আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভাগ্যের দিকেই তাকিয়ে বাংলাদেশ

শেন জার্গেনসেন যাচ্ছেন গণকের কাছে। দেখাই যাক টিয়াপাখির ঠোঁটে ওঠা চিরকুট কী বলে! সকালে জানালার কার্নিশে একটা কাক বসে ছিল। নিশ্ছিদ্র কাচ ভেদ করেও ‘কা...কা’ চিৎকারটা কানে লাগছিল বাংলাদেশের অস্ট্রেলিয়ান কোচের। তখন থেকেই মনে অমঙ্গল চিন্তা আইঢাই করছে। আবার না জানি কী হয়!
টিয়াপাখির তোলা চিরকুটে আজকের বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচের কী ভাগ্য লেখা ছিল তা জানা যায়নি।

কারণ, ওপরের ঘটনার পুরোটাই কল্পনা। কল্পনা, তবে বাস্তবনির্ভর। মাথার ঘাম পায়ে ফেলা অনুশীলনে কাজ হচ্ছে না। চার-পাঁচজন খেলোয়াড় বদলেও কাজ হচ্ছে না। প্রতি ম্যাচে নতুন নতুন ছক কষেও কাজ হচ্ছে না।

এখন ভাগ্যের ওপর নির্ভর করা ছাড়া আর কীই-বা করার আছে বাংলাদেশ দলের!
হ্যাঁ, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ভাগ্য বিরাট এক ব্যাপার। যেদিন যার দিকে তাকিয়ে ভাগ্যদেবী হাসবেন, সেদিন সেই জিতবে। এ জন্য এই সংস্করণের ক্রিকেটকে বলা হয় ‘ধনী-দরিদ্রের’ ব্যবধান ঘোচানো ক্রিকেট। এখানে ছোট দল, বড় দল বলে কিছু নেই। কাল সংবাদ সম্মেলনে এসে এ কথা বলে গেছেন পাকিস্তানের অধিনায়ক মোহাম্মদ হাফিজও, ‘টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে কোনো দলকেই হারানো সহজ নয়।

মৌলিক কাজগুলো সব সময়ই ঠিকঠাক করতে হবে। বাংলাদেশকে তাই আমরা সমীহ করছি এবং জেতার জন্য সেরা খেলাটাই খেলব। ’
হাফিজ যখন সংবাদ সম্মেলনে কথাগুলো বলছিলেন, সাকিব আল হাসান তখনো অনুশীলনে। একটু পর তিনিও সংবাদ সম্মেলনে এলেন এবং বলে গেলেন প্রায় একই কথা, ‘যেকোনো সময় যে কেউ ঘুরে দাঁড়াতে পারে—টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের সৌন্দর্যই এটা। আমার মনে হয় না এখানে কোনো দল আগে থেকে বলতে পারে তারা জিতবে।

’ আর কিছু না হোক, ২০ ওভারের ক্রিকেটের এই রসায়ন বিপর্যস্ত বাংলাদেশকে অন্তত হারার আগে হারতে দিচ্ছে না।
আর ভাগ্যের ব্যাপারটা তো থাকছেই। শিশির প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে সাকিবও টেনে আনলেন ভাগ্যকে, ‘চট্টগ্রামে শিশিরের কারণে অনেক সমস্যা হয়েছিল। এখানে (ঢাকায়) যে দুটি ম্যাচ আমরা খেললাম, মনে হয় না শিশির খুব একটা সমস্যা করেছে। তবে এবারের ম্যাচটা দিনে...দিনের খেলা আমাদের ভাগ্য বদলে সহায়ক হতেও পারে (হাসি)।

’ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ সব ম্যাচই খেলেছে ফ্লাডলাইটের কৃত্রিম আলোয়। আজই প্রথম বেলা সাড়ে তিনটায় বাংলাদেশের ম্যাচ।
কৃত্রিম আলো থেকে সূর্যালোকে এসে বাংলাদেশ নিজেদের খুঁজে পাবে কি না, সেটা সময়ই বলবে। তবে এখন পর্যন্ত এই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সাকিবের কথাই ঠিক। বিশ্বকাপ শুরুর আগে দর্শক-সমর্থকদের কাছে তাঁর অনুরোধ ছিল, দলের কাছে বেশি বেশি প্রত্যাশা না করে বরং সবাই যেন দলকে বেশি বেশি সমর্থন করেন।

এখন বোঝা যাচ্ছে প্রত্যাশার চাপটা কেন সরিয়ে রাখতে চেয়েছিলেন সাকিব। এক হংকংয়ের কাছে হার ছাড়া এখন পর্যন্ত করা বাংলাদেশ দলের কোন ফলটাকে অপ্রত্যাশিত বলবেন? ভারতের বিপক্ষে কি জেতার কথা ছিল বাংলাদেশের? নাকি ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে!
তবে সাকিব মানছেন, পারফরম্যান্সের দিক দিয়ে আরেকটু ভালো কিছু দেখাতে পারতেন তাঁরা, ‘খুব একটা যে খারাপ করেছি, তা বলব না। তবে আরেকটু হয়তো ভালো করা উচিত ছিল আমাদের, ধারাবাহিক থাকা উচিত ছিল। আমরা বিশ্বসেরা দলগুলোর বিপক্ষে খেলছি। ওরাও জিততে চাইবে আমরা জিততে চাইব, এটাই স্বাভাবিক।

’ মিরপুরে আজ সাবেক চ্যাম্পিয়ন পাকিস্তানের বিপক্ষে জয়টাও সহজ হবে না বলে মনে হচ্ছে তাঁর কাছে, ‘ওদের বোলিং যদি বিশ্বসেরা না-ও হয়, দুইয়ের মধ্যে থাকবে। পাকিস্তানের স্পিন আক্রমণও খুবই ভালো। ’
শেন জার্গেনসেন শেষ পর্যন্ত গণকের কাছে যাননি। কাল টিম মিটিংয়ে নিজেই ঠিক করে দিয়েছেন পরের দুই ম্যাচের করণীয়। গত কয়েক দিনের দুঃস্বপ্ন ভোলার পরামর্শ দিয়ে ছাত্রদের বলেছেন, যা হওয়ার হয়ে গেছে।

সেসব তো আর ফেরত পাওয়া যাবে না। বাকি দুই ম্যাচের অন্তত একটাতে জিততেই হবে।
সেই জয়টা এসে যেতে পারে আজকেও, যদি ভাগ্যে থাকে।

সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.