হাসিতে মুক্ত ঝরে
বাংলাদেশ ভারত সীমান্তে যে পরিমাণ মানুষ খুন হচ্ছে তা পৃথিবীর আর কোন দেশের সীমান্তে হচ্ছে না। আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকারের তোয়াক্কা করছে না তারা। কখনও কখনও সীমান্ত অতিক্রম করে ভিতরে ঢুকে নিরীহ মানুষ খুন করছে । মানবাধিকার সংস্থার অনুসন্ধান অনুযায়ী গত ১০ বছরে বি,এস,এফের হাতে বাংলাদেশী নাগরিক খুন হয়েছে ২০১০ সাল পর্যন্ত ৯২২ জন। এছাড়া ২০০৯ সালে ৭৪ জন, ২০০৮ সালে ৮৯ জন, ২০০৭ সালে ১২০ জন, ২০০৬ সালে ১৪৬ জন, ২০০৫ সালে ১০৪ জন, ২০০৪ সালে ৭৬ জন, ২০০৩ সালে ৪৩ জন, ২০০২ সালে ১০৫ জন এবং ২০০১ সালে ৯৪ জন।
কিছুদিন আগে যুক্তরাষ্ট্রের গ্লোবাল পোষ্ট নামের
গণমাধ্যমে বাংলাদেশের সীমান্তকে “মৃত্যুর দেয়াল” বলে মন্তব্য করে বলা হয়েছে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত ইসরাইল-ফিলিস্তিন সীমান্তের চাইতেও ভয়বহ, হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ২০১০ সালের প্রতিবেদনে মন্তব্য করা হয়েছিল হত্যা মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে ভারতে বি.এস.এফের বিচার হওয়া উচিত।
বিবিসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বি.এস.এফের মহাপরিচালক ইউকে বানসাল বলেন বাংলাদেশ সীমান্তে গুলি চালানো পুরোপুরি বন্ধ করা সম্ভব নয়। যতক্ষন ইন্ডিয়া বাংলাদেশ সীমান্তে অপরাধমূলক কাজ চলতে থাকবে, ততক্ষন সেই অপরাধ আটকাতেই এই নির্দেশ বি.এস.এফকে দেয়া হয়েছে এবং সেই দায়িত্বই পালন করছে । বল প্রয়োগ আর গুলি চালিয়ে বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা করার অনেক অভিযোগ আছে বি.এস.এফ এর বিরুদ্ধে এবং যার বিচার করতে গেলে আলাদা একটি কোর্ট ও নতুন করে লোক নিয়োগ দিতে হবে।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান বলেছেন সীমান্তে বি.এস.এফের এই হত্যাকান্ড কখনই মেনে নেয়া যায় না।
তিনি বলেন এই ধারাবাহিকতা অত্যাহত থাকলে প্রয়োজনে আমরা জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে বিষয়টি উত্থাপন করবো, তাছাড়া এ বিষয়ে ইতিমধ্যে আমরা ভারতের জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানের কাছে চিঠি পাঠিয়েছি। তাদেরকে বলেছি কেন্দ্রিয় সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে কিভাবে সীমান্তে হত্যা বন্ধ করা যায় সে ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে।
মানবিাধিকার কর্মীরা বলেছেন চোরাচালান এমন অপরাধ নয় যার শাস্তি মৃত্যুদন্ড হতে পারে। আর বি.এস.এফ আদালত নয়। তাদের বিচার করার ক্ষমতা নেই।
আর যদি তাদের বিচার করার ক্ষমতা দেয়া হয় তাহলে ভারতীয় সরকারের প্রতি অনুরোধ আপনাদের সংবিধানে কোর্ট কাচারীসহ অন্যান্য যে শাসন ব্যবস্থা আছে তা বন্ধ করে দিয়ে বি.এস.এফের হাতে আদালত ও শাসন ব্যবস্থা তুলে দিন। বি.এস.এফ আজ পর্যন্ত কাউকে আদালতে বা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে সোপর্দ করে নি বরং আইন নিজের হাতে তুলে নিয়েছে এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করছে।
ভারতীয় সরকারকে সাবধান করে বলছি যদি এখনই নিয়ন্ত্রন করতে না পারেন তবে এই বাহিনীই একদিন আপনার দেশের সবচেয়ে বড় শক্রু হয়ে দাড়াবে কারণ সাহস ও ট্রেনিং আমাদের দেশের নিরীহ মানুষদের মেরে তারা নিয়ে নিচ্ছে অনেক বড় মূল্য দিতে হবে আপনাদের
১৪ই ফেব্র“য়ারী স¦য়ং প্রধানমন্ত্রী বললেন সীমান্তের ঘটনাবলী ভারত বাংলাদেশ স¤পর্কে কোন প্রভাব ফেলবে না। আমরা জানি পৃথিবীতে বহু দেশে এ ধরণের ঘটনায় আন্তরাষ্ট্রে স¤পর্কের ফাটল ধরে। অথচ বি.এস.এফের অব্যাহত হত্যাকান্ডগুলো দুই দেশের জন্য ক্ষতিকর এই সামান্য কথাও বর্তমান বাংলাদেশ সরকার জোর গলায় বলতে পারছে না।
দিল্লীতে বাংলাদেশ ও ভারতের স¦রাষ্ট্র মন্ত্রীদের বৈঠকে সীমান্তে হত্যার নির্যাতন বন্ধের যে আশ্বাস দেয়া হয়েছে তা যেন বাস্তবায়ন হয় শুধু আশ্বাস যেন না থাকে আর যদি বাস্তবায়ন না হয় তাহলে কি আমাদের বুলেটের জবাব বুলেট দিয়ে দিতে হবে ? ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।