ভয় কি মরণে রাখিতে সন্তানে মাতঙ্গী মেতেছে আজ সমর রঙ্গে তা থৈ তা থৈ থৈ দিমি দিমি দ্রম দ্রম । । ভূত পিশাচ নাচে যোগিনী সঙ্গে । । ভয় কি মরণে রাখিতে সন্তানে মাতঙ্গী মেতেছে আজ সমর রঙ্গে।
। দানব দলনী হয়ে উন্মাদিনী আর কি দানব থাকিবে বঙ্গে । ।
'৯৬ কি '৯৭, সালটা ঠিক মনে নেই, ছবির শান্ত চেহারার এই তরুণ আমাদের (আমার ও বড় বোনের) গৃহশিক্ষক ছিলেন। মাথার খানিকটা লম্বা এলোমেলো চুল, মুখে কয়েকদিনে না কামানো দাড়ি, হাতা গোটানো শার্ট আর ভাবালু চোখের এক উদাস মূর্তি।
খুব ধীরস্বরে কথা বলতেন। পড়া বুঝিয়ে দিয়ে আমাদের পড়তে বলে একটা খাতা টেনে নিয়ে নিজের মনে ছবি আঁকতেন।
পড়া দিতে না পারা ছিলো আমার রোজকার কাজ। কিন্তু তার জন্য মার তো দূরের কথা, কখনো বকুনিও শুনতে হয়নি। খুব একটা কথাও বলতেননা।
আব্বা আমাদের পড়াশোনার খবর জানতে চাইলে বা আম্মা আমাদের কড়া শাসন করতে বললে মাটির দিকে তাকিয়ে হাল্কা মাথা নাড়তেন। সঞ্জয় স্যার, আমার অসম্ভব প্রিয় একজন স্যার।
'৯৮ এ আমি চলে গেলাম ক্যাডেট কলেজ। স্যার আগেই চলে গিয়েছিলেন। ছুটিতে বাড়ি ফিরে শুনলাম স্যার এক্সিডেন্টে মারা গিয়েছেন।
আঘাত পেয়েছিলাম, সময়ের সাথে ভুলেও গিয়েছিলাম। সাম্প্রতিক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবিরের তাণ্ডব বর্ণিত কয়েকটি ব্লগ আর্টিকেলে একটা নাম দৃষ্টি আকর্ষণ করলো, 'সঞ্জয় তলাপাত্র'।
অনেকবার মনের কোণে সন্দেহটা উঁকি দিয়ে গেলেও পাত্তা দেইনি, আর খোঁজখবরও করিনি। আজ কি মনে করে অল্প একটু খুঁজতেই তাঁর ছবিটা পেয়ে গেলাম। আমার সন্দেহটা সত্যি নাহলেই আমি খুশি হতাম।
সঞ্জয় তলাপাত্র চবি’র চারুকলা বিভাগের ছাত্র এবং বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতা ছিলেন। ১৯৯৮ সালের ২০ আগস্ট শিবির ক্যাডাররা তাঁকে হকিষ্টিক, লোহার রড ও রিক্সার চেন দিয়ে পিটিয়ে বটতলী রেলস্টেশনে ফেলে দিয়ে যায়। দু’দিন পরে ২২ আগস্ট তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। সেদিন ছিলো তাঁর জন্মদিন।
পনেরটা বছর কেটে গেলো তাঁর খুনীদের বিচার হয়নি।
স্যার, পরম করুণাময়ের কাছে আপনার নাযাতের প্রার্থনা করা ছাড়া আমার আর কিছু করার নেই। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।