আউলা মাথার বাউলা পোলা। কাজের চাপে লেখার সময়ই পাইনা। অনেকদিন পর আইজকা লিখলাম। এই টাইপ এর পোস্টে আবার পাবলিক রেসপন্স ভাল পাওয়া যায়না। তাই মনে কিঞ্চিত দুঃখ নিয়াই আবার লিখতেছি।
প্রথম পর্ব এবং দ্বিতীয় পর্ব
---------------------------
গত পর্বে রেজিস্টর নিয়া অনেককিছু লেখা হয়েছিল। আইজকা হইবে এইগুলার কালার কোড আর আপেক্ষিক রোধ এর আলোচনা। চলেন ইস্টাট করি।
যারা এইসব হাবিজাবি নিয়া কাজ করেন বা করেন না তারা দেখবেন যে বাজারে যে আকারে বেশিরভাগ রেজিস্টর গুলা পাওয়া যায় তা মান লেখার জন্য খুবই ছোট। এক্কেরে পিচকা সাইজ।
কিছু লেখার যায়গা প্রায় থাকেই না। তাইলে তো বিপদ। সেই জন্য আবার সেইরকম বুদ্ধি আছে। রোধের গায়ে পাশাপাশি কয়েকটি রঙের দাগ দিয়ে মান বুঝান হয়। এইটাকে কালার কোড বলে।
এর জন্য একটা টেবিল আছে। নিচে দেখানো হয়েছেঃ
সাধারনত যে সব মানের রোধ বেশি ব্যবহার করার প্রয়োজন পড়ে ( সবার অবশ্য লাগেনা !!!) সেগুলাতে ৪ টা দাগ দেয়া থাকে। ৫ দাগের জিনিস আমার এখনও বাংলাদেশের বাজারে চোখে পড়েনি। যাউগ্যা, বামের ২ টা সংখ্যা মিলে হইল এক্কেরে বেসিক মান। বাম থেকে ৩ নম্বর দাগ হইল মাল্টিপ্লাইয়ার বা গুনক।
এইটা দিয়ে আবার সেই মানকে গুন করতে হয়। তা হইলে আপনি রেজিস্টর বা রোধের আসল মান পেয়ে গেলেন। এইডা এক্কেরে অরজিনাল। তয় একটু ঘাপলা আছে। একেবারে ডানের দিকে আরেকটা দাগ থাকে।
এই দাগ হইল টলারেন্স এবং এইটা পারসেন্ট এ দেয়া থাকে। এইটার মানে হইল অরিজিনাল মান এত পারসেন্ট কম বেশি হইতে পারে। অবশ্যই এটা যত কম হবে তত ভাল। আসলে কখনই একদম নিখুঁত জিনিস তৈরি করা সম্ভব না। ভেজাল এর দুনিয়া।
তাই এই ব্যাবস্থা। মাইনষের মাথায় কত্ত বুদ্ধি !!!
আসেন এইবার হাতে কলমে কাজ করি। একখান ভারচুয়াল রেজিস্টর লন। মনে করে বান দিক থেকে এইভাবে দাগ দেয়া আছেঃ হলুদ- বেগুনি- কমলা-সোনালি।
এখন টলারেন্স সহ এইটার মান বের করতে হইবে।
তয় ক্যাম্নে?? নিচে দেহেন। অ্যাম্নে। ।
বামে আছে হলুদ_বেগুনি মানে ৪_৭ তাইলে হইল ৪৭। এর ডাইনে আছে কমলা মানে গুনক হইল ১০০০।
গুন করলে কত হয়? ৪৭০০০। ঠিক ধরসেন। এইডা হইল ৪৭ কিলো ওহম রেজিস্টর। কিন্তু আগেই বলছি মান ঠিক থাকবে না। সোনালি মানে কি? ৫% টলারেন্স।
৪৭০০০ এর ৫% হল ২৩৫০। তার মানে এত ওহম এদিক ওদিক হবে। এই জিনিস যখন আপনি কোন সার্কিট এ লাগাবেন আসলে কখন যে এর মান কি থাকবে বলা মুশকিল। কিন্তু ৪৪৬৫০ থেকে ৪৭২৩৫০ ওহম এর ভেতরেই থাকবে।
এইবার ফাইনাল কথা।
টেবিল দেখে মাথা ঘুরাইতেছে? মনে হইতেছে হায় হায় এত্ত বড় টেবিল মাথায় পড়লে ত খবর আছে। হে হে!! চিন্তা কইরেন না। ওষুধ আছে।
সুন্দর কইরা এই লাইনটা মুখস্ত করেন।
BB ROY Good Boy Very Good Worker
এইবার সিরিয়াল ধইরা খালি বড় হাতের অক্ষরগুলাকে টেবিল এ মিলান।
কি ওষুধ পাইছেন?
৩ টা বি নিয়া সমস্যা হইলে এইভাবে পড়েন, ব্ল্যাক ব্রাউন রয় গুড বয়.........। ব্যাস আর ঝামেলা হইবেনা। কি কইলেন? ২ টা জি নিয়া সমস্যা? মিয়া আপনে ত মানুষ ভালা না। টেবিল এর শুরুতে এত্ত সুন্দর রংধনুর লাহান কালার গুলা রইছে, এইখানে আপনি কোন সাহসে গ্রিন মানে সবুজ রে হটাইয়া গ্রে মানে ধুসর কে নিয়া আসেন?? গ্রে থাকব পিছনে। ব্যাস ঝালেমা শেষ।
জি না বানান ভুল লিখি নাই। ঠিক ই পড়ছেন।
অহন কালার কোডরে এয়ার পোর্ট এ বিদায় জানান গিয়া। আর আপেক্ষিক রোধ কে লাল গালিচা অভ্যর্থনা দিয়া নিয়া আসেন।
কি নাম শুনে কি মাথা ঘুরাইতেছে? থামেন থামেন।
কাইন্দেন না। এইডা পানি থুক্কু অরেঞ্জ জুসের লাহান সোজা। খালি গিলবেন আর আহা!! বলবেন।
কিন্তু আগে যে ২ টা শত্রু থুক্কু সূত্র জানতে হবে।
আগেই কইছি তাপমাত্রা বাড়লে রোধ বাইড়া যায়।
বেটা বেয়াদপ আছে। তাই আজকে আমরা ধরব তাপমাত্রা স্থির। নো চেঞ্জ ইন তাপমাত্রা থুক্কু টেম্পারেচার। সাথে কিন্তু রোধ এর উপাদান একই হতে হবে। কারন বিভিন্ন উপাদানের জন্য আবার রোধ চেঞ্জ হইয়া যায়।
বড়ই ক্যাচাল!! ওকে উই অয়ার লুকিং ফর টু শত্রুজ থুক্কু সূত্রজ।
১। তাপমাত্রা আর উপাদান স্থির থাকিলে এবং উপাদানের প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফল স্থির থাকিলে কোন পরিবাহকের রোধ তাহার দৈর্ঘ্যের সমানুপাতিক হইবে।
; A ধ্রুব
মানে হল ধরেন আপনি একই তাপমাত্রায় একই উপাদানের একই প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফল এর ২টা তার নিলেন। একটা লম্বা একটা খাটো।
অবশ্যই লম্বাটার রোধ আরেকটার থেকে বেশি হবে।
২। তাপমাত্রা আর উপাদান স্থির থাকিলে এবং উপাদানের দৈর্ঘ্য স্থির থাকিলে কোন পরিবাহকের রোধ তাহার প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফল এর ব্যাস্তানুপাতিক হইবে।
; L ধ্রুব
এইবার মানে হল ধরেন আপনি একই তাপমাত্রায় একই উপাদানের একই দৈর্ঘ্যের ২টা তার নিলেন। একটার প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফল বেশি মানে মোটা আর আরেকটা হইল চিকনা।
অবশ্যই এইবার চিকনাটার রোধ মোটকাটার থেকে বেশি হবে।
এইবার ২ টা সুত্রকে জোড়া লাগান। এইরকম আসে;
; যখন L,A কেউই ধ্রুব না
এইবার আসল কথা। এই সূত্র থেকে আপেক্ষিক রোধের ধারনা আসবে। এইটা আসলে কোন উপাদানের রোধের স্ট্যান্ডার্ড।
আর কঠিন কিছুই না। উপরের সূত্রে উঠায়া দেন। কি আসবে? কি আবার? একটা ‘=’ আর সমানুপাতিক ধ্রুবক। না বুঝলে বুঝানোর টাইম নাই। ইস্কুলের কেলাস সিক্স সেভেন এর অংক বই খুইল্যা দেখেন।
আমরা যে সমানুপাতিক ধ্রুবক বসাব তা হল । এর নাম হল ‘রো’।
একেই বলে কোন বস্তুর উপাদানের আপেক্ষিক রোধ।
তাহলে সূত্র দাঁড়াচ্ছে,
;
আইচ্ছা এইবার সংজ্ঞা দেয়ার জন্য উপরের সূত্রে L = ১ মিটার আর A = ১ (মিটার)২ ধরে নেন। তাহলে কিন্তু হয়।
এই ঘটনার মানে হচ্ছে যে,তাপমাত্রা স্থির থাকলে একক দৈর্ঘ্যের আর একক প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফল এর কোন পরিবাহকের রোধ কে ঐ তাপমাত্রায় ঐ পরিবাহকের উপাদানের আপেক্ষিক রোধ বলে। আসেন এইটার একক বের করি।
উপরের সুত্রকে একটু নাড়াচাড়া করলে পাই,
মানে একক হলঃ {ওহম * (মিটার)২ }/ মিটার = ওহম মিটার।
মনে রাখা দরকার যে বস্তুর আপেক্ষিক রোধ যত কম তা তত ভাল পরিবাহী। এই দিক দিয়ে সবচেয়ে এগিয়ে আছে, রুপা, তামা আর এলুমিনিয়াম।
কিন্তু রুপার দাম বেশি। তাই তামা আর এলুমিনিয়াম বিদ্যুতের কাজে ব্যাপকভাবে ব্যাবহার করা হয়।
____________________________________________
যান ফুটেন। আইজকা এইটুকুই। মেলা পড়াইছি।
আমার ব্যাপক ঘুম ধরতেছে। দেখি সামনের পর্বে কি দেয়া যায়। এখনও ঠিক করি নাই। ভাল থাকেন সবাই। শুভরাত্রি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।