নয়া যামানার নয়া পথিক,পথ হারিয়ে ছুটনা দিক্বিদিক
হযরত আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, একবার হযরত জিবরীল আ. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! এই যে খাদীজা রা. আপনার কাছে আসছেন, তাঁর সাথে একটি পাত্র রয়েছে, যাতে তরকারি আছে বা (বর্ণনাকারী বলেন) খাবার অথবা পানীয়। তিনি আপনার কাছে এসে পৌঁছলে তাঁকে তাঁর রবের পক্ষ থেকে সালাম বলবেন এবং তাঁকে জান্নাতে একটি বাঁশের ঘরের সুসংবাদ দিবেন, যেখানে কোনো শোরগোল এবং ক্লান্তি থাকবে না। {সহীহ বুখারী ৫৩৯; সহীহ মুসলিম ২/২৮৪ }
হযরত ফাতেমা রা. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করেছেন যে, ঘরটি কি (দুনিয়ার) এই বাঁশের তৈরি হবে? উত্তরে তিনি বলেছেন, না; তা হবে মুক্তা ও ইয়াকূত পাথরে গাঁথা বাঁশের দ্বারা তৈরি। {তবারানী, কাবীর, ১/২৭৪; মাজমাউয যাওয়াইদ ৯/৩৫৮}
হযরত আবু হুরাইরা(রা) বলেন, নবীজী (সা) বলেছেন, দুনিয়ার সমস্ত নারীর উপর চারজন নারীর শ্রেষ্ঠত্ব রয়েছে- মারিয়াম বিনতে ইমরান,ফেরাউনের স্ত্রী আসিয়া, খাদিজা বিনতে খোয়াইলিদ এবং ফাতিমা বিনতে মুহাম্মাদ। {আল ইস্তিআবঃ ২/৭৪০}
==============+++=============
কেন তিনি তাঁর রবের পক্ষ থেকে সালাম পাবেন না, কেন তিনি জান্নাতের সুসংবাদ পাবেন না, কেনই বা তিনি সর্বশ্রেষ্ঠ নারীদের একজন হবেন না???! যখন নবী করীম(সা) এর ঈমানের ডাকে কেউ সাড়া দেয় নি, তখন কি তিনি তাঁর ডাকে সাড়া দেননি? যখন আল্লাহর রাসূল ছিলেন একা, তখন কি তিনি আশার আলো হয়ে দেয় নি দেখা? যখন আল্লাহর নবী পড়েছেন বিপদে, তখন কি তিনি ছিলেন না নবীর সাথে? যখন আল্লাহর নবী ধ্যানমগ্ন থাকতেন গারে হেরায়, তখন তিনি কি খাবার নিয়ে সুউচ্চ পর্বত বেয়ে পৌঁছেনি হে গুহায়? যখন দয়ার নবী মাঝ রাতে বাড়ি ফিরত, কে তাঁর জন্য বিনিদ্র রজনী কাটাত?যখন আল্লাহর রাসূলের ছিল না কোন ধন-সস্পদ টাকাকড়ি, তখন কি নিজের সব কিছু নবীর হাতে তুলে দেয় নি এই মহীয়সী নারী?
তাইতো আল্লাহর রাসূল সবচেয়ে বেশী ভালবাসতেন হযরত খাদীজাকে(র); তুমি কি মনে করেছ আমি এসব নিজে থেকেই বলছি, তাহলে একটু নিচের হাদিসটা পড়ে দেখ-
"হযরত আয়েশা(রা) বলেন, খাদীজার প্রতি আমার যতটা ঈর্ষা ছিল, রাসূলের অন্য কোন স্ত্রীর প্রতি ততটা ছিল না।
একদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার সামনে তাঁর কথা বললে আমি ঈর্ষান্বিত হয়ে বলি,সে তো ছিল বৃদ্ধা, এখন আল্লাহ্ তা'আলা আপনাকে তার চেয়ে উৎকৃষ্ট স্ত্রী দান করেছেন; তবুও আপনি তার কথা কেন স্মরণ করছেন? আমার কথা শুনে আল্লাহর রাসূল ক্রুদ্ধ হন। রাগে তাঁর পশম মোবারক উত্তপ্ত হয়ে উঠে। তিনি বলেন, আল্লাহর কসম তাঁর চেয়ে উত্তম স্ত্রী আমি পাইনি। যখন সকলে কাফের ছিল, তখন সে ঈমান এনেছিল। যখন সকলে আমাকে অবিশ্বাস করেছিল, তখন সে আমাকে সত্য বলে মেনে নিয়েছিল।
যখন সকলে আমাকে ত্যাগ করেছিল,তখন সে আমাকে অর্থ-সম্পদ দ্বারা সহায়তা করেছিল। আল্লাহ্ তা'আলা তাঁর গর্ভেই আমাকে সন্তান দান করেছেন।
হযরত আয়েশা বলেন, এরপর আমি অন্তরে অন্তরে বলি- ভবিষ্যতে আমি খারাপ অর্থে তাঁর নাম মুখে নিব না। {আল ইস্তিআবঃ ২/৭৪১} "
এই যুগে যেসব নারীরা হযরত খাদীজা, আয়েশা এবং ফাতেমা(রা) দের অনুসরণ করবে, ইসলাকে ভালবেসে নিজ জীবনকে গড়বে, আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের মহব্বতে নিজেরা সিক্ত হবে, তারা কি আল্লাহর পক্ষ থেকে পরকালে শান্তির সুসংবাদ পাবে না, তারা কি আল্লাহর সেই সব মহিয়সী জান্নাতী নারীদের সাথে থাকবে না? তাই হে কণ্যা!,হে বোন!, হে জায়া!, হে জননী! আজ সামিল হও এই নূরানী কাফেলায়!!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।