আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ধাক্কা না দিলে কোন কিছুরই সৃষ্টি হয় না ।(পুনরায় পোষ্ট দিলাম )

প্রদীপ হালদার,জাতিস্মর। ধাক্কা না দিলে কোন কিছুরই সৃষ্টি হয় না । সৃষ্টির মূলে ধাক্কা । ধাক্কা না দিলে কোন কিছুরই সৃষ্টি হয় না । সৃষ্টির মূলে ধাক্কা ।

ধাক্কা বা বল প্রয়োগ (force) না করলে কোন কিছুরই সৃষ্টি হয় না। এটা আমরা জানি না , তাই অকারণে আমরা ঝগড়া করি । আমি রেলগাড়ীর মধ্যে দাঁড়িয়ে আছি । প্রচণ্ড ভিড় । ভেতরে কোন লোক ওঠার জায়গা নেই ।

পরবর্তী ষ্টেশানে রেলগাড়ীটা থামলো । লোকজনের চীৎকার কানে এলো । দরজার কাছে কেন দাঁড়িয়ে ? ভেতরে যান না দাদা ? অমনি দাদার ঝটপট উত্তর , জায়গা নেই ,ঠেলবেন না । চেঁচামেচি দুই তরফেই হয় দেখেছি । তারপর দেখা গেল , আমি যেখানে দাঁড়িয়েছিলাম সেখান থেকে আরও কিছুটা দূরে চলে গেলাম ।

এটাই ধাক্কা । এই ধাক্কা প্রয়োগ করে মানুষ যে কোন ভিড় গাড়ীতে ওঠে । আর মানুষকে ধাক্কা দিলে , ধাক্কা খাওয়া মানুষটির উত্তর , কেন ধাক্কা দিলেন ? আমার পায়ে পা দিলেন কেন ? তখন এটাই বলতে হয় - ধাক্কা না দিলে আপনি তো সরতেন না । আর আপনাকে সরাতে পেরেছি বলে আমি দাঁড়াবার মতো একটুখানি জায়গা পেয়েছি । অনেক সময় মানুষকে কথার মাধ্যমে ধাক্কা দেওয়া হয় ।

এটা করো । ওটা করো । আমরা করতে বাধ্য হই। গায়ে হাত দিয়ে ধাক্কা দিলে তা সহ্য করা যায়। কথার ধাক্কা সহ্য করা কঠিন।

কিন্তু ধাক্কা না দিলে আপনি আপনার দাঁড়ানোর জায়গা পাবেন না । পৃথিবীর সৃষ্টি সূর্যকে ধাক্কা দেওয়ার ফলে । আমাদেরও সৃষ্টি ঠিক সেইভাবে । ধাক্কা না দিলে যে যেখানে ছিল , সে সেখানেই থাকবে । সবাই বলছে ভূত নেই ।

আমার পাল্টা জবাব ভূত আছে , আছে তাই নয় , আমি ভূত ছিলাম , এটাই আমার দিক থেকে ধাক্কা বা বল প্রয়োগ । কোটি কোটি মানুষের ধাক্কার বিপক্ষে কেবল আমি একা । মৃত্যুর পর ধাক্কা বা বলপ্রয়োগ না হলে আমার শরীরের সব শক্তি বের হতে পারে না । তাহলে মৃত্যুর পর আমার শরীরের ভেতরে যে ধাক্কার সৃষ্টি হয়েছিল তার ফলস্বরূপ আমি ভূত হয়েছিলাম । ধাক্কা দিলে তবে মানুষ ভাল কথা বলতে শেখে ।

এটাই চিরন্তন সত্য । সৃষ্টির মূলে ধাক্কা । যে শত আঘাত সইতে পারে , ক্ষণিকের জন্য ভেঙে পড়ে না , তাকেই তো মানুষ বেশী ভালবাসে । তাই বুঝি মানুষ বেশী ভালবাসে নারীকে । আমাকে তো কেউ ভালবাসে না ।

অল্প আঘাতেই যে ভেঙে পড়ি । সত্যি কি ? না । সমগ্র পৃথিবীর সব মানুষের আঘাত সইবো । আর আমার সত্যকে প্রতিষ্ঠা করবো । নদী নিজের মতো চলে ।

প্রয়োজনে নিজের গতিপথ পরিবর্তন করে । বেশী জল নিয়ে চলতে চলতে দুকূল ভাসিয়ে দিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যায় । তখন মানুষের দুর্দশার সীমা থাকে না । আবার জল কমে গেলে নদী কেমন শান্ত হয়ে যায় । আবার যখন জলই থাকে না , তখন নদী হলো শুকনো মরা নদী ।

তখন কেউ ফিরে তাকায় না । যখন হাজার চাপ আমাকে ঘিরে ধরে , তখন কেবল আমারই কষ্ট হয় , তা ঠিক নয় , আমার সাথে যারা থাকে , কষ্ট তাদেরই বেশী হয় । আমি ঘুমাতে না পারলে তাদেরও ঘুম হয় না । আবার সব চাপ সরিয়ে যখন আমি ঘুমিয়ে পড়ি , তখন আমার চারপাশে যারাই থাকে তারাও ঘুমিয়ে পড়ে । আর যখন কোন চাপই থাকে না , তখন যেন ঘুম আর ভাঙতে চায় না ।

গাছ কত আঘাত সহ্য করে , তাইতো ভালবাসি । ঝড়ের আঘাত , রোদের আঘাত , বৃষ্টির আঘাত , মানুষের আঘাত সহ্য ক'রে বেঁচে থাকে গাছ । যখন আমি বলেছি ভূত আছে ,তখন আমার কাছে আঘাত আসবে । যখন আমি বলেছি আমি ভূত ছিলাম , তখন হাজার গুণ আঘাত আমার দিকে আসবে । এই আঘাতে যখন আমি অস্থির হয়ে উঠবো , তখন সবাই অস্থির হয়ে উঠবে ।

আমার ঘুম কেড়ে নিলে তাদের ঘুম কি হারিয়ে যাবে না ? হারিয়ে যাবে যে । সব আঘাত সহ্য করে যখন আমি নদীর মতো এগিয়ে যেতে পারবো , সেদিনই মানুষ আমাকে ভালবাসবে , তার আগে নয় জানি । ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।