সফরের প্রথম দিনই মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চির সঙ্গে প্রথমবারের মতো বৈঠকে বসবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।
৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর টানা দ্বিতীয় মেয়াদে সরকার গঠনের পর এটাই প্রধানমন্ত্রীর প্রথম বিদেশ সফর। এই সফরে তিনি ৩২ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
সোমবার সকাল ৮টায় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি নিয়মিত ফ্লাইটে মিয়ানমারের রাজধানী নে পি দওয়ের উদ্দেশ্যে রওনা হন প্রধানমন্ত্রী। মন্ত্রী পরিষদের সদস্য ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিমানবন্দরে তাকে বিদায় জানান।
মিয়ানমারের স্থানীয় সময় সকাল সোয়া ১০টার দিকে প্রধানমন্ত্রীর নে পি দওয়ে পৌঁছানোর কথা। সফরসঙ্গীদের নিয়ে সফরের দুই দিন রয়্যাল নে পি দও হোটেলে থাকবেন তিনি।
সম্মেলনের আগে সোমবার দুপুরে নে পি দওয়ের প্রেসিডেন্ট প্যালেসে মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট থেইন সেইনের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাক্ষাতের সূচি রয়েছে। এরপর শেখ হাসিনা মিয়ানমারের পার্লামেন্ট পরিদর্শনে যাবেন এবং স্পিকার শুয়ে মানের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
বিকালে পার্লামেন্ট ভবনেই মিয়ানমারের বিরোধী দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান, শান্তিতে নোবেল বিজয়ী সু চির সঙ্গে আধ ঘণ্টা বৈঠক হবে শেখ হাসিনার।
ফাইল ছবি
সফরের দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার সকালে তিনি নে পি দওয়ে বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টিসেকটরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকনোমিক কো-অপারেশন (বিমসটেক) সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে যোগ দেবেন। দুপুরে উপস্থিত থাকবেন সরকার প্রধানদের যৌথ সংবাদ সম্মেলনে।
১৯৯৭ সালে গঠিত বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টিসেকটরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকনোমিক কো-অপারেশনের প্রথম শীর্ষ সম্মেলন ২০০৪ সালে ব্যাংককে এবং ২০০৮ সালে নয়া দিল্লিতে দ্বিতীয় শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশ, ভারত, মিয়ানমার, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, নেপাল ও ভুটানের এই জোটের এ অঞ্চলে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, জ্বালানি, পরিবহন ও যোগাযোগ, পর্যটন, কৃষি, পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, আন্তঃযোগাযোগ, সন্ত্রাস ও আন্তঃদেশীয় অপরাধ ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় কাজ করার কথা।
তৃতীয় শীর্ষ সম্মেলনে সদস্য দেশগুলোর সরকার ও রাষ্ট্র প্রধানরা গত শীর্ষ সম্মেলনের পর অর্জিত অগ্রগতি পর্যালোচনা করবেন। সংস্থার যৌথ অঙ্গীকারের বিভিন্ন দিক নিয়ে মতবিনিময় এবং ভবিষ্যৎ করণীয় নির্ধারণ করবেন তারা।
শীর্ষ সম্মেলন শেষে ইশতেহার অনুমোদনের পাশাপাশি তিনটি বিষয়ে চুক্তি সই হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ঢাকায় সংস্থার স্থায়ী সচিবালয় প্রতিষ্ঠা, ভারতে আবহাওয়া ও জলবায়ু বিষয়ক সেন্টার প্রতিষ্ঠা এবং ভুটানে কালচারাল ইন্ডাস্ট্রিজ কমিশন ও কালচারাল ইন্ডাস্ট্রিজ অবজারভেটরি প্রতিষ্ঠা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক সই হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ঢাকায় সংস্থার স্থায়ী সচিবালয়ের জন্য ইতোমধ্যেই জমি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
এই সম্মেলনে যোগ দেয়ার পাশাপাশি প্রতিবেশী দেশগুলো সরকার প্রধানদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকেও অংশ নেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর।
প্রতিবেশী দেশ হলেও রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে টানাপোড়েন রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যও বছরে মাত্র ১০ কোটি ডলারের।
মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে জাতিগত দাঙ্গার মধ্যে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে আসছে বাংলাদেশ। নিবন্ধিত রোহিঙ্গা শরণার্থীর সংখ্যা হাজারের কোটায় থাকলেও অবৈধভাবে আরো কয়েক লাখ রোহিঙ্গা এদেশে রয়েছে বলে বিভিন্ন পক্ষ থেকে বলা হয়ে থাকে।
দুই দিনের এই সফর শেষে মঙ্গলবার রাতে দেশের পথে ফিরতি যাত্রা করবেন প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীরা।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।