিটালে যাওয়ার পরে ডক্টর বলেছেন সিজারিয়ান দরকার হবে না। তাৎক্ষনিক নিশা বেঁচে গেলেও যার ঝাল প্রতি মুহুর্তে মেটায় শান্ত। পুরোপুরি সাইকো একটা লোক!
গাড়ীর হর্ণে ধ্যান ভংগ হয়ে যায় নিশার।
বাস্তবে ফিরে আসে।
ফোন বের করে কল দেয় শান্তর বড় বোনের বরের কাছে
=> হ্যালো নাজিম ভাই, কেমন আছেন?
= ...........
=> শুনলাম সে নাকি রেণু আপার বাসায় আছে, আপা আমাকে ফোন দিয়েছিলো। বললো বউ নিয়ে-ই এসেছে। খুব জোর করে আপা রেখেছে। আমি খুব ভোরে গেলে নাকি পাবো।
আপনার কি মনে হয় অত ভোরে গেলে পাবো?
=..................
=> সে জন্যেই তো ভয় হচ্ছে, কিন্তু হাতে নাতে ধরতেই হবে আমাকে, আমাকে সে চ্যালেন্জ করেছে। প্রমান দিতে পারলে নাকি শাস্তি যা দেবো মেনে নেবে।
এখন যেতে পারলে ভাল হতো কিন্তু সম্ভব না। আছে ভাই আমি কাল সকালেই পৌছে যাবো।
*********************************
= হ্যা মাহতাব, তোমার ভাইয়া তো রেণু আপার বাসায় উঠেছে তোমার নতুন ভাবীকে নিয়ে।
=> ..............
= আরে না না আমি অনুমান করে বলছি না, সিওর আমি। সে তো আমাকে চ্যালেন্জ করেছে, হাতেনাতে ধরতে পারলে সে নাকি যেকোন শাস্তি মেনে নেবে।
=> ................
= কি করবো বল তো ? জায়গায় দাড়িয়ে সম্পর্ক শেষ করে আসবো।
=>........
= না ভাই তোমাদের তো অনেক জ্বালালাম। আমি তোমাদের কিছুই দিতে পারিনি।
নতুন ভাবী আসবে, সে অনেক ভাল হবে।
=>......
= আচ্ছা রাখি কাল তাহলে রাণু আপার বাসায় দেখা হচ্ছে। থেকো তাহলে।
************************************
= আবার কেন ফোন দিয়েছো?
=>..........
= আমি কোথায় তা দিয়ে তোমার কি দরকার। ঢাকা আসতে পারো নিশ্চিন্তে, আমি মা'র বাড়ী যাচ্ছি।
=> ........
= তুমি বললে আসবো না! সেকি বলছো। ইনফ্যাক্ট তোমার সাথে শেষ বারের মতন দেখা হওয়াটা আমার তো জরুরী।
=>........
= ওকে হ্যাভ আ নাইস টাইম উইথ ইওর নিউ হানী, বাই।
******************************
ফাইনাল ডিসিশন নিয়ে ফেলেছে নিশা। কাল শান্তর বড় বোনের বাসায় গিয়ে হাতে নাতে ধরবে শান্তকে নতুন বিয়ে করা বউয়ের সাথে।
এবং সেখানেই ডিভোর্স দিয়ে সব সম্পর্ক শেষ করে আসবে। এভাবে আর চলতে পারে না। ড্রাইভারের কথায় সম্বিৎ ফিরে পায় নিশা। ব্যাগ নিয়ে নেমে ফ্ল্যাটের দিকে পা বাড়ায়। আজকের রাতটাই শেষ রাত এই ফ্ল্যাটে!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।