প্রথমেই কেন ৭১ এর পর এ বিচার হল না তা তুলে ধরছি আওয়ামী শুভাকাঙ্খী ও সাবেক প্রধান উপদেষ্টা বিচারপতি হাবিবুর রহমানের একটি লেখা থেকে : ২২ডিসেম্বর মুজিবনগর মন্ত্রিসভার শীর্ষ সদস্যরা ঢাকায় ফিরে আসেন। অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেছেন তার দুই দিন আগে প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে দুটো বিষয়ে কথা হয়েছিলো। একটি ছিল বুদ্ধিজীবি হত্যার প্রসঙ্গ ধরে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর দোসরদের শাস্তি দেওয়ার বিষয়। তিনি বলেছিলন চেষ্টার ত্রুটি হবে না, তবে কাজটি সহজ হবে না। আমি জানতে চাই কেন?তিনি বলেন মার্কিনীদের চাপ আছে।
তারা পাকিস্তানকে চাপ দিচ্ছে বঙ্গবন্ধুকে ছেড়ে দিতে, ভারতকে চাপ দিচ্ছে যুদ্ধবন্দীদের ছেড়ে দিয়ে উপমহাদেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে। তিনি আরও বলেন যুদ্ধপরাধীদের বিচারে সোভিয়েত ইউনিয়ন ইচ্ছুক নন, ভারতও উৎসাহী নয়। এ অবস্থায় আপনি কার জোরে বিচার করবেন। আর মূল অপরাধদের বিচার করতে না পারলে তাদের সাঙ্গপাঙ্গদের বিচার প্রক্রিয়া দর্বল হতে বাধ্য। '
১৫ ডিসেম্বর ১৯৭৩ বিজয় দিবসের প্রাক্কালে বঙ্গবব্ধু বলেছিলেন, "আমরা প্রতিশোধ বা প্রতিহিংসার নীতিতে বি্শ্বাসী নই।
তাই মুক্তিযুদ্ধের শত্রুতা করে যারা দালাল আইনে অভিযুক্ত ও দন্ডিত হয়েছিলো তাদের সাধারন ক্ষমা প্রদর্শন করা হয়েছে। "
২৫ জানুয়ারি ১৯৭৫ সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনী পাস হওয়ার পর রাস্ট্রপতি শেখ মুজিব তাল বক্তব্যে বলেন, "কোন দেশের ইতিহাসে নেই বিপ্লবের পর ,বিপ্লবকে বাধা দিয়েছে যারা,শত্রুর সঙ্গে সহযোগিতা করেছে যারা,যারা এ দেশের মানুষকে হত্যা করেছে,কোন দেশ কোন যুগে তাদের ক্ষমা করে নাই। কিন্তু আমরা করেছিলাম .. সবাইকে ক্ষমা করেছিলাম। "
এ থেকে বোঝা যায় যখন বিচারের সেরা সময় ছিল তখন প্রবল জনমত থাকা সত্বেও জাতীয় ও আন্তর্জাতিক কারনে না হানাদার বাহিনী না তাদের দোসরদের বিচার হয়েছিল।
এরপর ৯৬ সালে আওয়ামীলীগ ওয়াদা করেও এ বিচার করেনি।
এইবার তারা ওয়াদা অনুযায়ি বিচার প্রক্রিয়া শুরু করেছে যার জন্য আমি তাদের সাধুবাদ জানাই।
তবে বিচার প্রক্রিয়া ও তার সচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা নিয়ে বড় প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। আন্তর্জাতিক মাবাধিকার ও বিচার বিষয়ক সংস্থা এই বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছে। এর পর এলো স্কাইপ কেলেংঙ্কারী যা বিচারের নিরপেক্ষতাকে অনেকটাই ভুলন্ঠিত করেছে। তবে জামতের ট্রাইবুনাল বাতিল ও নেতাদের মুক্তি দেবার দাবি অযৌক্তিক ও নিন্দনীয়।
তবে এ কথা নিঃসন্দেহে বলা যায় বিচার প্রক্রিয়ায় যে ত্রুটি রয়েছে তা সংশোধন না করলে আন্তর্জাতিকভাবে এ বিচার গ্রহনযগ্য হবে না আর দেশে গৃহযুদ্ধ শুরু হবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।