বাধা পেলেই সৃষ্টি হয় গণজোয়ার।
যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে সাক্ষী দানকারী বাসুদেব মিস্ত্রি মারা গেছেন। গত ৮ জানুয়ারি সাক্ষী দেয়ার ১৬ দিনের মাথায় মঙ্গলবার তিনি পিরোজপুর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। আদালতে সাক্ষ্য দেয়ার সময়ও তাকে কিছুটা অসুস্থ দেখা গেছে।
গত ৮ জানুয়ারি দশম সাক্ষী হিসেবে মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে জবানবন্দীতে এবং জেরায় বাসুদেব মিস্ত্রি জানিয়েছিলেন, বর্তমানে তার বয়স আনুমানিক ৫৩ অথবা ৫৪ বছর।
১৯৭১ সালে তার বয়স ছিল ১৩-১৪ বছর।
জবানবন্দিতে তিনি যা বলেছিলেন বাসুদেব :
১৯৭১ সালে বাবার সাথে মিস্ত্রি কাজে যোগালী দিতাম। বয়স আনুমানিক ১৩/১৪ বছর হবে। বাবা মানিক পসারীর বাড়িতে কাজ করতেন। আমিও তার সাথে কাজ করতাম।
পশ্চিমারা যুদ্ধ শুরুর পর ২/৩ মাস পর পারেরহাট স্কুলে ক্যাম্প করল আর্মি। শান্তি বাহিনীর লোকেরা রেজাকার বাহিনী গঠন করে। দেলু শিকদার, সেকেন্দার শিকদার, মোসলেম মাওলানা, হাকিম কারীম রুহুল আমিন, মন্নান আরো অনেকে মিলে রেজাকার বাহিনী গঠন করে।
মে মাসের ৮ তারিখে পাঞ্জাবী আর্মি, রাজাকার, শান্তি বাহিনীর লোকজন মানিক পসারীর বাড়িতে আসে। তাদের আসতে দেখে বাড়ির লোকজন পালিয়ে যায়।
তারা বাড়িতে ঢুকল। ইব্রাহীম কুট্টি ও মফিজ উদ্দিন মানিক পসারীর বাড়িতে কাজ করত। ওদের ধরে বেঁধে ফেলল। দিলু শিকদার, সেকেন্দার আলী শিকদার, মোসলেম মাওলানা, দানেশ আলী মোল্লা, রুহুল আমিন, হাকমি কারী মোমিন এদের দেখেছি তখন। এদের চিনি।
ওরা ধান চাউল সব লুটপাট করে নিয়ে গেল ভাগ করে। আর দামি মালামাল নিল দিলু শিকদার। এরপর দিলু আর অন্য রাজাকাররা মিলে ঘরে আগুন দিল। ইব্রাহীম আর মফিজকে নিয়ে রওয়ান দিল। বাজারের ব্রিজের ওপর উঠল।
তারপর দেলোয়ার সাঈদী হেগো লগে (পাক আর্মি) কি যেন বলল। আমরা আড়ালে বসে দেখছি। ইব্রাহীমকে বাঁধন খুলে ব্রিজ পার হয়ে ঘাটের দিকে নিয়ে গেল। মফিজকে নিয়ে গেল ক্যাম্পের দিকে। আর ইব্রাহীমকে গুলি দিয়ে ফেলে দেয়।
তারপর আমরা দৌড়ে বাড়ি যাই।
ক্যাম্পে নিয়ে মফিজকে খুব নির্যাতন করে। পরে মফিক পালিয়ে এসে একথা আমাদের বলেছে।
সাক্ষী পরে বলেন, আমাদেরসহ আরো অনেক হিন্দুদের বাড়িঘর দেলোয়ার হোসেন সাঈদী ও অন্যান্য রাজাকার পুড়িয়ে ফেলে।
আরো সাক্ষী অসুস্থ:
গত ১৭ জানুয়ারি দুপুর বারাটায় আব্দুল হালিম বাবুল নামে একজন সাক্ষীর জবানবন্দী এবং জেরা শেষে নতুন সাক্ষী হিসেবে আদালতে সাক্ষ্য দেয়ার কথা ছিল মধুসূদন ঘরামীর।
কিন্তু রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা জানান তিনি অসুস্থ। পরের দিন ১৮ জানুয়ারিও তাকে হাজির করা যায়নি অসুস্থতার কারণে। এরপর আদালত ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত মুলতবি করেন। কিন্তু ২৪ জানুয়ারিও মধুসূদন ঘরামীকে হাজির করতে পারেননি রাষ্ট্রপক্ষের কৌসুলিরা। ২৪ জানুয়ারি মঙ্গলবার সকালে চারজন সাক্ষীর নামের তালিকা দিয়ে রাষ্ট্রপক্ষের কৌসুলিরা আদালতকে জানান দুপুর দুইটায় তারা নতুন সাক্ষী হাজির করতে পারবেন।
আদালত বলেন চারজনের মধ্য থেকে প্রথম দুজনের যেকোনো একজনকে দুপুর দুইটায় হাজির করতে হবে। কিন্তু দুপুর দুইটায় তারা চারজনের তালিকা থেকে শেষের দুজনের একজনকে হাজির করেন। আদালত এর কারণ জানতে চাইলে প্রসিকিউটর সৈয়দ হায়দার আলী বলেন অন্যরা অসুস্থ। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।