আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

তেজগাঁও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে যাওয়ার শর্টকাট রাস্তা এখন আর নেই

মুনতাসীর মামুন ঃ সাম্প্রতিক সেনা অভ্যুত্থান সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিরোধীদলীয় নেত্রী ডিসেম্বর পর্যন্ত বর্তমান সরকারের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলেন। ডিসেম্বরেই এই চেষ্টা। সুতরাং, দুয়ে দুয়ে যোগ করলেই বোঝা যায় কেন এত জোরের সঙ্গে বিরোধীদলীয় নেত্রী একথা বলেছিলেন। আমরা প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য না হয় নাই মানলাম। বলতে পারি বিরোধীদলীয় নেত্রীর বক্তব্য ও বর্তমান ঘটনা কাকতালীয়।

কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে এ কথাও বলা জরুরী যে, বাংলাদেশের রাজনীতিতে কাকতালীয় ঘটনার অবকাশ কম। তবুও না হয়, খালেদা জিয়াকে বেনিফিট অব ডাউট দেয়া গেল। চট্টগ্রামে খালেদা জিয়া কী বলেছিলেন? যদ্দুর মনে পড়ে হঠাৎ তিনি সেনাবাহিনীর প্রসঙ্গ এনেছিলেন বক্তৃতায়। বলেছিলেন, সেনা সদস্যদের গুম করা হচ্ছে। এ ধরনের চরম উস্কানিমূলক বক্তব্য এর আগে কোন দায়িত্ববান রাজনৈতিক নেতা করেননি।

তিনি কেন এ উক্তি করেছিলেন? এর কারণ একটিই, তিনি এক ধরনের উত্তেজনা ছড়াতে চেয়েছিলেন। সঙ্গে সঙ্গে তিনি একথাও বলেছিলেন, যারা চাকরিচ্যুত হবে, তাদের বিএনপি চাকরিতে পুনর্বহাল করবে। এর উদ্দেশ্যও একটি। যদি সেনাবাহিনীর কোন সদস্য কোন ঝুঁকি নেয় এবং চাকরিচ্যুত হয় তা হলে বিএনপি তার দায়িত্ব নেবে। এর পরপরই ঘটে ঘটনাটি।

প্রথম বক্তব্য, ‘রাজনৈতিক বক্তব্য’ [দায়িত্বহীন বক্তব্য দিয়ে সমালোচিত হলে রাজনীতিবিদরা এ কথা বলে থাকেন], ‘কাকতালীয় এসব ব্যাখ্যা দিলেও দ্বিতীয় বক্তব্যকে এই অভিধায় ফেলা যায় না। এটি সুনির্দিষ্ট বক্তব্য এবং আমরা নয়, কেউ যদি বলেন এর পেছনে ইন্ধন যুগিয়েছে বিএনপি তাহলে তা অযৌক্তিক বলে উড়িয়ে দেয়া মুশকিল। এমনকি অন্য দেশের রাজনীতিবিদরাও তা মনে করতে পারেন। “বাংলাদেশের ক্ষমতা থেকে অগণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে শেখ হাসিনাকে সরানোর চেষ্টা হলে, তাঁকে সব রকম সাহায্য করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। বাংলাদেশ সরকারকেও সেই বার্তা দেয়া হয়েছে।

ভারত মনে করছে, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানের আসল লক্ষ্য ছিল নয়াদিল্লী। হাসিনা সরকার আসার পর থেকেই ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে যে মৈত্রীর পরিবেশ তৈরি হয়েছে তাকে ভেস্তে দেয়াটাই এই সেনা অভ্যুত্থানের লক্ষ্য। দু’দেশের গোয়েন্দারাই রিপোর্ট দিয়েছে। এই লক্ষ্যে হিযবুত তাহ্্রীর, জামায়াতে ইসলামী ও খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন প্রধান বিরোধী দল বিএনপি একজোট হয়ে কাজ করছে। গোটা ঘটনার মাথা হিসেবে উঠে আসছে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার পুত্র তারেক রহমানের নামও।

” [ঐ, ২১.১.২০১২] তারেক রহমানের নাম কেন আসবে সেটি বোধগম্য হচ্ছে না। তিনি অসুস্থ, চলাফেরা করতে পারছেন না। তাঁকে কেন এসবে জড়ানো হচ্ছে। কিন্তু অন্য অনেক পত্রিকার রিপোর্টও তাই। মানস ঘোষ দক্ষিণ এশীয় বিশেষজ্ঞ।

দৈনিক স্টেটসম্যানের সম্পাদক। ইংরেজী স্টেটসম্যানে তিনি এ বিষয়ে বেশ বড় একটি উপ-সম্পাদকীয় লিখেছেন। তিনি লিখছেন, এই ষড়যন্ত্রের সঙ্গে পাকিস্তানে বসবাসরত বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত মেজর ডালিম ও কানাডায় বসবাসরত ক্যাপ্টেন নূর এবং তারেক জিয়া জড়িত। কিছুদিন ধরে তিনি ঘন ঘন দুবাই, সৌদি আরব এবং আফ্রিকা সফর করেছেন যেখানে বর্তমান অভ্যুত্থানকারীদের কয়েকজনের সঙ্গে শলাপরামর্শ করেছেন যার মধ্যে তারেক জিয়াও আছেন। মানস ঘোষ আরও লিখেছেন, তারেক জিয়াও দুবাই, পাকিস্তান সৌদী আরবে গেছেন, শলাপরামর্শ করেছেন আইএসআইয়ের সিনিয়র সদস্যদের সঙ্গে।

তারা হিযবুত তাহ্রীরকে মেলা টাকা দিয়েছে। তারা মনে করছে, শেখ হাসিনা এবং শেখ রেহানাকে হত্যা করতে পারলে আওয়ামী লীগ ছত্রভঙ্গ হয়ে যাবে, ভারতপ্রীতি বিলুপ্ত হবে। বেগম জিয়া ক্ষমতায় এসে গাঁটছড়া বাঁধবেন পাকিস্তানের সঙ্গে। ডালিম-নুরদের কিছুদিনের জন্য হলেও দেশে ফেরা হবে। এদের আরেকটি উদ্দেশ্য হলো, বেগম জিয়া ও তার পুত্রদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির ও অস্ত্র মামলা যেগুলো আছে সেগুলো প্রত্যাহার করা হবে।

জামায়াতের সঙ্গেও হিযবুত তাহ্রীরের সম্পর্ক ভালো তারাও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চায় না। সৌদিরাও এই কারণে, পরোক্ষ চাপে রাখছে হাসিনাকে। [ দি স্টেটসম্যান, ২৫-১-২০১২] মানস ঘোষ আরেকটি বিষয়ের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। তিনি লিখেছেন, ১৯৭৫ সালে সমর সেন যখন ভারতে তখন বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়। গত দু’মাস ধরে ঢাকায় ভারতীয় কোন হাইকমিশনার নেই [গত চারদশকে এমনটি ঘটেনি]।

শেখ হাসিনার ত্রিপুরা যাওয়ার কথা। তার আগেই অভ্যুত্থান ঘটানোর পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। [ঐ] ঘটনাটি যখন ঘটে তখন আমি আগরতলায়। সেখানে সবাইকে দেখলাম উদ্বিগ্ন। কারণ, ত্রিপুরাবাসী সত্যি সত্যিই শেখ হাসিনাকে ভালবাসেন।

অসম বিশ্ববিদ্যালয় গেছি। সেখানেও একই ধরনের উদ্বেগ। কলকাতায় এসে পড়লাম মানস ঘোষের বিশ্লেষণ। তাঁর সঙ্গে আলাপ থাকায় জিজ্ঞেস করলাম, ‘আপনি যেসব অভিযোগ করেছেন বিশেষ করে তারেক জিয়ার ব্যাপারে তা মেনে নেয়া কষ্টকর। লন্ডনে এত আওয়ামী ভক্ত, বাংলা পত্রিকাও কম নেই, তারা জানল না, এ কেমন কথা?’ ‘আওয়ামী ভক্তরা কতটুকু জানে আর কতটুকু জানে না তা আমার জানার কথা নয়’, জানালেন মানস ঘোষ বেশ বিরক্ত হয়ে।

‘আমার সোর্স দায়িত্বশীল। আর আপনি বোধ হয় জানেন আমার পত্রিকার বয়স প্রায় ২০০ বছর। এতদিনে কেউ বলতে পারেনি স্টেটসম্যান দায়িত্বহীন কোন খবর ছেপেছে। ’ আমি লা জবাব। ধরে নিলাম এসব প্রতিবেদনের উৎস গোয়েন্দা রিপোর্ট।

সত্য-মিথ্যা মেশানো হতে পারে। কিন্তু, তারপরও প্রশ্ন থেকে যায়, কেন অভ্যুত্থানকারীরা স্বীকার করেছে হিযবুত তাহ্রীর ছিল অভ্যুত্থানের উদ্যোক্তা! এটি তো আর অস্বীকার করা যাচ্ছে না। “গোয়েন্দাদের কথায়, বাংলাদেশের বাইরেও হিজবুত তাহ্রীর একটি সংগঠন রয়েছে। প্রবাসী বাংলাদেশীদের ওই সংগঠনে তারেক জিয়ার যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে। বাংলাদেশে হিযবুতের প্রকাশ্য সংগঠন ‘ব্রাদার অব ইসলাম’ও জামায়াতে ইসলামী ও বিএনপির সঙ্গে সমš^য় রেখে কাজ করছে।

তারা প্রচার করছে, টিপাইমুখ প্রকল্প গড়ে বা তিস্তা চুক্তি না করে ভারত বাংলাদেশকে বঞ্চিত করে চলেছে। কিন্তু শেখ হাসিনা তা মাথা নিচু করে মেনে নিচ্ছেন। ভারতের বিরুদ্ধে চলছে ধর্মীয় উস্কানিমূলক প্রচারও। গতকালও চট্টগ্রামের একটি মসজিদে জড়ো হয়ে হিযবুত সদস্যরা উস্কানিমূলক লিফলেট বিলি করেছিল। তাদের কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

ঢাকার উত্তরায় আজ গোপন বৈঠক করার সময় হিযবুতের পাঁচ সদস্যকে আটক করেছে র‌্যাব। সেখান থেকেই উস্কানিমূলক লিফলেট উদ্ধার করা হয়। রাজশাহী থেকেও একজন আটক হয়েছে। [আনন্দবাজার] এই রিপোর্ট তো আর পুরোপুরি উড়িয়ে দেয়া যায় না। গত প্রায় একবছর হঠাৎ বিএনপি পাকিস্তানীদের মতো ভারতবিরোধী প্রচারণা শুরু করেছে।

ভারতের সব কাজ আমরা সমর্থন করি না। প্রতিবাদও করি। কিন্তু, তার অর্থ এই নয় যে, আমাকে পাকিস্তানের পক্ষ নিতে হবে। বাস্তবতা হচ্ছে, জীবনে অনেক কিছু বদল করা যায়, প্রতিবেশী রাষ্ট্র বদল করা যায় না। এই বাস্তবতা মেনেই আমরা বৈরী সম্পর্ক রাখতে চাই না যা আমাদের অর্থনীতিতে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে।

শুধু তাই নয়, খালেদা জিয়া প্রকাশ্যে ১৯৭১ সালের হত্যাকারী, লুন্ঠনকারী, ধর্ষণকারীদের সমর্থন করেছেন। এটি সম্পূর্ণ দেশবিরোধী কাজ। অন্য দেশে হলে, তাঁকে রাজনীতি থেকে বিদায় নিতে হতো এই একটি উক্তির জন্য। কিন্তু, আমাদের দেশে একটি প্রবণতা আছে শক্তিশালীদের ছাড় দেয়া। কেননা তাদের অর্থের আর পেশি শক্তি আছে।

তা তারা ব্যবহার করে নিজ স্বার্থে। দিল্লীর সাউথ ব্লক মনে করছে, “বাংলাদেশের সামরিক অভ্যুত্থানের আশঙ্কা আগের তুলনায় কমে গেলেও এখনও সেই মৌলবাদী চেষ্টা অব্যাহত। ” তারা আরও মনে করে, শেখ হাসিনা বাংলাদেশে ধর্ম নিরপেক্ষতা ও গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে চান। ” সে দেশের সুপ্রীমকোর্টও ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসেবে গণতন্ত্রের উত্তরণের পথ পরিষ্কার করতে চায়। সেখানে সাম্প্রতিক অভ্যুত্থানের প্রচেষ্টার খবর সকলের কাছেই উদ্বেগজনক।

দিল্লীর কাছে আরও উদ্বেগের। এই প্রচেষ্টার পেছনে কাজ করছে বাংলাদেশী সেনাবাহিনীরই কট্টরপন্থী একটি অংশ। যে অংশটির ওপরে প্রভাব বিস্তার করে হাসিনাকে উৎখাতের চেষ্টা করছে পাকিস্তানী সেনা তথা আইএসআই। ” [ঐ, ২২.১.২০১২] খালেদা জিয়ার হয়ত ধারণা হয়েছে, পাকিস্তানী মনোভাবাপন্ন জামায়াতকে সমর্থন তাকে সৌদি আরব ও পাকিস্তানের কাছে আরও গ্রহণযোগ্য করে তুলবে। কিন্তু, বাস্তবতা হলো, পাকিস্তানে সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখল আমেরিকা সমর্থন করবে না বলে জানিয়েছে।

পাকিস্তানের সংসদ নির্বাচিত সরকারের পেছনে। সেনাবাহিনী তাই পিছু হটেছে। অর্থাৎ, পাকিস্তান ও বাংলাদেশে এই প্রবণতার স্বীকৃতি দেবে না আমেরিকা ও ভারত। উপমহাদেশে তাদের স্বার্থ অভিন্ন। সুতরাং, উভয় দেশের সেনাবাহিনীর দায়িত্ববানরা বুঝেছেন, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান মেনে নেয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।

আইএসআই পৃথিবীর একমাত্র আইনী সন্ত্রাসী সংগঠন। সুতরাং, একে সেনাবাহিনীর সঙ্গে একেবারে গুলিয়ে ফেলা ঠিক হবে না। বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর দায়িত্ববানরা আরও জানেন, সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করলে, জাতিসংঘে বাংলাদেশের সেনা সদস্যদের কোন স্থান থাকবে না। এটি সেনা ¯^ার্থবিরোধী। অর্থাৎ বিএনপি, জামায়াত, হিযবুত তাহ্রীর প্রভৃতি সেনা স্বার্থবিরোধী কাজ করছে।

খালেদা জিয়া ভায়োলেন্সের পক্ষে। তাঁর আমল এর প্রমাণ। যুদ্ধাপরাধীদের সমর্থন করা এর প্রমাণ। উস্কানিমূলক কথাবার্তা বলা সেই প্রবণতারই ধারাবাহিক প্রকাশ মাত্র। তিনি হয়ত ভাবছেন, ১৯৭৫ সালের আগস্টের মতো, তিনিও তার স্বামীর মতো কালো চশমা পরে সেনাবাহিনীর জীপে দাঁড়িয়ে হাত তুলে সিপাহীদের, কোন কোন ক্ষেত্রে বিএনপি-জামায়াত কর্মীদের অভিনন্দন জানিয়ে তেজগাঁওয়ের প্রধানমন্ত্রীর দফতরে প্রবেশ করবেন।

এই স্বপ্ন না দেখাই ভাল। লে. জেনারেল জিয়ার মতো তারপর ভায়োলেন্সের আশ্রয় নিয়ে সেনাবাহিনীর অনেক সদস্যকে খতম করবেন তাও সম্ভব নয়। সেসব দিন চলে গেছে। সাধারণ মানুষ এখন নির্বাচন ছাড়া ক্ষমতার হাতবদল দেখতে চায় না। সেনাবাহিনী ক্ষমতায় এসে কিছু ভায়োলেন্সের সৃষ্টি হয়ত করতে পারে কিন্তু সারাদেশের শাসনভার আর নিতে পারবে না।

১/১১ তার সবচেয়ে বড় উদাহরণ। যাদের মধ্যে এ ধারণা কাজ করছে তাদের আরও জানা দরকার, পৃথিবীর অনেক কিছু বদলে গেছে। কোন দেশই অভ্যুত্থানকারীদের আশ্রয় দেবে না। বাস্তব চিত্র আজ তাই। সেনাবাহিনী যে এই অভ্যুত্থান অঙ্কুরেই বিনষ্ট করেছে তাতে প্রমাণিত হয়েছে, বাস্তবতা মেনে তারা এখন গণতান্ত্রিক সরকারের অধীনে কাজ করতে প্রস্তুত।

কারণ তাতে তাদের লাভ বেশি। এই প্রবণতা অবশ্যই প্রশংসনীয় ও অভিনন্দনযোগ্য। বিএনপির মওদুদ আহমদ বলেছেন, বিএনপি অভ্যুত্থানের পক্ষে নয়। মওদুদ সবসময় অভ্যুত্থানের পক্ষে তা তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারই প্রমাণ করে। খালেদা জিয়া এই বিপজ্জনক পথ বোধ হয় বেছে নিতে চাইছেন একটি কারণে।

এই নির্বাচনে হারলে বিএনপির অস্তিত্ব বিপন্নের সম্মুখীন হবে। তিনি আর প্রধানমন্ত্রী হবেন না, তাঁর পুত্রদেরও দেশে ফিরিয়ে আনতে পারবেন না। জনসমর্থন তাঁর বাড়লেও [কিছু কিছু পত্রিকার মতে] তা শেখ হাসিনাকে অতিক্রম করেনি। সুতরাং ভায়োলেন্সই কাম্য। কিন্তু তিনি কি জানেন না, আগুন নিয়ে খেলতে গেলে আগুনে হাত পুড়তেও পারে।

এর আগে জেনারেল জিয়া যখন ক্ষমতা দখল করেন তখন বঙ্গবন্ধুর পরম সুহৃদ ইন্দিরা গান্ধী কোন বক্তব্য দেননি। জেনারেল এরশাদ যখন ক্ষমতা দখল করেন তখনও ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী কোন মন্তব্য করেননি। কিন্তু, এবার ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী প্রকাশ্যে সতর্কবাণী উচ্চারণ করেছেন। এই উচ্চারণ অবশ্যই খালেদা-মওদুদ-ফখরুল [বা গর্জন সিং] বা সেনাবাহিনীর যে কেউ উপেক্ষা করতে পারেন কিন্তু সেটা কতোটা বাস্তবসম্মত হবে সেটিও ভেবে দেখতে হবে। আরও উল্লেখ্য, অভ্যুত্থানের পর পাকিস্তানী রাষ্ট্রদূত প্রথম যে রাজনীতিবিদের সঙ্গে দেখা করতে গেছেন তিনি খালেদা জিয়া।

বিষয়টি উপেক্ষণীয় নয় বরং মানস ঘোষের বিশ্লেষণকে তা জোরালো করেছে। খালেদা জিয়ার স্বামী জিয়াউর রহমান কালো চশমা পরে উর্দু অ্যাকসেন্টের বা ইংরেজীতে বলেছিলেন, রাজনীতিবিদদের জন্য তিনি রাজনীতি ডিফিকাল্ট করে তুলবেন। এখন জনসাধারণই ঐ ধরনের রাজনীতি ডিফিকাল্ট করে তুলছে। রাজনীতিবিদরা যত তাড়াতাড়ি এটি বুঝতে পারবেন ততই মঙ্গল। তেজগাঁওয়ের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পৌঁছতে হলে সংক্ষিপ্ত পথে বা শর্টকাটে পৌঁছানোর বাসনা ত্যাগ করাই হবে বিধেয়।

তেজগাঁওয়ে যাওয়ার শর্টকাট রাস্তা এখন প্রায় লুপ্ত। Click This Link ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.