আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

স্টপ মোশন অ্যানিমেটেড ফিল্ম সমাচার

© এই ব্লগের কোন লেখা আংশিক বা সম্পূর্ণ আকারে লেখকের অনুমতি ব্যতীত অন্য কোথাও প্রকাশ করা যাবে না। পোস্টের শিরোনামেই কি তব্দা লাগলো??? আরে বাবা, অ্যানিমেশান ফিল্মতো অ্যানিমেশান ফিল্মই। তাইলে এই স্টপ মোশান অ্যানিমেটেড ফিল্মটা আবার কি? এইটা কি খায় না মাথায় দেয়?? এই "স্টপ মোশন অ্যানিমেশান" এই টার্মটা আমি নিজেই শুনলাম কিছুদিন আগে। একটা মুভি দেখেছিলাম, বেশ ব্যাতিক্রমী। মুভিটা অ্যানিমেশান হলেও পিক্সার কিংবা ড্রিমওয়ার্কসের অ্যানিমেশান মুভি কিংবা জাপানীজ অ্যানিমির সাথে মেলাতে গেলে টোটালি ভুল করবেন।

প্লট, মেকিং আর ভিজ্যুয়ালি পুরা প্রেজেন্টেশানটাই অন্যরকমের। তাছাড়া সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম কিছু ব্যাপার আছে মুভিটাতে যা এটাকে একটু ডার্ক কমেডির ফ্লেভারও এনে দিয়েছে। এই টাইপের অ্যানিমেশান মুভি আমার ধারনা আপনারাও বেশ কয়েকটি দেখেছেন। নেটে হালকা গুতাগুতি করে জানলাম এই ধরনের মুভিকে স্টপ মোশন অ্যানিমেটেড মুভি বলা হয়ে থাকে। ব্যস, সিদ্ধান্ত নিলাম এই টপিকটা নিয়ে সামুতে পোস্ট দেয়ার।

তাহলে প্রথম এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হলো স্টপ মোশন অ্যানিমেশান বলতে আসলে কী বুঝায়? যেহেতু, আমার মুভি মেকিংয়ের টেকনিক্যাল ১% জ্ঞানও আমার নাই তাই উইকিপিডিয়া আর নেট হইতে প্রাপ্ত ডেফিনিশান অনুবাদ করেই আপনাদেরকে বলতে হচ্ছে। আমার যদি কোথাও বুঝানোতে ভূল হয়ে থাকে তবে দয়া করে শুধরে দিবেন। অ্যানিমেশান কি জিনিস এইটা নিয়ে আমাদের সবারই কম বেশি আইডিয়া আছে। কিছু টু-ডি এবং থ্রি-ডি ইমেজকে মোশান কিংবা ভিডিও আকারে দেখানোটাই সোজা কথায় অ্যানিমেশান। এই অ্যানিমেশানের অনেকগুলো টেকনিক আছে।

উইকিতে এই ব্যাপারে একটা দারুন উদাহরন দেয়া আছে। যেখানে দেখা যায়, একটি বল বাউন্স করছে তার পুরা ব্যাপারটি ৬ টি ভিন্ন ভিন্ন অবস্থানের ৬টি ভিন্ন ভিন্ন ছবির মাধ্যমে দেখানো হয়েছে। এখন সেই ছয়টি ভিন্ন অবস্থানের ছবিগুলোকে যদি একটু ফাস্ট ফরোয়ার্ড করে দেখানো হয় তবে মনে হবে বলটি পর্যায়ক্রমিকভাবে যেভাবে বাউন্স করার কথা ঠিক তাই করছে। গোটা জিনিসটা অ্যাকচুয়েলি একধরনের ইল্যুশন যা আমাদের চোখের persistence of vision ধর্মের কারনে হয়ে থাকে। আগেই বলেছি অ্যানিমেশানের জন্য অনেকগুলো টেকনিক আছে, এরমধ্যে সবচেয়ে কমন টেকনিকগুলো সম্পর্কে হালকা একটু আইডিয়া দেই, Traditional animation: উপরে যেই পদ্ধতির কথা বললাম ঐটা অ্যাকচুয়েলি ট্রেডিশনাল অ্যানিমেশানেরই উদাহরন।

এই টেকনিকে একটা দৃশ্যের পর্যায়ক্রমিক বর্ণণাগুলো হাতে আঁকা ছবির মাধ্যমে প্রথমে সাজানো হয়। এক একটি ছবি না বলে সেগুলোকে ফ্রেম বলা যায়। তারপর সেই ইমেজগুলোকে একেকটি বড়ো বড়ো ট্রান্সপারেন্ট পেইজে ট্রেস করা হয়। তারপর সেটাতে রং বসিয়ে পেইজগুলোকে একের পর এক বসিয়ে রস্ট্রাম নামক একটি বিশেষ ক্যামেরার মাধ্যমে দেখানো হয়। এই টেকনিকটি একেবারে শুরুর দিক থেকে বেশ কিছু বছর পর্যন্ত বিপুল পরিমাণে ব্যবহার করা হয়েছে।

তবে একবিংশ শতাব্দীর শুরুতে এই টেকনিকে এসেছে আমূল পরিবর্তন। এখন সেই ট্রেসিং আর ড্রয়িংয়ের ব্যাপারটা পুরোপুরি কম্পিউটার আর সফটও্য়্যারের উপর নির্ভরশীল। ট্রেডিশনাল অ্যানিমেটেড ফিচারের মধ্যে Pinocchio কিংবা The Iron Giant, Beauty and the Beast আর Aladdin- এর মতো অনেক জনপ্রিয় মুভি রয়েছে। আর ট্রেডিশনাল অ্যানিমেটেড ফিচারের সাথে কম্পিউটার টেকনোলজি ইনক্লুডিংয়ের মধ্যে The Lion King ,Spirited Away এইধরনের মুভিগুলোর নাম উল্লেখ করা যেতে পারে। Stop motion: এবার আসি স্টপ মোশনের ব্যাপারে।

ফিজিক্যালি ম্যানুপুলেট করা যায় এমন বস্তুকে বানিয়ে তার মুভমেন্টের মাধ্যমে ভিজ্যুয়াল ইল্যুশান বানানোটাই স্টপ মোশান টেকনিক। সেই বস্তুটি পুতুল হতে পারে কিংবা মাটির নির্মিত কোনো অবয়ব ও হতে পারে। বাদবাকিটা অনেকটা ট্রেডিশনাল অ্যানিমেশানের মতোই। সেই অবজেক্টগুলোকে একটি ফটোগ্রাফিক ফ্রেমে রূপ দিয়ে সেগুলোর পযায়ক্রমিক মুভমেন্টকে সিরিজ আকারে দেখালেই তা স্টপ মোশন অ্যানিমেশান হয়ে গেলো। একটা সহজ উদাহরন দেই।

মনে করুন আপনার কাছে একটা রাবারের পুতুল আছে, যেটি বেশ ফ্লেক্সিবল। এখন সেই পুতুলটিকে দাঁড়ানো অবস্থায় আপনি ক্যামেরা নিয়ে সেটির একটি ছবি তুললেন। এখন আপনি সেই পুতুলটিকে দিয়ে হাই-হ্যালো দেখাতে চান। তাহলে হাই দেখানোর জন্য আপনি পুতুলের হাতটিকে বিভিন্ন অবস্থায় রেখে পর্যায়ক্রমিকভাবে অনেকগুলো ছবি তুলে ফেলুন। এখন সেই ছবিগুলোকে যদি বিশেষ সফটওয়্যারের মাধ্যমে ফাস্ট ফরোয়ার্ড করে দেখান, তাহলেই তৈরি হয়ে গেলো সাদাসিধা স্টপ মোশন অ্যানিমেশান।

এই স্টপ মোশনের ইতিহাস কিন্তু বেশ পুরোনো। সেই ১৮৯৭ সালের The Humpty Dumpty Circus -এ এই টেকনিকটি প্রথম ব্যবহৃত হয়েছিলো। সময়ের আবর্তনে সেই স্টপ মোশন অ্যানিমেশানে এসেছে অনেক গুণগত পরিবতন, Stereoscopic stop motion কিংবা Go motion এর মতো অনেক জটিল ধরানার স্টপ মোশন অ্যানিমেশান টেকনিক এখন চালু রয়েছে। যারা বিস্তারিত পড়াশোনা করতে চান উইকিতে ঢু মেরে আসতে পারেন। সেখানে এইসব টেকনিক সম্পর্কে বেশ ভালো আইডিয়া পাবেন।

হালের অ্যানিমেশান টেকনিকগুলোর মধ্যে কম্পিউটার অ্যানিমেশান, টু-ডি অ্যানিমেশান কিংবা থ্রিডি অ্যানিমেশান এখন বহুলাংশে ব্যবহৃত হচ্ছে, আর হবেই না কেন? ডিজিটালি অ্যানিমেটেড হওয়ায় আগের মতো সময় কিংবা পরিশ্রম সবকিছুই এখন কমে গেছে। নীচের দুইটি ছবি দেখলেই আপনারা ট্রেডিশনাল আর স্টপ মোশনের মধ্যে চূরান্ত পার্থক্যটা বুঝতে পারবেন। ১। ট্রেডিশনাল অ্যানিমেশান: ২। স্টপ মোশন অ্যানিমেশান: ছবি দুইটা খেয়াল করুন।

একটি ঘোড়া দৌড়াচ্ছে, তার ভিন্ন ভিন্ন অবস্থানের ছবি ড্রয়িংয়ের মাধ্যমে এঁকে তাকে দ্রুতলয়ে দেখানো হয়েছে। আর এর পরের ছবিটিতে একটু কয়েন সরে যাচ্ছে তা দেখানোর জন্য মাটির একটি কয়েনকে ভিন্ন ভিন্ন অবস্থানে রেখে তার ছবি তুলে সেটিকে দ্রুতলয়ে দেখানো হয়েছে। আশা করি বুঝতে পেরেছেন। যেহেতু পোস্টটি স্টপ মোশান অ্যানিমেশান মুভি নিয়ে তাই এ সংক্রান্ত মুভির কিছু উদাহরন না দিয়ে পোস্ট শেষ করাটা খুবই বাজে দেখাবে। তাই ঠিক করেছি শুধু নামই নয়, একই সাথে বহুল জনপ্রিয় তিনটি মুভির ছোটোখাটো রিভিউ আর ডাউনলোড লিংক দিয়ে পোস্টটি শেষ করবো।

আসুন, তাহলে শুরু করা যাক, ১। Fantastic Mr. Fox : এই মুভিটি ২০০৯ সালের ২৫ নভেম্বর আমেরিকায় রিলিজ হয়। স্টপ মোশন অ্যানিমেশানের একেবারে পারফেক্ট একটা উদাহরন এই মুভিটি। পরিচালক Wes Anderson এর অ্যানিমেশানে ডেব্যু হয় এই মুভিটির মাধ্যমে। মুভিমেকার হিসেবে ওনাকে এমনিতে কিছুটা অনিয়মিতই বলতে হবে, ১৬ বছরের প্রফেশনাল লাইফে মাত্র ৯টি মুভি বানিয়েছেন তিনি, এর মধ্যে Fantastic Mr. Fox তো আছেই, এছাড়া The Royal Tenenbaums (2001) আর Rushmore (1998) বেশ বিখ্যাত দুইটা মুভি।

এরইমধ্যে পরিচালক Wes Anderson দুইবার অস্কারের নমিনেশান লাভ করেছেন। যাই হোক, এইবারে Fantastic Mr. Fox মুভিটির ব্যাপারে আসি। মুভিটির রানিংটাইম বেশ ছোটো, মাত্র ১ ঘন্টা ২০ মিনিট । এমনিতেই অ্যানিমেশান মুভিগুলো খুব একটা বড়ো হয় না, যতোটুকুই হোক না কেন খুব উপভোগ্য সময় কাটে। এই মুভিটিও কোনো অংশে ব্যতীক্রম নয়।

Roald Dahl এর নভেলকে অ্যাডাপ্ট করে পরিচালক নিজেই চিত্রনাট্য লিখেছেন। মুভিটির কাহিনীতে দেখা যাবে, মি. ফক্স আর তার পরিবারকে। মি. ফক্স আর তার মিসেস, আর তাদের একমাত্র ছেলে অ্যাশকে নিয়ে সুখী পরিবার। অ্যাশের কাজিন ক্রিস্টোফারসন তাদের সাথে থাকতে আসে। এদিকে মি. ফক্স তাদের ছোট্ট বাসা ছেড়ে অন্যত্র বাসা নেয়।

বাসা মানে বড়ো একটা গাছের নীচে মাটি খুঁড়ে সেখানে বাসা বাঁধে। নতুন বাসাটি ছিলো সেখানকার স্থানীয় তিনজন কৃষক Boggis, Bunce আর Bean এর ফার্মগুলোর একেবারে কাছাকাছি। মি. ফক্স তার এক বন্ধুকে নিয়ে বিভিন্ন প্ল্যান করে সেই ফার্মগুলো থেকে মুরগী চুরী করতো। এরপর সেই তিন কৃষক জোটবদ্ধ হয় সেই শিয়ালদের বিনাশ করার জন্য। মানুষের সাথে কি আর শিয়াল পেরে উঠে?? এক্কেবারে নাজেহাল অবস্থা শুরু হয়ে যায়।

এদিকে ফক্সকে না মারা পর্যন্ত শান্তি নেই সেই তিন কৃষকের। কিন্তু মুভির নাম যেখানে Fantastic Mr. Fox সেখানে মি. ফক্স ফ্যান্টাস্টিক কিছুতো করে দেখাবেই। আর তা জানতে হলে মুভিটাতো দেখতেই হবে। দেখে ফেলুন,আশা করি ভীষন ভালো লাগবে । স্টপ মোশান অ্যানিমেশান মুভিগুলোর কমেডি কিংবা হিউমারগুলো একটু অন্যস্বাদের, একটু স্যাটায়ার টাইপ।

দেখতে বেশ ভালোই লাগে। Fantastic Mr. Fox মুভিটিও সেইরকম। মুভিটির সাউন্ডট্র্যাকটাও চমৎকার। আর ডাবিংয়ে চমৎকার ভয়েসের জন্য George Clooney আর Meryl Streep কে আলাদা করে থ্যাংকস জানাতেই হয়। মুভিটির আইএমডিবি রেটিং বেশ ভালো, 7.8/10, আমার পার্সোনাল রেটিং ৮/১০।

মুভিটি Best Achievement in Music আর Best Animated Feature ক্যাটাগরিতে অস্কারের নমিনেশান পেয়েছিলো। অবশ্য সেবছর Up মুভিটি অ্যানিমেশান মুভি হিসেবে অস্কার জিতেছিলো। মিডিয়াফায়ার ডাউনলোড লিংক: (400mb brrip) 1. http://www.mediafire.com/?zd7s916f6ggd54p 2. http://www.mediafire.com/?drwrp8uvwg5uc2b 3. http://www.mediafire.com/?man8av0764krg5c ২। Mary and Max : এই মুভিটিও ২০০৯ সালের। মজার ব্যাপার হচ্ছে, এই মুভিটি যে আইএমডিবি টপ ২৫০ তালিকায় আছে আর এইটার রেটিং যে এতো ভালো অনেকেই তা জানে না।

আমি নিজেই অনেক পরে টপ ২৫০ লিস্ট চেক করতে গিয়ে মুভিটার নাম জানতে পারি। আর এটি অস্ট্রেলিয়াতে অফিসিয়ালি রিলিজ হওয়ায় হলিউড বক্স অফিসেও কোনোপ্রকার নাম গন্ধ ছিলো না। তাই বোধহয় চোখে ফাঁকি দিয়েছে । মুভিটির কাহিনীকার, পরিচালক উভয়েই Adam Elliot, এই ভদ্রলোকের প্রথম ফিচারড মুভিও এটি। এর আগে তিনি কিছু শর্ট মুভি বানিয়েছেন, আইএমডিবিতে তার প্রোফাইল ঘাটতে গিয়ে একটা মজার তথ্য জানতে পারি, আর তা হলো, Adam Elliot শর্ট ফিল্ম / অ্যানিমেটেড ক্যাটাগরীতে ২০০৪ সালে Harvie Krumpet (2003) এর জন্য অস্কার জিতেছিলেন।

সুতরাং Adam Elliot এর প্রতিভা নিয়ে কোনো কথা হবে না, এবার আসি মুভিটি নিয়ে। মুভিটি দুইটি অসম বয়সের এক অন্যরকম বন্ধুত্ব নিয়ে। মুভির সময়কাল ১৯৭০ সালের মাঝামাঝি, অস্ট্রেলিয়ার বসবাসর‌ত আট বছরের এক মেয়ে, নাম মেরি। মেরির কোনো বন্ধু নেই, তার মা দোকার থেকে নিয়মিত জিনিস চুরি করে, মেরির কপালে জন্মদাগ রয়েছে, যার কারনে সে দেখতে তেমন সুন্দর নয়। চোখে ভারী পাওয়ারের চশমা, সবাই তাকে খেপায়।

কে্উ তার বন্ধু হতে চায় না। ভীষন ঘরকুনো এই মেয়েটা একদিন দোকানে আমেরিকার ম্যানহাটনের ফোন বুক দেখতে পায়। সেখানে অনেক মানুষের নাম, ঠিকানা আর ফোন নাম্বার দেয়া। মেরি ঠিক করে ঐখান থেকে একজনকে সে চিঠি লিখে। ম্যাক্স হরোউইথয নামে একজনের ঠিকানা নেয়।

তারপর তাকে একটি চিঠি লিখে, সাথে একটি চকলেটও পাঠায়। এবার আসি, ম্যাক্সের ব্যাপারে। ম্যাক্সের বয়স ৪৪, নিউ ইয়র্কে একা বসবাস করে, তারও তেমন আপনজন বলতে কেউ নাই। বিয়ে থা করেন নাই, একা নিঃসঙ্গ জীবন, ওভারওয়েইট বলে ভীষন আপসেট। কিন্তু খাওয়া দাওয়া খুবই পছন্দ তার, বিশেষ করে চকোলেট ।

মেরির চিঠি পেয়ে ভীষন খুশি হয়, পাল্টা চিঠি পাঠায়। আর এভাবেই শুরু হয় একটা নিখাদ বন্ধুত্ব। আর এভাবেই এগিয়ে যায় কাহিনী। মুভিটির সবচেয়ে পজিটিভ দিক হলো, কাহিনীর সিম্পলিসিটি। প্রায় পুরো সময়টা তাদের চিঠি চালাচালির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে।

কিন্তু সেই সামান্য ব্যাপারটাকে এতোটা অর্থবহ আর চমৎকার ভাবে রিপ্রেজেন্ট করা হয়েছে, রীতিমতো মুগ্ধ হতে হয়। মুভিটা দেড় ঘন্টার, কাহিনীতে কোনোপ্রকার টার্নএরাউন্ড কিংবা টুইস্ট নেই, কিন্তু অসাধারন ফ্লো রয়েছে, আর এটা আপনাকে ধরে রাখবে গোটা সময়টুকু। মুভিটার মাঝে ডার্ক কমেডির ছায়া ব্যাপকভাবে দেখতে পাওয়া যায়। আর মুভিটির এন্ডিংটাও ব্যাতিক্রমী। মুভিটি Berlin International Film Festival সহ অনেক নামী দামী ফেস্টিভ্যালে ব্যাপক প্রশংসিত হয়।

মুভিটির আইএমডিবি রেটিং ৮.২, আর টপ ২৫০ তালিকায় ১৯০ তম অবস্থানে রয়েছে। আমার পার্সোনাল রেটিং ৮.৫/১০। মিডিয়াফায়ার ডাউনলোড লিংক: (350mb brrip) 1. http://www.mediafire.com/?6qc3hb28x3bvwhy 2. http://www.mediafire.com/?kc3js2i4cy3m7zy ৩। Corpse Bride: এই মুভিটা অনেক কমন একটা মুভি। আপনারা অনেকেই হয়তো এইটা আগে দেখেছেন।

বিখ্যাত পরিচালক টিম বার্টনের একটা অসাধারন অ্যানিমেশান মুভি। ডাবিংয়ে রয়েছেন জনি ডেপ, হেলেনা বোনহ্যাম কার্টারের মতো চমৎকার সব অ্যাক্টর-অ্যাক্ট্রেস, যাদের ভয়েসে অসাধারন মায়াবিকতা রয়েছে। সুতরাং এই মুভি যে কতোটা উপভোগ্য হতে পারে সে নিশ্চয়ই বলে বোঝাতে হবে না। মুভিটির পরিচালনার পাশাপাশি স্ক্রীনপ্লে ও লিখেছেন টিম বার্টন স্বয়ং। রানিং লেংথ এজ ইউজ্যুয়াল বেশ কম, প্রায় ৭৫ মিনিটের মতো।

কাহিনীটা বেশ মজার, তবে নামের মতোই অ্যানিমেশানের ক্যারেক্টারগুলো দেখতে খুবই বিদঘুটে আর ভয়ংকর। পিচ্চি পোলাপাইন ভয় পাইতে পারে। সুতরাং একটু সাবধান হওয়া ভালো। এইসব স্কেয়ারি ইমেজ আর অ্যাকশানের জন্য পিজি মানে প্যারেন্টাল গাইডেন্সের ট্যাগ রয়েছে মুভিটায়। যাই হোক, এইবার মুভিটার কাহিনীতে আসি।

টিম বার্টন মানেই অসাধারন কিছু ফ্যান্টাসি। এই মুভিটাও তার ব্যাতিক্রম নয়। ফ্যান্টাসির সাথে অসাধারন কিছু মিউজিক্যাল মিলেমিশে মুভিটাকে চমৎকার একটা জায়গায় দাঁড় করিয়েছে। ১৮০০ সালের কথা, ভিক্টিরিয়ান নামক একটি শহরের দুই পরিবারের মধ্যে একটি বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন হতে চলেছে। দুই পরিবারের উদ্দেশ্য হলো, তার সন্তানকে বিয়ে করিয়ে ঐপক্ষ থেকে যদি কিছু টাকা-পয়সা কিংবা ধন সম্পত্তি বাগানো যায়।

বিয়ের আগের দিন অনুষ্ঠানের রিহার্সালে প্রথম দেখাতেই হবু বর-কনে (ভিক্টর- ভিক্টোরিয়া) একজন আরেকজনের প্রেমে পড়ে যায়, এই বরের চরিত্রে ভয়েস দিয়েছেন জনি ডেপ, আর কনের চরিত্রে এমিলি ওয়াটসন। কিন্তু প্রচন্ড নার্ভাসনেসের কারনে ভিক্টর ওয়েডিং ভাওটি (wedding vow) কিছুতেই বলতে পারছিলেন না, বারবার গুলিয়ে ফেলছিল। সবাই সন্দেহ শুরু করে, হয়তো ভিক্টর হয়তো অন্য কোনো মেয়েকে পছন্দ করে। ভীষন মন খারাপ হয়ে ভিক্টর একা একা পথে হাঁটা শুরু করে আর আপনমনে wedding vow এর কথাগুলো প্র্যাকটিশ করতে থাকে। এক পর্যায়ে একটি গাছের গুঁড়িকে ভিক্টোরিয়া কল্পনা করে আরেকবার সেই wedding vow টি বলে, আর সেই গুঁড়িকে আংটি পড়িয়ে দেয়।

এরপরই ঘটে আশ্চর্য এক ঘটনা। সেই গাছের গুড়ির নিচেই ছিলো একটি কবর। সেই কবর থেকে একটা মেয়ের লাশ জ্যান্ত হয়ে উঠে, আর সে ভিক্টরকে জানায়, এরফলে তার সাথে ভিক্টরের বিয়ে হয়ে গেছে। ঐ মেয়ের ভয়েস দিয়েছেন হেলেনা বোনহ্যাম কার্টার। কাহিনী মোড় দেয় সম্পূর্ণ নতুন একদিকে।

আর চমৎকার কিছু টার্নএরাউন্ড শেষে এন্ডিংটাও হয় দারুন। মুভিটার সবচেয়ে সুন্দর দিক হলো এই মুভির মিউজিক্যালগুলো। লিরিক্স, সাউন্ড প্লাস ভিডিওর রিপ্রেজেন্টেশান। আউটস্ট্যান্ডিং লেভেলের। কাহিনী যথেষ্ট ইনটেনস, দর্শককে ধরে রাখবে অতি সহজেই।

আর পুরা মুভিতেই টিম বার্টনের অসাধারন মেধার ছাপ খুঁজে পাওয়া যায়। মুভিটির আইএমডিবি রেটিং ৭.৪/১০, মুভিটি Best Animated Feature এ অস্কারের জন্য নমিনেটেডও হয়। আমার পার্সোনাল রেটিং ৭.৫/১০। মিডিয়াফায়ার ডাউনলোড লিংক: (500mb brrip) Password: hnmovies.com 1. http://www.mediafire.com/?jmol1ojc6mfln7u 2. http://www.mediafire.com/?2a5984j06n4bad4 3. http://www.mediafire.com/?0r55rvnlgq7rc8a তিনটা পপুলার স্টপ মোশান অ্যানিমেশান মুভির রিভিউ দিলাম, তবে যদি আরো কিছু নাম জানতে চান তাহলে Coraline (2009), Wallace & Gromit in The Curse of the Were-Rabbit (2005) কিংবা The Nightmare Before Christmas (1993) এর নাম বলা যেতে পারে। আজকের পোস্ট এই পর্যন্তই।

অনেক অনেক বড়ো হয়েছে পোস্টটা, হয়তো ভেঙ্গে ভেঙ্গে দুই পর্বে দিতে পারতাম, কিন্তু আসলে এইটা আমার শততম পোস্ট। এই পোস্টের জন্য অনেক খেটেছি তাই একেবারেই পোস্ট দিয়ে দিলাম। বিরক্তির উদ্রেক হলে ক্ষমাপ্রার্থী। বি:দ্র: ডাউনলোড লিংকগুলো দিয়ে সাহায্য করার নাফিজ মুনতাসিরকে আলাদা করে থ্যাংকস। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।