গল্প ভাগ্যের আশায় (প্রথম অংশ)]
রাতে এক মজুর রিক্সাওয়ালার ভাড়া বিশ টাকা দিতে চেয়ে পাঁচশত টাকাকে একশত টাকা মনে করে দিয়ে বলে দেখেন একশত টাকা কি না। রিক্সাওয়ালা হারিকেনের আলোতে দেখে হ্যা বলে আশি টাকা ফেরৎ দেয়। মজুর লোকটা দোকানদারের বাকি টাকা দেওয়ার জন্য পকেটে হাত দেয়। একশত টাকার নোট হাতে দেখে বুঝতে পারে নিশ্চয়ই রিক্সাওয়ালাকে পাঁচশত টাকার নোট দেওয়া হয়েছে। কামালকে সাথে নিয়ে মোটর সাইকেলে করে রিক্সাওয়ালার সামনে দাড়ায়।
রিক্সাওয়ালাকে বলে আপনাকে পাঁচশত টাকা দিয়েছি।
-না। আপনি একশত টাকাই দিয়েছেন।
মজুর লোকটা মুদি দোকানদারকে বলে মানুষ এত খারাপের খারাপ হইছে। আমি ভুল করে রিক্সাওয়ালার ভাড়া বিশ টাকা দিতে চেয়ে একশত টাকাকে পাঁচশত টাকা মনে করে দেই।
কিন্তু রিক্সাওয়ালা অস্বীকার করে। মজুর বলে সে আমাকে ঠকাইছে না। সে নিজেই ঠকছে। পরকালে আমার পিছনে সে দৌড়াবে মাফ চাওয়ার জন্য।
সে শুনেছিল- যারা ঠকায় বা যার কারনে কোন ব্যক্তি ইবাদত কিংবা ভাল কাজ করতে না পারে পরকালে তার কাছ থেকে ছওয়াব কেড়ে নেওয়া হবে।
আর যদি তার ছওয়াব না থাকে বা ছওয়াব শেষ হয়ে যায়। তবে যাকে ঠকাইছে তার পাপ ঐ ব্যক্তির পাপের সাথে যোগ করা হবে।
আকরামের সম্মান শ্রেণীতে দুই বছর শেষ। তিন বছর চলছে। দুই বছর ভাল নম্বর পাওয়ার কারনে সহপাঠিরা তাকে বলে আর কত।
এবার ভাল করে পড়। যদি শিক হও। তোমার অনেক দুর্বলতা থাকবে। আমাদের বি.সি.এস. করা শিক যা পড়াইছে তা কি ভাবে শিখবা? কে তোমাকে পড়াবে? বোঝার দুই বছর শেষ করেছ। আর দুই বছর সময় আছে।
এই দুই বছর কাস না করলে সব শেষ হয়ে যাবে। তখন তুমি পড়বা, না পড়াইবা। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে তোমাকে সম্মান শ্রেণীতে কে পড়াবে? এমন সহপাঠি বা অধ্যাপক তুমি পাইবা না।
সে ভাবে, যে যা ই বলুক এমন করেই আমাকে লেখাপড়া চালিয়ে যেতে হবে। যে করেই হোক আমাকে অনার্স ও মাস্টার্স শ্রেণী পাশ করতেই হবে।
তাই সে নিজের পরিবার দেখা শুনার পাশাপাশি লেখাপড়াও চালিয়ে যাচ্ছে। আকরাম এর ভরসা ছোট থাকতে লেখাপড়ায় ফাকি দেয়নি। তার ভিত্তিটা মজবুদ। যে কারনে আজও লেখাপড়ায় টিকে আছে। যদিও লেখাপড়ায় এভাবে টিকে থাকাটা তার কাছে অস্বাভাবিক মনে হচ্ছে।
তবুও সে স্বপ্ন দেখে অনেক সুমান অর্জন করবে। প্রাতিষ্ঠানিক শিা ছাড়াও কিছু ব্যক্তি আছে যারা সুনাম অর্জন করেছে। প্রাতিষ্ঠানিক শিা না থাকায় তাদের সমস্যা হয়নি। তারও কোন সমস্যা হবে না। তার ধারনা সৃষ্টিকর্তার প্রতি বিশ্বাস, সততা, নিষ্ঠা, আন্তরিকতা ও অধ্যবসায় মানুষকে মহান করে তুলে।
তার পেশা কি হবে সে সম্পর্কে কিছুই জানে না। সে এখন ভাগ্যের আশায় আছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।