আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

''স্টপ জেনোসাইড'' : সামান্য কথা

নিজের বিষয়ে কিছুই বলিবার নাই

আসসালামু আলাইকুম, শহীদ চলচ্চিত্রকার জহির রায়হানের ''স্টপ জেনোসাইড'' চলচ্চিত্রখানা আবার নতুন করিয়া দেখিবার সুযোগ হইলো। নতুন প্রজন্মের প্রত্যেক নাগরিকের জন্য এই বিখ্যাত ডক্যুমেন্টারিখানা দেখাটা একটি আবশ্যক কর্ম বলিয়া বিবেচনা করি। শুধুই পতাকা উড়াইয়া আর স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়াই শহীদগণের প্রতি সম্মান দেখানো হয় না। শুধুই বক্তৃতা দিয়া আর মুক্তিযুদ্ধের চেতনা-চেতনা বলিয়া চীৎকার করিলেই করিলেই দেশের প্রতি যথাযথ দায়িত্ব পালন করা হয় না। তাহার বাহিরেও আরও কিছু দায়িত্ব থাকিয়া যায়।

তাহার ভিতর একটি হইতেছে মুক্তিযুদ্ধের এইসব নিদর্শনকে সংরক্ষণ করা। তাহাকে জনগণের কাছে নিয়া যাওয়া। ''স্টপ জেনোসাইড'' বিষয়েও আমাদের দায়ত্বের কথা যেন ভুলিয়া না যাই। এই ডকুমেন্টারিখানা অনেকদিন আগে এক কমিউনিস্ট আত্মীয়ার সহিত তাহাদেরই এক পার্টি-সভায় দেখিয়াছিলাম। বিশ্বজনমত গঠনে এই চলচ্চিত্রখানার কোনো তুলনা নাই।

তাহার পরেও কয়েকটি কথা বলিবার রহিয়াছে--- আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম ছিলো মূলত একটি গণতান্ত্রিক সংগ্রামেরই সশস্ত্র রূপ। কিন্তু এইখানে চলচ্চিত্রকার যেভাবে রুশিয়ার লেনিন আর রুশিয়ার জাতীয় সংগীত (মুখে যতই তাহাকে ''কমিউনিস্ট ইন্টারন্যাশনাল'' বলা হউক না কেন) ব্যবহার করিয়াছেন তাহাতে সারা দুনিয়ার মানুষের মনে এই ধারনাটি জন্মানো সহজ ছিলো যে আমাদের সংগ্রাম একটি সমাজতান্ত্রিক আন্দোলন। যাহার কারণে পশ্চিমা দেশগুলার সরকার আর জনগণ যদি আমাদের আন্দোলন হইতে মুখ ফিরাইয়া নিতেন (অনেকেই নিয়াছেন) তবে তাহার জন্য তাহাদের দায়ী করা আনুচিত । আমি বলিতেছি না যে এই চলচ্চিত্রখানার জন্যই তাহারা মুখ ফিরাইয়া নিয়াছিলেন। কিন্তু তেমন-একটা আশঙ্কাকে তো উড়াইয়া দিতে পারি না।

এই হঠকারিতাটি জহির রায়হান কেন করিয়াছিলেন তাহা ঠিক বুঝিতে পারি না। হয়তো নিজস্ব বিশ্বাস আর আবেগকে এইখানে ব্যবহার করিবার সুযোগটি তিনি হাতছাড়া করিতে চাহেন নাই। আরও-একটি কথা। তিনি ভিয়েতনাম হইতে জারমানির হিটলার ইতালীর মুসোলিনি উহাদের নাম ঘৃণার সহিত নিয়াছেন কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে রুশিয়ার স্তালিনের বিষয়ে নীরব। তাহার পরেও একজন চলচ্চিত্রকার হিসাবে জহির রায়হানের কৃতিত্ব অস্বীকার করিবার উপায় নাই।

পরম করুণাময়ের নিকট জহির রায়হানের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করি। সকলে ছহি-ছালামতে থাকিবেন।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।