আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমা বিরোধ মামলার রায় : উপকূল থেকে ২০০ নটিক্যাল মাইল বাংলাদেশের

পৃথিবীর কাছে তুমি হয়তো কিছুই নও, কিন্তু কারও কাছে তুমিই তার পৃথিবী" মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমা বিরোধ মামলায় বাংলাদেশের পক্ষে রায় দিয়েছেন সমুদ্র আইন-সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল (এইলস)। আজ বুধবার জার্মানির হামবুর্গে ট্রাইব্যুনাল এই রায় দেন। ফলে উপকূল থেকে ২০০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত সমুদ্রসীমায় বাংলাদেশের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হলো। এই রায়ের মধ্য দিয়ে গভীর সমুদ্রে তেল-গ্যাসসহ সামুদ্রিক সম্পদের দাবিও প্রতিষ্ঠিত হলো। পাশাপাশি গভীর সমুদ্রে তেল-গ্যাসের জন্য জন্য ব্লক ইজারা-জটিলতারও অবসান হবে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দীর্ঘ তিন দশকের বেশী সময় ধরে প্রতিবেশী মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমার বিরোধ নিস্পত্তি না হওয়ায় ২০০৯ সালের অক্টোবরে আন্তর্জাতিক সালিশী আদালতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। এরই ধারাবাহিকতায় সমুদ্র আইন বিষয়ক জাতিসংঘের কনভেনশন (আনক্লস) মেনেই বাংলাদেশ জার্মানির হামবুর্গে অবস্থিত ইটলসে যায়। ১৪ ডিসেম্বর ২০০৯ সালে মামলাটি ইটলসে মামলা দাখিল করে বাংলাদেশ। এরপর এ বিরোধ নিষ্পত্তিতে ইটলসের বিচারিক এখতিয়ার মেনে নিতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে বিশেষ মতৈক্য হয়। এটি পরে ইটলসের ১৬ তম মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়।

২০১০ এর ১ জুলাই বাংলাদেশ নিজের পক্ষে সব দালিলিক প্রমাণ আদালতে উপস্থাপন করে। আর মিয়ানমার তাদের প্রমাণ জমা দেয় সে বছরের ১ ডিসেম্বর। মিয়ানমারের দাবির বিপক্ষে বাংলাদেশ বক্তব্য উপস্থাপন করে ২০১১ সালের ১৫ মার্চ। আর বাংলাদেশের যুক্তির বিপক্ষে মিয়ানমার তাদের বক্তব্য তুলে ধরে ২০১১ সালের ১ জুলাই। গত বছরের ৮ থেকে ২৪ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ও মিয়ানমার দু’দফায় মৌখিক শুনানিতে নিজেদের পক্ষে দাবিগুলো তুলে ধরে।

বাংলাদেশের পক্ষে মৌখিক শুনানিতে নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি ও মিয়ানমারের পক্ষে সেদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল তুন শিন। সমতা ও নায্যতার ভিত্তিতে উপকূল থেকে ২০০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত সমুদ্রসীমার দাবি পেশ করে বাংলাদেশ। কারিগরি,বৈজ্ঞানিক ও অন্যান্য তথ্য উপাত্তের মাধ্যমে বাংলাদেশ দাবির পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করে। অন্যদিকে, মিয়ানমারের যুক্তি হচ্ছে সমুদ্র উপকূল থেকে সমদূরত্বের ভিত্তিতে বাংলাদেশের সঙ্গে সমুদ্রসীমা বিরোধের নিস্পত্তি হওয়া উচিত। মিয়ানমারের যুক্তি মেনে নিলে উপকূল থেকে ১৩০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত এলাকার অধিকারী হবে বাংলাদেশ।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আনক্লস অণু বিভাগের কর্মকর্তাদের মতে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সমতার নীতি অনুসরণ করে সমুদ্রসীমা বিরোধের নিস্পত্তির অনেক নজির রয়েছে। সমতা ও নায্যতার ভিত্তিতে ইটলস রায় দিলে উপকূল থেকে ২০০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত সমুদ্র সম্পদের অধিকারী হবে বাংলাদেশ। এর পাশাপাশি ৪৬০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত মহীসোপান এলাকার দাবিদার হবে। ২০০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত বিশেষ অর্থনৈতিক এলাকায় মত্স্য, খনিজ ও প্রাকৃতিক সম্পদ খনন, উত্তোলন ও ব্যবহার করতে পারবে বাংলাদেশ।  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.