অপ্রয়োজনে অনেক কথা বলে যাই, কিন্তু বলা হয়না আরো অনেক বেশী কথা- অনেক আপন মানুষদেরকে। তাইতো, এই খোলা চিঠি। হয়তো কারোর চোখে পরবে কোনদিন, যখন আমি থাকবোনা..... বাড়ি- চতূর্থ পর্ব
সেই তুমি!
মনে পরে? তুমি যেদিন আমার বাসায় প্রথম এলে, কি প্রচন্ড বৃষ্টি ছিল সেদিন। আমার দেয়া সেই শাড়িটা কাঁদা-পানিতে মেখে একাকার। আমার টিনের চালার বারান্দায় বসে তোমার লাল হয়ে যাওয়া পা দুটো দেখে, কি ভয়ই না পেয়ে ছিলাম।
আর তোমার কিনা মন খারাপ হয়েছিল, বিয়ের শাড়িতে কাঁদা লেগে নষ্ট হবার দুঃখে। আমার দেয়া সেই সাধারন শাড়িটা যে তোমার কাছে এতো গুরুত্ব পেয়েছিল, তার জন্য আজও আমার লজ্জা লাগে। মাঝে মাঝে ভাবি , সেদিন কেন তোমার কথা শুনেছিলাম? আমার মন মত, ধার করে দামী শাড়ি কিনিনি, তোমাকে নিয়ে দুরে কোথাও চলে যাইনি? সারাটা জীবন তো তোমার হুকুম মতোই চলতে হবে, তাই কেন সেদিন তোমার বিরোধীতা করিনি। করলে হয়তো তোমাকে সেদিন এতো কষ্ট পেতে হতে না। হতো না হাটু পানি ভেংগে আমার টিনের বাড়িতে তোমার নতুন জীবনের সূচনা।
থাকতো না আমার হানিমুন না করার আহাজারি।
লাল রেশমী চুড়ি, একটা লাল সাধারন শাড়ী, একজোড়া নুপুর, এক পাতা টিপ। এই ছিল তোমার চাওয়া। আমার হাতে খোপার ফুল দেখে, তোমার সেই অবিশ্বাস্য আনন্দ দেখলে মানুষ নিশ্চয়ই ভাবতো হীরার নেকলেস। তুমি কি জান, তখন আমি কি ভাবছিলাম- এই পাগল সামলানো আমার দ্বারা হবে কিনা?
মনে পরে, সেদিন রাতে তুমি প্রথম বারের মতো হারিকেন জ্বালাতে শিখেছিলে।
তাতেই যেন তোমার সংসার করার প্রথম সার্থকতা। সেই আনন্দ, হারিকেনের নিভু নিভু আলোতে আমার মনের দরজায় কড়া নাড়লো। এই আমি যেন দেখলাম ,একটা চঞ্চল ঝরণা যেন হঠাৎ, শান্ত ধীর বেগে ছুটে চলা নদীতে রুপ নিল। কয়েক মুহূর্তের ব্যবধানে কেমন করে একটা মেয়ে, এই ধরিত্রীর বুকে বদলালো তার রুপ। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।