হিজবুত তাহরীর!! এ সংগঠনের কাজ পোস্টার লাগানো, আগুনে পোড়ানো, এবং গুজব ছড়ানো। এইসব আদর্শ নিয়ে খিলাফাত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা!! শুধু তাই নয় বাংলাদেশকে পুনরায় পাকিস্তান রাষ্ট্রে পরিণত করার লক্ষ্যেই কাজ করা এই দলটির মূল লক্ষ্য। এরা মূলত বিএনপি জামায়াত জোট সরকারের সময়ই কার্যক্রমগুলো অনুমোদন নিয়ে একের পর এক ঘটনা ঘটাতে থাকে। এরপর জরুরি অবস্থার সময়ও তাদের কার্যক্রম বহাল থাকে। সর্বশেষ যা দেখলাম তা হলো পোস্টারে পোস্টারে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের সরকারের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর চেষ্টা করা।
সংগঠনটি ২০০৯ সালেই নিষিদ্ধ করে সরকার। ”প্রায় সব কটি আরব রাষ্ট্রে সামরিক অভ্যুত্থান-চেষ্টার অভিযোগে হিযবুত নিষিদ্ধ। এর পর সাবেক সোভিয়েত মুসলিম প্রজাতন্ত্রগুলোই হয়ে ওঠে হিযবুতের মূল মঞ্চ। রাশিয়া ও চীনের প্রভাববলয়ে থাকা এই রাষ্ট্রগুলো কেন তাদের কাছে এত গুরুত্বপূর্ণ, এর কোনো ব্যাখ্যা সংগঠনটির তরফ থেকে দেওয়া হয়নি। লক্ষ্যণীয়, মুসলিম দেশগুলোতে সংগঠনটি নিষিদ্ধ হলেও ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া ও আমেরিকায় তারা ছাড় উপভোগ করছে।
”প্রায় দুই দশক ধরে ব্রিটেনই হয়ে থাকছে হিযবুতের প্রধান ঘাঁটি। ব্রিটিশ এমপি ক্লেয়ার শর্ট হাউস অব কমন্সে এদের সঙ্গে বৈঠকও করেন। আল-কায়েদার মতো হিযবুত তাহ্রীরও মার্কিন-ব্রিটিশ স্বার্থ রয়েছে, এমন দেশগুলোতে বেশি তৎপর। ইন্দোনেশিয়া, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে নির্বাচিত ব্যবস্থাকে পুরোপুরি অনির্বাচিতদের হাতে নেওয়ার ইচ্ছাও তারা গোপন রাখছে না।
হিযবুতের গোড়াপত্তন বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে হয় অভিবাসী ব্রিটিশ এবং ইন্দোনেশিয়ায় অভিবাসী অস্ট্রেলীয় মুসলমানদের মাধ্যমে।
বাংলাদেশে তাদের শীর্ষস্থানীয় নেতা গোলাম মওলা লন্ডন থেকেই হিযবুতের মন্ত্রে দীক্ষা নিয়ে আসেন। ব্রিটিশ নাগরিক জিতুজ্জামান হক বেশ কয়েক বছর বাংলাদেশে থেকে সংগঠনটি পরিচালনা করেন। বর্তমান নেতৃত্বের অধিকাংশই বিলেতফেরত অথবা বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষিত এলিট শ্রেণীর সদস্য। পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা এদের টার্গেট। এঁদের নেতারা একমুখে বাংলাদেশে কর্মরত পশ্চিমা পুঁজিবাদী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অর্থনৈতিকভাবে যুক্ত থাকেন, অন্যমুখে দেন পশ্চিমাবিরোধী জিহাদের ডাক।
”
ব্যঙের ছাতার মতো গড়ে উঠছে নতুন নতুন ইসলামী সংগঠন। কোরআন হাদিসের আলোকে তো নয়ই এরা যে ইসলামের কোন ভিত্তিতে গড়ে উঠছে সেটাই প্রশ্ন। আমি জামায়াতের রাজশাহী বিভাগের এক কর্মীকে চিনতাম। প্রতিদিন কতো ওয়াক্ত নামাজ পড়লো, বাসায় এসে কাগজে রাখা সিগনেচার শিটে টিক চিহ্ন দিতো। কতো পারা কোরআন পড়লো, কতোজনকে ছালাম দিলো, তার একটা হিসেবের উপর প্রমোশন হতো।
অর্থাৎ পদ পেতো। হায়রে ইসলামের ব্যবহার!!! পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ার সময় দেখলাম আমাদের ডিপার্টমেন্টে ক্লাসের সব মেয়েরা শিবির কর্মীদের দখলে!! অন্যদের নাস্তিক আখ্যায়িত করে মেয়েদের পাশে বসতেও দিতো না। এটা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিত্র। অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের খবর জানি না। তবে নিশ্চয় এর চেয়ে ভয়াবহ।
জামায়াত কর্মীদের মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে খুবই চিন্তিত থাকতে দেখেছি, সেই সাথে সমসাময়িক ঘটনা যেমন সীমান্তে হত্যা, টিপাইমুখ বাঁধসহ যেসব জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ইস্যুতে জনমত সংগঠিত করতে চায়, সেসব অবশ্যই জাতীয় স্বার্থের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এসবের ক্ষতি বাংলাদেশের সবার, ধর্ম-সম্প্রদায় নির্বিশেষে বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ এসব বিষয়ে উদ্বিগ্ন। দেশকে ভারতের কাছে বেছে দিলো আওয়ামী সরকার, হিন্দু রাষ্ট্রে পরিণত করলো এই বলে দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের বিভ্রান্ত করার পায়তারা করছে ইসলামের নাম ধারী এসব ভূঁইফোড় সংগঠন। সেই সাথে তরুণদের বিপথগামী করে এদের বুকে বেঁধে দেওয়া হচ্ছে বোমা, তৈরি করা হচ্ছে সুইসাইড স্কোয়াড!!! যে তরুণদের স্বপ্ন দেখার কথা ছিলো একটি অহিংস রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করার, সুন্দর আবাস যোগ্য পৃথিবী তৈরির, যেখানে তারা কী করছে এসব!!!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।