এই সময় একটা নার্স টুটুলকে ডাকল ।
এই যে খোকা এদিকে আস ।
টুটুল তার দিকে এগিয়ে গেল ।
তোমার বোনকে দেখতে চাও ?
কোথায় ? টুটুল ব্যাকুল ভাবে জিজ্ঞেস করল ।
এই তো চার তলায় ।
আস আমার সাথে ।
চলেন । হয়ত তার বোন ভাল আছে । একটা আশা নিয়ে নার্সের সাথে টুটুল সিড়িতে উঠে গেল ।
১০.
টেবিলের উপরে সাদা একটা কাপড় ।
সেটা সরাতেই টুটুল দেখতে পেল তার বোন ঘুমিয়ে আছে । আর কোন দিন উঠবেনা সে । পাশে একটা অক্সিজেন সিলিন্ডার । হয়ত অক্সিজেন দেওয়ার ব্যর্থ চেষ্টা করা হয়েছে । টুটুলের চোখে পানি ।
টুটুলের বোন টা আসলেই ফুলের মত সুন্দর , কোমল । কিন্তু বাঁচল না ?
টুটুলের চোখে সবকিছু ঝাপসা হয়ে আসে ।
কখন আব্বু টুটুলের পিঠে হাত রেখেছেন টুটুল বুঝতে পারে না ।
তিনি টুটুলকে কাছে টেনে নিলেন , যেন টুটুল ই তার শেষ সম্বল ।
"তোর মাকে বলিস যে সব ঠিক আছে ।
তা না হলে তোর মা কিন্তু বাঁচবেনা । "
"আচ্ছা আব্বু । "
১১.
তারপর কি হল ?
তারপর টুটুলের বোনকে বাসায় নিয়ে যাওয়া হল । গোসল করানো হল । তারপর জানাজা হল ।
কয়েকজন আত্মীয়স্বজন জানাজায় অংশগ্রহণ করলেন । জানাজার জন্য টুটুলের বোনকে একটা নামও দেওয়া হল । ফাতেমা ।
তারপর নানারবাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে নিয়ে যাওয়া হল । ছোট্ট একটা কবর ।
সেখানে ফাতেমাকে শুইয়ে দেওয়া হল । সবার চোখে তখন পানি ।
কবর দেওয়া শেষ । এখন
সবাই বাড়ি যাবে । টুটুল আব্বুকে বলে দিল যে সে এখন একটু হাটবে ।
সে এখন কোথাও যাবেনা । ছেলেটা হাটুক । দুঃখের পাথরটা ঝরে যাক ।
পড়ন্ত বিকেল । এক দিকে সূর্য হেলে যাচ্ছে ।
অন্য দিকে মেঘ জমেছে । বৃষ্টি হবে । হোক । টুটুল হাটছে তো হাটছে । বৃষ্টিতে তার কষ্ট গুলো আজ ধুয়ে যাক ।
এটাইতো সে চায় ।
১২.
অঝোর বৃষ্টি । টুটুল হাটছে তো হাটছে । ঠিক এমনই বৃষ্টিতে সে হেটেছিল প্রায় ৮ বছর আগে । শেষ বিকেলের বৃষ্টি ।
পুরনো ব্যাথাটা ঠিক ৮ বছর পর ফিরে এল । ঐ দিনটা ছিল ২৭ সেপ্টেম্বর । আজও ২৭ সেপ্টেম্বর । সে আকাশের দিকে মুখ তুলে তাকাল । আহা অঝোর বৃষ্টি ।
চশমার কাঁচ ঝাপসা হয়ে আসে । আসুক ।
হে শেষ বিকেলের বৃষ্টি , তুমি দাও না এই দুঃখী ভাইটার কষ্ট গুলো ধুয়ে দিতে ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।